বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
ইসলামী শরীয়তে
শিশুকে চান্দ্রমাসের হিসাবে সর্বোচ্চ দুই বছর (২৪ মাস) পর্যন্ত দুধ পান করানো
যাবে। দুই বছরের অধিক দুধ পান করানো যাবে না।
■ আল্লাহ তাআলা
বলেন,
وَ الْوَالِدٰتُ یُرْضِعْنَ اَوْلَادَهُنَّ
حَوْلَیْنِ كَامِلَیْنِ لِمَنْ اَرَادَ اَنْ یُّتِمَّ الرَّضَاعَةَ
মায়েরা তাদের
সন্তানদের পূর্ণ দু বছর দুধ পান করাবে। এ সময়কাল তাদের জন্য, যারা দুধ পান করানোর মেয়াদ পূর্ণ করতে চায়।
(সূরা বাকারা ২৩৩)
উক্ত নির্ধারিত
সময় পার হবার পরেও কেউ যদি নিজ সন্তানকে দুধ খাওয়ায় তাহলে তা জায়েয হবে না এবং
সন্তানের জন্য উপকারী হবে না। কেননা যেটা সন্তানের জন্য উপযোগী সেটাই আল্লাহু
তাআলা বিধান দিয়েছেন।
বিশুদ্ধ মত
অনুযায়ী সন্তানকে দুধ পান করানোর মেয়াদ চান্দ্র বছর হিসেবে দুই বছর।
কারন কুরআন মজীদে
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) আর মায়েরা
তাদের সন্তানদের পূর্ণ দুই বছর দুধ পান করাবে। (এ বিধান) তার জন্য যে দুধ পানের
(মেয়াদ) পূর্ণ করতে চায়। -সূরা বাকারা : ২৩৩
আরেক আয়াতে ইরশাদ
হয়েছে, আর তার (সন্তান) দুধ
ছাড়ানো হয় দু বছরে। -সূরা লুকমান : ১৪
সুতরাং দুই বছর পূর্ণ
হওয়ার পর সন্তানকে আর দুধ পান করানো যাবে না। তাই আড়াই বছর পর্যন্ত পান করানো
যাবে- বলে অনেকে যাবে বলে এ কথা ঠিক নয়।
-সূরা বাকারা : ২৩৩; তাফসীরে তবারী ৪৯৬২; মুখতাসারুত তহাবী ২২০; ফাতহুল কাদীর ৩/৩০৯; গুনইয়াতু যাবীল আহকাম শুরুম্বুলালীয়া ১/৩৫৫, ৩৫৬; আলবাহরুর রায়েক
৩/২২৩
■ আলাউদ্দিন
হাসক্বাফী রাহ লিখেন,
هُوَ (حَوْلَانِ وَنِصْفٌ عِنْدَهُ
وَحَوْلَانِ) فَقَطْ (عِنْدَهُمَا وَهُوَ الْأَصَحُّ) فَتْحٌ وَبِهِ يُفْتَى كَمَا
فِي تَصْحِيحِ الْقُدُورِيِّ عَنْ الْعَوْنِ
শিশুর জন্য মায়ের
দুধ পানের সর্বোচ্ছ সময়সীমা-ইমাম আবু-হানিফা রাহ এর মতে আড়াই বৎসর।আর সাহেবাইনের
মাযহাব মতে দুই বৎসর।এই দ্বিতীয় মতটাই বিশুদ্ধতম মত।এবং এর উপরই ফাতাওয়া।
আরো বর্ণিত
রয়েছে-আহসানুল ফাতাওয়া-৫/১২৮
এ সময়সীমা
ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই শুরু হবে।
বাচ্ছা দুধ ছাড়তে
না চাইলেও তাকে দুধ খাওয়ানো যাবে না।বরং বাচ্ছাকে দুধের প্রতি অনাগ্রহ সৃষ্টি করে
খাদ্যর প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে।
আরো বিস্তারিত
জানুন- https://ifatwa.info/6845/
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ছেলে বাচ্চা এবং
মেয়ে বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়
সীমা একই রকম অর্থাৎ চন্দ্রমাস হিসেবে সর্বোচ্চ দুই বছর। সুতরাং আপনি যেই কথাটি
শুনে ছিলেন অর্থাৎ ‘ছেলে বাচ্চাদের
ক্ষেত্রে দুবছর আর মেয়ে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে আড়াই বছর’ তা সঠিক নয়।
তবে যেহেতু আড়াই বছরেরও একটি মত আছে (ছেলে বাচ্চা ও মেয়ে
বাচ্চ উভয়ের জন্য)। তাই যদি কঠিন প্রয়োজনে দুই বছর পর দুধ পান করায়,তাহলে আড়াই
বছরে আগ পর্যন্ত গুনাহ হবেনা।
উল্লেখিত মাসয়ালায়
মতবিরোধ এর কারনে হুকুমের ক্ষেত্রে কিছুটা সহজ এসে যাবে ঠিকই।
তবে কোনো ভাবেই আড়াই বছরের পর দুধ পান করানো যাবেনা। এটি
হারাম। এতে মায়ের গুনাহ হবে।
তাই সর্বোচ্চ সতর্কতা হলো দুই বছর (২৪ মাস) পর দুধ পান না
করানো।