আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
439 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ!
একটি মেয়ের ডিভোর্স শরীয়তের ভিত্তিতে কার্যকর হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাচ্ছি। মেয়েটির কাবিননামায় 18 নং কলামে "ভরণপোষণ প্রদান না করিলে" তালাক দিতে পারিবে- এই মর্মে উল্লেখ ছিল।

বিবাহ পরবর্তী সময় দেখা যায় যে, ছেলেটির গুরুতর শারীরিক সমস্যা ছিল। তাছাড়া ছেলেটির মা মানসিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নয়। এই সমস্ত ব্যাপারগুলা পুরোপুরি গোপন করেছিলো ওরা। মেয়েটি এবং মেয়েটির পরিবার বারবার অনুরোধ করার পরও ছেলেটির পরিবার তার চিকিৎসা না করে উল্টো  মেয়েটির উপর মানসিক নির্যাতন করতে থাকে এবং তা ক্রমেই বাড়তে থাকে। আর ছেলেটি মেয়েটার সাথে ভালো মানুষের অভিনয় করে যেতে থাকে। মেয়েটির পরিবারের সাথে মেয়েটির যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে পড়ে। ছেলেটির মা এতই অসুস্থ ছিল যে প্রায়ই চিৎকার চেঁচামেচি করে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করত। তাছাড়া তারা দ্বীনের ব্যাপারে উদাসীন ছিল। বিয়ের আগে দ্বীনের সব ব্যাপার মেনে নিলেও বিয়ের পর অন্য চেহারা দেখা যায় (যেমনঃ খাস পর্দায় বাধা, নামাজে দেরি হলে-কুরআন তিলাওয়াতে তাদের ভুল সংশোধন করতে চাইলে উত্তেজিত হতো) । এমনকি ওরা মেয়েটিকে বিয়ের সময় দেয়া গহনাও রেখে দিয়েছিল।
ছেলেটির পরিবারের ছিল প্রচন্ড অহংবোধ ।
ছেলেটির বাবা একদিন মেয়েটিকে বলেছিল " আমাদের এইসব ব্যাপার বাসায় জানিয়ে লাভ নেই কারন তারা তো আমাদেরকে পরিবর্তন করতে পারবে না শুধুমাত্র পারে তোমাকে নিয়ে যেতে"। তাছাড়া আরেকদিন মেয়েটি অনেক কান্নাকাটি করায় ছেলেটি বলেছিল "আপনি চাইলে চলে যেতে পারেন"।  যদিও তারা কখনোই মেয়েটিকে এত সহজে ছেড়ে দেয়ার মানুষ ছিলো না।
বিয়ের পর পর মেয়েটিকে বাসায় আসতে দিলেও তারপর আর ওরা বাসায় আসতে দিচ্ছিল না।  এরূপ প্রতিকূল পরিবেশে মেয়েটির টিকে থাকা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই শেষ পর্যন্ত বিয়ের ২ মাস পর অনেক কষ্টে মেয়েটির পরিবা্র তাকে নিয়ে আসে। তারপর কোর্টে গিয়ে ডিভোর্স দিয়ে তাদেরকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেয়া হয়। কারন ছেলেপক্ষ কখনোই ডিভোর্স দিবে না আর খোলা তালাকের জন্য বললেও তারা মেনে নেবে না।  এই পরিস্থিতিতে মেয়েটির ডিভোর্স দেওয়াটা কি শরীয়ত সম্মত হয়েছে?
ডিভোর্সের পরে ছেলেটি শুধুমাত্র একদিন এসে মেয়েটির পরিবারের সাথে প্রচন্ড বাজে ব্যবহার করে চলে গেছে। ছেলেটি বাবাও একদিন ফোন করে হুমকি-ধামকি দেয়। এরপর মেয়েটির পরিবার ভয়ে ওদের আর কোন কল রিসিভ করেনি। । কিন্ত ছেলের পরিবারও তাদের বাসায় একবারের জন্যও আসেনি। এখন মেয়েটির পরিবার যদি তাকে অন্যত্র বিবাহ দেয়ার চেষ্টা করে তাহলে শরীয়ত সম্মত হবে কি?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
জ্বী, মেয়েটি কোর্টের মাধ্যমে যে তালাক নিয়েছে,সেটা বিশুদ্ধ হয়েছে।
মেয়ে নিজে নিজের উপর তালাক দিবে।নতুবা কোর্ট বিবাহকে ভঙ্গ করে দেবে।

ছেলে মেয়েকে মিথ্যা বলে ধোকা দিয়েছিলো।
কোনো পুরুষ ধোকা দিয়ে বিয়ে করলে, এক্ষেত্রে শরয়ী বিধান হলো
ﻟَﻮْ اﻧْﺘَﺴَﺐَ اﻟﺰَّﻭْﺝُ ﻟَﻬَﺎ ﻧَﺴَﺒًﺎ ﻏَﻴْﺮَ ﻧَﺴَﺒِﻪِ ﻓَﺈِﻥْ ﻇَﻬَﺮَ ﺩُﻭﻧَﻪُ ﻭَﻫُﻮَ ﻟَﻴْﺲَ ﺑِﻜُﻒْءٍ ﻓَﺤَﻖُّ اﻟْﻔَﺴْﺦِﺛَﺎﺑِﺖٌ ﻟِﻠْﻜُﻞِّ، ﻭَﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻛُﻔُﺆًا ﻓَﺤَﻖُّ اﻟْﻔَﺴْﺦِ ﻟَﻬَﺎ ﺩُﻭﻥَ اﻷَْﻭْﻟِﻴَﺎءِ، ﻭَﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻣَﺎ ﻇَﻬَﺮَ ﻓَﻮْﻕَ ﻣَﺎ ﺃَﺧْﺒَﺮَ ﻓَﻼَ ﻓَﺴْﺦَ ﻷَِﺣَﺪٍ.............الي ان قال ............ ﻟَﻜِﻦْ ﻇَﻬَﺮَ ﻟِﻲ اﻵْﻥَ ﺃَﻥَّ ﺛُﺒُﻮﺕَ ﺣَﻖِّ اﻟْﻔَﺴْﺦِ ﻟَﻬَﺎ ﻟِﻠﺘَّﻐْﺮِﻳﺮِ ﻻَ ﻟِﻌَﺪَﻡِ اﻟْﻜَﻔَﺎءَﺓِ ﺑِﺪَﻟِﻴﻞِ ﺃَﻧَّﻪُ ﻟَﻮْ ﻇَﻬَﺮَ ﻛُﻔُﺆًا ﻳَﺜْﺒُﺖُ ﻟَﻬَﺎ ﺣَﻖُّ اﻟْﻔَﺴْﺦِ ﻷَِﻧَّﻪُ ﻏَﺮَّﻫَﺎ، ﻭَﻻَ ﻳَﺜْﺒُﺖُ ﻟِﻷَْﻭْﻟِﻴَﺎءِ ﻷَِﻥَّ اﻟﺘَّﻐْﺮِﻳﺮَ ﻟَﻢْ ﻳَﺤْﺼُﻞْ ﻟَﻬُﻢْ،
যদি স্বামী নিজেকে নিজস্ব বাস্তব বংশ ব্যতীত ভিন্ন বংশের লোক বলে দাবী করে,এবং পরবর্তীতে এর চেয়ে নিম্নমানের বংশ প্রমাণিত হয়,তাহলে সে উক্ত মেয়ের কু'ফু হতে পারবে না,এবং মহিলা ও মহিলার অভিবাবক সকলের জন্যই বিবাহকে কাযীর মাধ্যমে ভঙ্গ করা অধিকার থাকবে।
কিন্তু যদি পরবর্তীতে এমন বংশ প্রমাণিত হয়,যা উক্ত মেয়ের কু'ফু অবশ্য হবে(কিন্তু সে প্রথমে বাড়িয়ে মিথ্যে বলেছিলো)তাহলে ও মহিলার বিবাহ ভঙ্গের অধিকার থাকবে।যদিও ওলীর থাকবে না।
আর যদি তার বর্ণনাকৃত বংশের চেয়েও পরবর্তীতে উচ্ছ বংশ প্রমাণিত হয় তাহলে কারো বিবাহ ভঙ্গের অধিকার থাকবে না।

(ইবনে আবেদীন শামী রাহ বলেন)
বর্তমানে আমার কাছে এটাই প্রস্ফুটিত হয়েছে যে,মহিলার জন্য ফসখের অধিকার স্বামীকে শাস্তি দেয়ার জন্যই।কু'ফু র সমতা না থাকাতে নয়।
কেননা ছেলে মিথ্যা বলার পরও যদি তার এমন বংশ প্রমাণিত হয় যা ঐ মহিলার সমকক্ষ,তাহলেও মহিলার ফসখের অধিকার অর্জন হয়।এজন্য যে, পুরুষ মিথ্যা বলে মহিলাকে ধোকা দিতে চেয়েছিলো।এবং এজন্যই অভিবাবকদের জন্য ফসখের অধিকার অর্জন হবে না।কারণ সে অভিবাবকদের সাথে শাস্তিযোগ্য কোনো অপরাধ করেনি।
রদ্দুল মুহতার-৩/৫০১

মুহতারামাহ!
যেহেতু ঐ ছেলে আপনার বোনকে ধোকা দিয়েছে তাই আপনার বোনের জন্য ফসখের অধিকার অর্জিত হবে তথা তিনি কাযীর বা কোর্ট অথবা সামাজিকভাবে নিজে বিয়েকে ভঙ্গ করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...