বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
সফর কমপক্ষে ৪৮
মাইলের ( যা প্রায় ৭৮ কিলোমিটার মত) চেয়ে কম হলে মহিলাগণ পর্দার সাথে একা একা সফর
করতে পারবেন । আর ৪৮ মাইলের চেয়ে বেশি হলে স্বামী বা মাহরাম ছাড়া কারো
সাথে বা একা সফর করা জায়েজ নয়।
আল্লাহ তাআলা
বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا
تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং
জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)
হাদীস শরীফে
এসেছে-
عَنْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا
قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ من
بيتها اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ وَإِنَّهَا لَا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ
مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا.
আব্দুল্লাহ বিন
উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মেয়ে মানুষ
(সবটাই) লজ্জাস্থান (গোপনীয়)। আর সে যখন নিজ বাড়ি থেকে বের হয়, তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে সুশোভন করে
তোলে। সে নিজ বাড়ির অন্দর মহলে অবস্থান ক’রে আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী থাকে।
(তাবরানী ২৯৭৪)
বিশুদ্ধ
মতানুযায়ী মাহরাম না থাকলে মহিলার উপর হজ্বও ফরয হবে না। হাদীস শরীফে এসেছে-
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا
يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا
مَحْرَمٌ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا
وَكَذَا وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ
اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
[‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত।
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায়
নির্জনে একত্র না হয়, আর কোন স্ত্রীলোক
যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস
করলো, হে আল্লাহর রসূল! অমুক
অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের
হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো।
সহীহ : বুখারী
৩০০৬, মুসলিম ১৩৪১, আহমাদ ১৯৩৪,
সহীহ ইবনু
খুযায়মাহ্ ২৫২৯, সুনানুল কুবরা লিল
বায়হাক্বী ১০১৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৭৫৭।
ইমাম নববী রাহ
বলেন,
"فَالْحَاصِل أَنَّ كُلّ مَا يُسَمَّى سَفَرًا
تُنْهَى عَنْهُ الْمَرْأَة بِغَيْرِ زَوْج أَوْ مَحْرَم " انتهى
মোটকথাঃ স্বামী
বা মাহরাম পুরুষ ব্যতীত যেকোনো প্রকার সফর থেকে মহিলাকে বাধা প্রদান করা হবে।
সফরের ধর্তব্য হল
দূরত্ব। কত সময়ে উক্ত স্থানে পৌঁছতে পারছে সেটা ধর্তব্য নয়। উদাহরণতঃ ঢাকার থেকে
চট্টগ্রামের দূরত্ব চারশত কিলোমিটার। কিন্তু বিমানে যেতে লাগে ৩০মিনিট। এক্ষেত্রে
বিমানে সফর করলেও মহিলাদের জন্য স্বামী বা মাহরাম থাকা আবশ্যক। একা সফর করা জায়েজ
নয়। মহিলাদের মাহরাম ঐ সকল ব্যক্তিদের বলা হয়,
যাদের সাথে আজীবন
বিবাহ নিষিদ্ধ। যেমন- পিতা, দাদা, ছেলে, নাতি, ভাগিনা,
মামা, ভাই, ভাতিজা, শ্বশুর,
চাচা, মেয়ের জামাই প্রমূখ।
সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে
আপনার ও আপনার মায়ের জন্য মাহরাম ছাড়া সফর জায়েজ হবে না।
২.‘আস সালামু’ আল্লাহর নিরানব্বইটি নামের একটি।