আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
147 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১. পাসপোর্ট বা বিভিন্ন ক্ষেত্রের জন্য তোলা ছবিতে ফটোশপ করে মুখ ফর্সা এবং পরিষ্কার করা হয়ে থাকে। এই ছবি আমার বিভিন্ন পরিচয়পত্রে রয়েছে, আমার কি করণীয়?

২. আমি নিজেই নিজের ছবি এডিট করে নিজের মধ্যে পরিবর্তন এনে ফেসবুকে ছবি দিয়েছি। সেগুলো কি সব ডিলিট করতে হবে?

৩. কিছু ছবি রয়েছে যেগুলো আমি ইডিট করেছি কিনা নিশ্চিত নয়। সেগুলো কি রাখা যাবে? নাকি সেগুলোও ডিলিট করতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

 

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত

ﺃﺧﺮﺝ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﺑﺴﻨﺪ ﺍﻟﻤﺘﺼﻞ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﻗﺎﻝ : ﺳﻤﻌﺖ ﻣﺤﻤﺪﺍ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ : « ﻣﻦ ﺻﻮﺭ ﺻﻮﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻛﻠﻒ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﺃﻥ ﻳﻨﻔﺦ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﺮﻭﺡ، ﻭﻟﻴﺲ ﺑﻨﺎﻓﺦ »

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোনো ফটো অঙ্কন করবে,কিয়ামতের দিন তাকে ঐ ফটোতে রূহ ফুকে দিয়ে জীবিত করার দায়িত্ব দেয়া হবে।অথচ সে ঐ ফটোকে জীবিত করতে পারবে না।(সহীহ বোখারী-৫৯৬৩)

শরীয়তে তাসবীর হারাম।কুরআন হাদীসে তাসবীর শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে।তাসবীর যে হারাম,এতে কারো দ্বিমত নাই।আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন:-https://www.ifatwa.info/2253

এখন প্রশ্ন জাগতে পারে,তাহলে তাসবীর কি? কোন কোন জিনিষ তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত?ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে তুলা ফটো কি তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত?

এই প্রশ্নের জবাবে বলা যায় যে,সরাসরি বাস্তবে নির্মিত মুর্তি,এবং হাত দ্বারা অঙ্কিত  মুর্তির ফটো,এগুলো তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত। এতে কারো দ্বিমত নাই।

ডিজিটাল ফটো কি তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত?

এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ রয়েছে।আপনি যে বিষয় উল্লেখ করেছেন,সেই বিষয় উল্লেখ করে কেউ কেউ ডিজিটাল ফটোকে নাজায়েযের হুকুম থেকে বের করে বৈধতার ফাতাওয়া দিয়েছেন।অন্যদিকে অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম হাতে অঙ্কিত ফটো এবং ডিজিটাল ফটো, সকল প্রকার ফটোকেই নাজায়েয ও হারাম ঘোষনা দিয়েছেন।

জাস্টিস আল্লামা তাকী উসমানী (দাঃবাঃ)লিখেন,

ﻛﺜﻴﺮ ﻣﻦ ﻋﻠﻤﺎﺀ ﺍﻟﺒﻼﺩ ﺍﻟﻌﺮﺑﻴﺔ، ﻭ ﺟﻠﻬﻢ ﺃﻭﻛﻠﻬﻢ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﻼﺩ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ، ﻗﺪ ﺃﻓﺘﻮﺍ ﺑﺄﻧﻪ ﻻﻓﺮﻕ ﺑﻴﻦ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﻤﺮﺳﻮﻣﺔ ﻭ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺸﻤﺴﻴﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻜﻢ ..… ﻭﺍﻟﻮﺍﻗﻊ ﺃﻥ التفريق ﺑﻴﻦ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺸﻤﺴﻴﺔ ﻻ ﻳﻨﺒﻐﻲ ﻋﻠﻰ ﺃﺻﻞ ﻗﻮﻯ، ﻭﻣﻦ ﺍﻟﻤﻘﺮﺭ ﺷﺮﻋﺎ ﺃﻥ ﻣﺎﻛﺎﻥ ﺣﺮﺍﻣﺎ ﺃﻭ ﻏﻴﺮﻣﺸﺮﻭﻉ ﻓﻲ ﺃﺻﻠﻪ ﻻﻳﺘﻐﻴﺮ ﺣﻜﻤﻪ ﺑﺘﻐﻴﺮ ﺍﻵﻟﺔ

আরব দেশের অনেক উলামায়ে কেরাম,এবং হিন্দুস্তানের অধিকাংশ বা সকল উলামায়ে কেরাম সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন যে,হাতে অঙ্কিত ছবি এবং ডিজিটাল ছবির মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই। বাস্তবতা হচ্ছে, হাতে অঙ্কিত ছবি এবং ডিজিটাল ছবির মধ্যে পার্থক্য করার ভিত্তি মজবুত নয়।শরয়ী সিদ্ধান্তকৃত মাস'আলা হল,যে জিনিষের মূল হারাম,সেই জিনিষের হুকুমে মাধ্যম বা উসিলা পরিবর্তনের কারণে কোনো প্রকার পরিবর্তন আসবে না।(তাকমিলাতু ফাতাহিল মুলহিম-৪/৯৭)

প্রামাণ্য গ্রন্থাবলীঃ

(১)বুখারী শরীফ : ২/৮৮০; হাঃ ৫৭২৯(২)মুসলিম শরীফ- ২/২০০, হাঃ ৫৪৭১(৩)ফাতাওয়ায়ে শামী- ২/৪১৬-১৭(৪)তাকমিলায়ে ফাতহুল মুলহিম- ৪৯৭,৯৮(৫)শরহে নববী আলা সহীহ মুসলিম : (২)১৯৯; (৬)কিফায়াতুল মুফতী : ৯/২৪৩

 'ফেকহুস সীরাত 'গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন :

« والحق انه لا ينبغي تكلف اي فرق بين انواع التصوير المختلفة حيطة في الامر ، ونظرا ل اطلاق لفظ الحديث . هذا يتعلق بالتصوير . اما الاتخاذ ، فلا فرق بين الفوتوغرافي وغيره».

সঠিক কথা হল যে, হাদীসের সাধারণ ভাষ্যের প্রতি দৃষ্টিপাত করে এবং হুকুমকে ব্যাপকতর করার লক্ষ্যে ছবির বিভিন্ন প্রকারে পার্থক্য নির্ণয়ের অপচেষ্টা করা অনুচিত। শরীয়তের এই হুকুম তো সব ছবির ক্ষেএেই । আর ছবি চিএণের বিষয়টি হতে পারে সেটি ক্যামেরাবন্দী ছবি আবার হতে পারে সেটি হাতে অংকিত ছবি। এতে পার্থক্য সৃষ্টির কার কোনো হেতু নেই। '[ ফিকহুস সীরাত : পৃষ্ঠায়-৩৮০]

 

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

শরীয়তের একটি সর্বজন স্বীকৃত মাস'আলা বা সিদ্ধান্ত হল,কোনো জিনিষের মূল হুকুম হারাম থাকলে,সেই জিনিষ সর্বদাই হারাম হবে।চায় সেই জিনিষের মাধ্যম পরিবর্তন হোক বা না হোক।যেমন ফটো তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত হয়ে হারাম।প্রথমে হাতে অঙ্কিত হত,তখনও হারাম ছিলো।এখন ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় ছবিকে তুলা হচ্ছে,এখনও হারাম হবে।সুতরাং আপনি বিশেষ প্রয়োজনে ছবি তুলতে পারবেন ও রাখতেও পারবেন কিন্তু কোন প্রয়োজন ছাড়া অহেতুক ছবি তোলা ও সেগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। যা থেকে দূরে থাকা আমাদের প্রত্যেকের জন্যই আবশ্যক। যদি অপ্রয়োজনে কোন পিকচার সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলড করে থাকেন ,তাহলে তা ডিলেট করে দেওয়াই শ্রেয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...