بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَغْرِسُ غَرْسًا، أَوْ
يَزْرَعُ زَرْعًا، فَيَأْكُلُ مِنْهُ طَيْرٌ أَوْ إِنْسَانٌ أَوْ بَهِيمَةٌ،
إِلَّا كَانَ لَهُ بِه صَدَقَةٌ.
যখন কোনো
মুসলিম গাছ লাগায়, অথবা কোনো ফসল বোনে, আর
মানুষ, পাখি বা পশু তা থেকে খায়, এটা রোপণকারীর
জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস ২৩২০;
সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৫৩) আরেক বর্ণনায় এসেছেÑ “কিয়ামত পর্যন্ত (অর্থাৎ যতদিন গাছটি বেঁচে
থাকবে বা তা থেকে উপকার গ্রহণ করা হবে) সে গাছ তার জন্য সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে গণ্য
হবে।”(সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৫২)
আমার লাগানো
গাছ থেকে যে কেউ উপকার গ্রহণ করুক তা আমার জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হবে। এমন কি কেউ
যদি আমার লাগানো গাছ থেকে চুরি করে খায়, সেটাও বিফলে যাবে না।
হাঁ, চুরির কারণে তার গোনাহ হবে, কিন্তু
আমি সওয়াব পেয়ে যাবো। হাদীসে এসেছে:
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَغْرِسُ غَرْسًا إِلَّا
كَانَ مَا أُكِلَ مِنْهُ لَهُ صَدَقَة، وَمَا سُرِقَ مِنْهُ لَهُ صَدَقَةٌ، وَمَا
أَكَلَ السَّبُعُ مِنْهُ فَهُوَ لَهُ صَدَقَةٌ، وَمَا أَكَلَتِ الطَّيْرُ فَهُوَ
لَهُ صَدَقَةٌ، وَلَا يَرْزَؤُهُ أَحَدٌ إِلَّا كَانَ لَهُ صَدَقَةٌ.
মুসলিম
যখন কোনো গাছ রোপণ করে, তো এর যে ফল খাওয়া হবেÑ এটা তার জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হবে। এ থেকে
যা চুরি যাবে তাও সদাকা হিসেবে গণ্য হবে। হিং¯্র প্রাণীও যদি তা থেকে খায় তাও সদাকা হবে। পাখি খেলে
সদাকা হবে। (এমন কি) যে কেউ যে কোনোভাবে এ থেকে (উপকার) গ্রহণ করবে তা সদাকা হিসেবে
গণ্য হবে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৫২)
এ বর্ণনার
শেষ অংশ থেকে বোঝা যায়, শুধু ফলবান গাছ উদ্দেশ্য নয় এবং শুধু ফল খেয়ে
উপকার গ্রহণ উদ্দেশ্য নয়, বরং যে কোনো প্রকারের গাছ এবং যে কোনো
প্রকারের উপকার গ্রহণই সওয়াব অর্জনের মাধ্যম বলে গণ্য হবে।
আরেক বর্ণনায়
এসেছে:
مَا مِنْ رَجُلٍ يَغْرِسُ غَرْسًا إِلَّا
كَتَبَ اللهُ لَهُ مِنَ الْأَجْرِ قَدْرَ مَا يَخْرُجُ مِنْ ثَمَرِ ذَلِكَ
الْغِرَاس.
কোনো ব্যক্তি
যখন গাছ লাগায়, তো এ গাছে যত ফল হবে, তার আমলনামায় এ ফল পরিমাণ সওয়াব লেখা হবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৩৫২০)
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন নিজ
হাতে গাছ লাগিয়েছেন, গাছ
লাগানোর প্রতি উৎসাহিত করেছেন, তাঁর সাহাবীগণও নিজেরা গাছ লাগাতেন
এবং একে সওয়াবের কাজ মনে করতেন। এমন কি এটি যে একটি ভালো কাজ এ বিষয়ে কারো মাঝে অস্পষ্টতা
বা অজ্ঞতা থাকলে তা দূর করতেন।
عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، أَنَّ رَجُلًا، مَرَّ
بِهِ وَهُوَ يَغْرِسُ غَرْسًا بِدِمَشْقَ فَقَالَ لَهُ : أَتَفْعَلُ هَذَا
وَأَنْتَ صَاحِبُ رَسُولِ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقَالَ : لَا
تَعْجَلْ عَلَيَّ سَمِعْتُ، رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
يَقُولُ: " مَنْ غَرَسَ غَرْسًا لَمْ يَأْكُلْ مِنْهُ آدَمِيٌّ، وَلَا خَلْقٌ
مِنْ خَلْقِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا كَانَ لَهُ صَدَقَةً.
হযরত আবু
দারদা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি গাছ লাগাচ্ছিলেন, এমন সময় তার পাশ দিয়ে এক ব্যক্তি যাচ্ছিলো। তাঁকে গাছ লাগাতে দেখে লোকটি
বলে উঠলো আপনি রাসূলের সাহাবী হয়ে গাছ লাগাচ্ছেন!
তখন আবু দারদা রা. তাকে বললেন, একটু শুনে যাও; আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যখন কেউ গাছ লাগায়, আর তা থেকে কোনো মানুষ বা কোনো প্রাণী
খায়, এটা তার জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হয়। (মুসনাদে আহমাদ,
হাদীস ২৭৫০৬০
এ থেকেই
বোঝা যায়, বৃক্ষরোপণের বিষয়ে নবীজীর উৎসাহকে সাহাবায়ে
কেরাম কত গুরুত্ব সহকারে অনুধাবন করেছেন ও আমল করেছেন।
এক হাদীসে তিনি ইরশাদ করেন:
إِنْ قَامَتْ عَلَى أَحَدِكُمُ الْقِيَامَةُ،
وَفِي يَدِهِ فَسِيلَةٌ فَلْيَغْرِسْهَا.
যদি কিয়ামত
সংঘটিত হওয়ার আগ মুহূর্তেও তোমাদের কারো হাতে একটি চারাগাছ থাকে, তাহলে সে
যেন তা রোপণ করে দেয়। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১২৯০২; আলআদাবুল মুফরাদ, বুখারী, হাদীস
৪৭৯)
প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
বৃক্ষরোপন
করা নিশ্চয় সওয়াবের কাজ।কারণ নবী সা: নিজে বৃক্ষ রোপন করেছেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে
এই কাজে উৎসাহিত করেছেন।অতএব এমন কজে দান করলে অবশ্যই সওয়াব পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।আগামীতে
কি হবে তা আপনার জানা নেই।অতএব সওয়াবের আশায় আপনি দান করবেন,কমপক্ষে গাছ
লাগানোর যে সওয়াব তা থেকে আপনি মাহরুম হবেন না ইনশাআল্লাহ।