আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
282 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (10 points)
ইসলামের দৃষ্টিতে ট্যাক্স । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,


“

لا يدخُل الجنةَ صاحبُ مَكْسٍ”. رواه أبو داود (2937) وابن خزيمة (2333) وابن الجارود (339) في صحيحيهما، الطحاوي (3062) وقال العلامة العيني في “نخب الأفكار” (8/112) : “إسناد صحيح

“


“ট্যাক্স ‍গ্রহণকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” -সুনানে আবু দাউদ, ২৯৩৭; সহিহ ইবনে খুযাইমা, ২৩৩৩; আল্লামা আইনী রহ হাদিসটির সনদকে সহিহ বলেছেন। -নুখাবুল আফকার, ৮/১১২


হাদীসের ব্যাখ্যায় আল্লামা আইনী রহ বলেন,


المكس في هذا الزمان: ما يأخذه الظلمة والأعوان من التجار الواردين في البلاد ومن الباعة والشراة في الأسواق بأشياء مقررة عليهم على طريق الظلم والعدوان، وكان هذا قبل الإِسلام في الجاهلية، ثم لما جاء الشرع أبطل هذا وأمرهم أن يؤدوا الزكوات والعشور والخراج على الأوضاع الشرعية، ثم لما استولت الظلمة من الملوك والخونة من الحكام أعادوا هذا الظلم، ثم لم يزل الوزراء الظلمة الفسقة يحددون ذلك ويزيدون عليه ويفرعون تفريعات حتى وضعوه في كل شيء جليل وحقير، ودخلوا تحت قوله – عليه السلام -: “من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فليس منا”. نخب الأفكار 8/ 113


“বর্তমান যমানায় ট্যাক্স হল, জালেমরা যা নগর-বন্দরে আগমনকারী ব্যবসায়ী এবং বাজারে ক্রয়-বিক্রয়কারীদের থেকে উত্তোলন করে। ইসলামপূর্ব সময়ে এই ট্যাক্সের প্রচলন ছিল। ইসলাম তা বাতিল করে দেয় এবং শরয়ী বিধান অনুযায়ী যাকাত, উশর ও খারাজ আদায়ের নির্দেশ দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে যখন জালেম শাসকরা ক্ষমতা দখল করে, তারা পুনরায় এ জুলুম শুরু করে। তারপর থেকেই জালেম ও ফাসেক মন্ত্রীরা এ ট্যাক্সের পরিমাণ নির্ধারণ করতে থাকে, তা বাড়াতে থাকে এবং তার অনেক শাখা প্রশাখা বের করতে থাকে। এমনকি পরিশেষে তারা ছোট-বড় সব কিছুতেই ট্যাক্স আরোপ করে। আর এর মাধ্যমে তারা নবীজির এ বাণীর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়, ‘যে আমাদের দ্বীনের মাঝে নতুন কোনো বিষয় উদ্ভাবন করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।” -নুখাবুল আফকার, ৮/১১৩


১.উপরের লেখাটা কি সহীহ ? এটি কি হারাম ?এ ক্ষেত্রে যারা এর চাকরি করে এরা ফাসেক ? তাদের বেতন কি হালাল হচ্ছে ?
২. তাহলে ট্যাক্স আদায় না করলে গুনাহ হবে ?


৩.যারা আল্লাহর দ্বীন গোপন করে তাদেরকে কি উলামায়ে সূ বলে কেন ?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/9870 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছিলাম যে,,
আমরা উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝে নিলাম যে,
মাকস বলা হয় ঐ মাল কে,যা জরিমানা সরূপ  অন্যায়ভাবে ব্যবসায়ীদের সম্পদে আরোপ করা হয়।এজন্যই ইমাম যাহবী রাহ উনার অমর গ্রন্থ 'আল-কাবাইর' নামক কিতাবে বলেন,মাকস উসূলকারী জুলমের চুড়ান্ত সীমায় উপনিত। কেননা সে অন্যায়ভাবে উসূল করে আবার এমন কাউকে সে ঐ মাল দেয় যারা অদ্য ঐ মালের হক্বদার নয়।

ইমাম সারখাসী রাহ লিখেন,
والَّذي رُوي من ذمِّ العشَّار محمول على من يأخذ مال النَّاس ظلمًا كما هو في زماننا دون من يأخذ ما هو حقٌّ، وهو الصَّدقة
কুরআন হাদীসের যেখানেই সরকারী খাযানা উসূলকারী সম্পর্কে ভৎসনা বা তিরস্কার বর্ণিত হয়েছে,সেখানে ঐ অর্থই উদ্দেশ্য যে,যারা অন্যায়ভাবে জনগণের মাল উসূল করে।
এবং ঐ সমস্ত লোক সেই ভৎসনার উপযোগী নয় যারা ন্যায়সঙ্গত ভাবে সরকারী খাযানা উসূল করে। বরং তারা তো এতে সদকার সওয়াব পাবে।(মাবসুত-২/১৯৯)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
আমাদের নিকট বিষয়টা প্রায়ই পরিস্কার যে,
ট্যাক্স আর মাকস্ এক নয়।সুতরাং ট্যাক্স জায়েয়। আর মাকস্ নাজায়েয।আরেকটি জিনিষ পরিস্কার হওয়া প্রয়োজন, তা হলো,ট্যাক্স/কর এবং যাকাত এক নয়।বরং দু'টি ভিন্ন ভিন্ন জিনিষ।যাকাত এক বিষয় আর ট্যাক্স অন্য একটি বিষয়।দুটোকে আলাদা আলাদা ভাবে আদায় করতে হবে।এমনকি যাকাতকে ট্যাক্স হিসেবে দিলে যাকাত আদায়-ই হবে না।

ট্যাক্স সম্পর্কে চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 
"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় " (৩৫/১৪)  এভাবে বর্ণিত রয়েছে যে,
ذَهَبَ الْفُقَهَاءُ إِلَى أَنَّ لِلإِْمَامِ فَرْض َضَرَائِبَ عَلَى الْقَادِرِينَ لِوُجُوهِ الْمَصَالِحِ الْعَامَّةِ وَلِسَدِّ حَاجَاتِ الْمُسْلِمِينَ
قَال القرطبي: اتَّفَقَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّهُ إِذَا نَزَلَتْ بِالْمُسْلِمِينَ حَاجَةٌ بَعْدَ أَدَاءِ الزَّكَاةِ فَإِنَّهُ يَجِبُ صَرْفُ الْمَال إِلَيْهَا
 (١) .(١) القرطبي ٢ / ٢٤٢، وابن عابدين ٢ / ٥٧.
الموسوعة الفقهية الكويتية ٣٥/١٤
ভাবার্থঃমহামান্য ফুকাহায়ে কেরাম মনে করেন যে,
সরকার জনসাধারণের সেবা ও বিভিন্ন প্রয়োজন মিটাতে উপার্জন সক্ষম নাগরিকদের উপর ট্যাক্স অত্যাবশ্যকীয় করতে পারবে,বৈধ রয়েছে।
ইমাম কুরতুবী রাহ উদ্ধৃতিতে বলা হয় যে, তিনি বলেন,সম্পদশালী নাগরিকগণ যাকাত প্রদাণের পরও মুসলিম জনসাধারণের আর্থিক ঘাটতি দেখা দিলে  সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ট্যাক্স প্রদান করা তাদের উপর ওয়াজিব।(তাফসীরে কুরতুবী-২/২৪২রদ্দুল মুহতার-ইবনে আবেদিন;২/৫৭।)

সম্মাণিত দ্বীনী ভাইয়েরা!
সংক্ষেপে আমরা বুঝলাম যে,আয়কর বা ট্যাক্স সহনীয় পর্যায়ে হলে জনগণনের উপর তা আদায় করা ওয়াজিব।যাকাতের মতই আবশ্যক পালনীয়।
যদিও আয়করের বিধান শর্তসাপেক্ষ্য তথা ব্যায়খাত লক্ষণীয় একটি বিষয়।এবং যাকাত থেকে কিছুটা শীতিলযোগ্য।ট্যাক্স কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত একটি বিষয়।তাকে অস্বিকার করা যাবে না।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

কর/খাযনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-সকল প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন।

সুতরাং
ট্যাক্স নিষিদ্ধ নয়,বরং মুকস নিষিদ্ধ।
ইমাম জাসসাস মুকস সম্পর্কে বলেছেন।ট্যাক্স সম্পর্কে নয়।
ট্যাক্স দিতে হবে।দেওয়া ওয়ািজব।না দিলে গোনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 1,737 views
...