আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
355 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (29 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম,

প্রথমেই মাফ চেয়ে নিচ্ছি একইমাসে অন্য আকাউন্ট খুলে ৫নং ফাতওয়া নেয়ার কারনে।কিন্তু বিষয়গুলো জানা অত্যন্ত জরুরি।

খেলা বিষয়ক:

আমাদের কলেজে খেলার জন্য নাম চাওয়া হয়েছে ।আর আমি যেহেতু কিছু খেলা পারি তাই নাম দিতে ইচ্ছুক কিন্তু এক্ষেত্রে আমার কিছু প্রশ্ন আছে-

১)কলেজের খেলার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন কি জায়েজ হবে?

২)কলেজের প্রতিযোগিতায় তো সাধারণত জুয়া বা এ ধরনের কোনো হারাম বিষয় থাকার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম কিন্তু কলেজের ছেলেরা এমনকি আমি যেই টিমে ফুটবল খেলতে চাই তাদের তো এমন শর্টস পড়ে আসার সম্ভাবনা বেশি যা হাঁটুর সামান্য উপরে থাকে।যদিও আমি এমন শর্টস পড়ব ইনশাআল্লাহ যা হাঁটুর নিচে থাকবে কিন্তু তাদের পাপের কারনে কি আমার খেলায় অংশগ্রহন নাজায়েজ হবে? আর খেলার মাঝে তাদের আওরাহ এর অনাবৃত অংশ চোখে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা আছে কিন্তু এ কারনে কি আমার খেলায় অংশগ্রহন নাজায়েজ হবে? বা পাপে সমর্থন করা হবে?

৩) আর কলেজে তো মেয়েরা পড়ে কিন্তু তারা অন্য শিফটে পড়ে  তাই তাদের খেলা অন্য শিফটে হওয়ার সম্ভাবনা ই প্রবল কিন্তু এই খেলায় তো মেয়েরা পরিপূর্ণ পর্দা করবে না তাই এই খেলার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন কি জায়েজ হবে? যদিও তারা আমার চোখের সামনে আসবে না কারন তাদের প্রতিযোগিতা অন্য শিফটে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

৪)ক্রিকেট,ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলা জায়েজ কি? এটাকে আমি পেশা হিসেবে গ্রহণ করছি না ,কেবল আন্ত:স্কুল টুর্নামেন্ট জাতীয় হবে একদিনের জন্য বা একাধিক দিনের জন্য।আর টুর্নামেন্ট থেকে পুরষ্কার নেয়া জায়েজ হবে কি? আর টুর্নামেন্টে কোনো গায়রে মাহরাম নারী দেখতে আসলে খেলা ছেড়ে চলে যেতে হবে কি? আর দর্শকদের মধ্যে গায়রে মাহরাম নারী থাকলেও আমি তাদের কোনো পাত্তা দিলাম না,এমনকি দেখলাম ও না তাহলে খেলা জায়েজ হবে কি?

জাযাকাল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)


ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/673 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
ইসলাম এ বিষয়ে জোর দেয় যে,মানুষ তার জীবনের প্রতিটি মূহূর্ত এমন কাজে ব্যয় করবে যাতে দুনিয়া ও আখেরাতের নিশ্চিত কল্যাণ রয়েছে।কমপক্ষে যেন দুনিয়া ও আখেরাতের কোনো ক্ষতি না হয়।এ জন্যই কোরআনে কারীমে মু'মিনদের উত্তম ও প্রশংসনীয় গুনাবলীর আলোচনা করতে যেয়ে বলা হয়,
ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫُﻢْ ﻋَﻦِ ﺍﻟﻠَّﻐْﻮِ ﻣُﻌْﺮِﺿُﻮﻥَ
যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত,(মু'মিনুন-৩)
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻣَﺮُّﻭﺍ ﺑِﺎﻟﻠَّﻐْﻮِ ﻣَﺮُّﻭﺍ ﻛِﺮَﺍﻣًﺎ
এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয়, তখন মান রক্ষার্থে ভদ্রভাবে চলে যায়।(ফুরকান-৭৩)

লাহব কাকে বলে?
اللهو: ما يشغل الإنسان عما يعنيه و يهمه (مفردات القرآن للإمام الراغب)
অর্থাৎ-যে সকল বস্তু মানুষকে লক্ষণীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী থেকে অমনোযোগী করে দেয় তা হলো "লাহব"।
اللعب :لعب فلان اذا كان فعله غير قاصد به مقصدا صحيحا
অর্থাৎ- খেলাধুলা ঐ সকল কাজ যাতে সঠিক কোন উদ্দেশ্য থাকে না।
اللغو: وهو كل سقط من قول او فعل فيدخل فيه الغناء واللهو و غير ذلك مما قاربه
অর্থাৎ- লাগু ঐ সকল অনর্থক কথাবার্তা ও কাজ-কর্ম যাতে গান-বাদ্য রং তামাশা ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।(কুরতুবি:১৩/৮০)

উল্লেখিত আয়াত ও হাদীস সমূহ থেকে বুঝা গেল যে, ইসলামী শরীয়তে সময়ের প্রতি যত্নশীল হওয়া ও লক্ষস্থির জীবন গঠনের নির্দেশ হয়েছে।
খেলাধুলা ও রং তামাশা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।কিন্তু বিনোদন নয়;বরং বললে ভুল হবে না যে,যেই বিনোদনের অর্থ হলো আনন্দ ও খুশি লাভ করা। শরয়ী আনন্দ সম্ভলিত সেই বিনোদন ইসলামে কেবল অনুমোদিতই নয়;বরং এক পর্যায়ে প্রশংসনীয় ও বটে।যাতে করে শারিরিক অলসতা ও অবসাদ কেটে যায় এবং মনোবল ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয় আর মানুষ প্রফুল্লতার সাথে জীবনের শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য অর্জনে মনোযোগী হতে পারে।.........বিস্তারিত জানুন-
https://www.ifatwa.info/673

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
ধেলাধুলা বা আনন্দ উদযাপনে শরীয়তের কোনো বাধা বিপত্তি নেই।তবে হারাম জিনিষ থেকে বেঁচে থাকতে হবে।এবং ইবাদত বা লেখাপড়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটতে পারবে না।যেহেতু বর্তমান সময়ের খেলাধুলা ও টুর্নামেন্টে হারাম জিনিষের ব্যাপকতর সয়লাভ রয়েছে,তাই এমন খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করার কোনো অবকাশ শরীয়তে নাই।কেননা নামাযের প্রতি উদাসিনতা,হাটুর উপর কাপড় তুলা সহ অনেক হারাম জিনিষ তাতে রয়েছে।(শেষ)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনি অনেকগুলি শাখাপ্রশাখাগত প্রশ্ন করেছেন, যেহেতু প্রচলিত টুনামেন্টই জায়েয নয়, সেখানে এই শাখাপ্রশাখাগত প্রশ্নের কোনো সুযোগ নাই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...