بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
রাসুল
(সা.) তার প্রিয় সাহাবিদের ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ—প্রত্যেক বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন। তার প্রতিটি
কর্ম ও পদক্ষেপ মানবতার অনুসরণযোগ্য। সফলতা ও কামিয়াবির মাধ্যম। জীবনপথের পাথেয়। তার
কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করলে মুমিনের জীবনে বয়ে যাবে প্রশান্তি ও সফলতা।খাওয়ার সময় বেশ
কিছু আদব রয়েছে , তন্মধ্যে বসার
আদব নিম্নে তুলে ধরা হলো:
নবীজি
কোনো কিছুর ওপর হেলান দিয়ে খাবার খেতে তিনি নিষেধ করেছেন। হেলান দিয়ে খাবার খেলে পেট
বড় হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে দাম্ভিকতা প্রকাশ পায়। আবু হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল
(সা.)-এর দরবারে ছিলাম। তিনি এক ব্যক্তিকে বলেন, আমি টেক লাগানো
অবস্থায় কোনো কিছু ভক্ষণ করি না। (বুখারি, হাদিস নং: ৫১৯০,
তিরমিজি, হাদিস নং: ১৯৮৬) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
বলেন, আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-কে হাঁটু খাড়া
করে উপুড় হয়ে বসে খেজুর খেতে দেখেছি। (মুসলিম হাঃ ৫১৭০)
আনাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন,
রসূলুল্ল-হ (সা:)’র কাছে খেজুর আনা হলো। তিনি তা হাঁটু খাড়া করে বসে
লোকদের মধ্যে বিতরণ করলেন। তিনিও তা খুব জাড়াতাড়ি খেয়ে নিতেন। (অর্থাৎ খুব জেঁকে বসে
খেতেন না)। যুহাইর (রাঃ) হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, খাওয়ার সময় তিনি
অতি দ্রুত খেতেন। (মুসলিম হাঃ ৫১৭১)
বসে খাওয়ার
কয়েকটি নিয়ম ররেছে তা হচ্ছে-
১. উভয়
পা উঠিয়ে বসা : এ পদ্ধতিতে বসে খাবার খেলে পরিমিত খাবারই মানুষের পেটে প্রবেশ করতে
পারে, অতিরিক্ত খাবার প্রবেশ করতে
পারে না। আর যত কম খাবার পাকস্থলীতে প্রবেশ করানো যায় ততই রোগ ব্যাধি কম হবে।ঃ
২. এক
হাঁটু উঠিয়ে বসা : এ পদ্ধতিতে বসে খাবার খেলে পরিমাণের চেয়ে কিছু বেশি খাবার গ্রহণ
করা যায়। এ পদ্ধতিতে বসে আহারকারী ব্যক্তি (Spleen)
প্লীহা রোগ থেকে মুক্ত থাকে এবং তার উরুর মাংশপেশী মজবুত ও দৃঢ় হয়।
৩. দুই
হাঁটু গেড়ে বসা : এ পদ্ধতিতে খাবার কিছু বেশিই খাওয়া যায়। এ পদ্ধতি শুধু ঐ সমস্ত লোকদের
জন্য প্রযোজ্য যারা কঠোর পরিশ্রমী, পায়ে হেঁচে চলেন বা নিয়মিত ব্যায়াম করেন। চেয়ারে ও গাড়ীতে উপবিস্ট লোকদের জন্য
এ পদ্ধতিতে খাবার গ্রহণ রোগ-ব্যাধির প্রধান কারণ।
আর প্রথম
পদ্ধতিতে বসে খেলে রোগ ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকা যায় এবং উপকারিতাও অনেক।
হেলান
দিয়ে না খাওয়া : আবূ জুহাইফাহ থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেছেন
: আমি হেলান দিয়ে খাবার গ্রহণ করি না। (বুখারী হাঃ ৪৯৯৭)
ইসলামে
হেলান দিয়ে বসে খাবার খেতে নিষেধ করেছে। কেননা হেলান দিযে বসে খাবারের মধ্যে তিনটি
তিনটি অপকারিতা রয়েছে :
১. সঠিকভাবে
খাবার চিবানো যায় না ফলে যে পরিমাণ লালা খাদ্যের সাথে মিশ্রিত হওয়ার কথা ছিল তা হয়
না যার কারণে পাকস্থলীতে মাড় বিশিষ্ট খাবার (Carbohydrates)
হজম হয় না, ফলে হজম প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
২. ঠেস
দিযে বসলে পাকস্থলী প্রশস্থ হয়ে যায় ফলে অপ্রয়োজনীয় খাবার পেটে চলে যাবে এবং হজম প্রক্রিয়াতে
বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি হবে।
৩. ঠেস
দিয়ে খাবারের ফলে অন্ত্র এবং যকৃতের (Liver)
কার্যক্রম ব্যাহত হয়। একথা অভিজ্ঞতা দ্বারা প্রমাণিত। (সুন্নতে রাসূল
ও আধুনিক বিজ্ঞান- ৯২)
সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
আপনি
চাইলে যে কোন পদ্ধতিতে খাবার গ্রহণ করতে পারেন। তবে উভয় হাটু উঠিয়ে খাবার গ্রহণ করাই
উত্তম ।কারণ, এভাবে বসে আহার
করলে পরিমিত খাবার গ্রহন করার ফলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।