জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
যদি উল্লেখিত বাক্য বলার সময় স্বামীর মনে তালাকেএ নিয়য় থাকে,তাহলে এটি শর্তযুক্ত তালাক হবে।
নতুবা শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।
,
(০২)
তালাককে যেকোনো শর্তের সাথে সংযুক্ত করলে সেই শর্ত পাওয়া গেলেই বক্তব্য অনুপাতে তালাক পতিত হয়ে যাবে।
واذا اضافه إلى الشرط، وقع عقيب الشرط اتفاقا، مثل أن يقول لامرأته: إن دخلت الدار فأنت طالق، (الفتاوى الهندية، الفصل الثالث فى تعليق الطلاق-1/420، الهداية، كتاب الطلاق، باب الأيمان فى الطلاق-2/385، تبيين الحقائق، باب التعليق-3/109)
সারমর্মঃ
যদি তালাককে কোনো শর্তের সাথে যুক্ত করে,তাহলে শর্ত পাওয়ার পরেই তালাক পতিত হয়ে যাবে।
,
«" وإذا أضافه إلى شرط وقع عقيب الشرط مثل أن يقول لامرأته إن دخلت الدار فأنت طالق " وهذا بالاتفاق لأن الملك قائم في الحال والظاهر بقاؤه إلى وقت وجود الشرط فيصح يمينا أو إيقاعا "» - «الهداية في شرح بداية المبتدي» (1/ 244)
মর্মার্থ-তালাককে যদি স্বামী কোনো শর্তের সাথে সম্বন্ধযুক্ত করে,তাহলে শর্ত পাওয়া গেলেই সাথে সাথে তালাক পতিত হবে।যেমন স্বামী তার স্ত্রীকে বলল,যদি তুমি ঘরে প্রবেশ করো,তাহলে তালাক।এই তালাক পতিত হওয়াটা সর্বসম্মতিক্রমে সাব্যস্ত হয়েছে।
«ولنا أن صحة الكلام بأهلية المتكلم إلا أن الملك يشترط حالة التعليق ليصير الجزاء غالب الوجود لاستصحاب الحال فتصح اليمين وعند تمام الشرط لينزل الجزاء لأنه لا ينزل إلا في الملك» - «الهداية في شرح بداية المبتدي» (1/ 246)
মর্মার্থ- তালাককে যে জিনিষের সাথে সম্বন্ধযুক্ত করা হবে,সেই জিনিষ যখন পাওয়া যাবে,তখন সাথে সাথেই তালাক পতিত হবে।
,
(০৩)
যদি বাচ্চা,বাচ্চার মা অসুস্থ বা সন্তান অসুস্থ, মা সন্তানের শারীরিক অবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে জানার জন্য এককথায় শরীয়ত সম্মত কারনে গর্ভবতী মহিলার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়,তাহলে সেই ছুরতে ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করে বাচ্চা ছেলে না মেয়ে জানা জায়েজ আছে।
তবে এটি পছন্দনীয় আমল নয়।
না জানাই উত্তম।
,
আর যদি বাচ্চা "ছেলে না মেয়ে" শুধু এটা জানার জন্যই গর্ভবতী মহিলার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়,তাহলে তাহা নাজায়েজ।
বিস্তারিত জানুনঃ
(০৪)
সিজারের ব্যাপারে ইসলামী স্কলারদের মত হলো একান্ত অপারগতাবশত সিজার করতে কোনো সমস্যা নেই। অর্থাৎ যখন বাচ্চা বা মায়ের জীবননাশের বা বড় কোনো ক্ষতির আশঙ্কা হয় এবং কোনো বিজ্ঞ চিকিৎসক সিজার করাতে বলেন, তখন সিজার করানো যাবে। তবে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব হলে সিজার করা জায়েজ নেই।
যাঁরা সিজার করেছেন তাঁরা এ বিষয়ে অবগত আছেন। সারা জীবন এর কষ্ট বয়ে বেড়াতে হয়। এ ছাড়া ভারী কোনো কাজ করা যায় না। তিনটি সিজারিয়ান অপারেশনের পর পরবর্তী জীবনে কখনো পেটে অপারেশনের প্রয়োজন হলে জীবনের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়।
অপ্রয়োজনে সিজার করা যেসব কারনে নাজায়েজঃ-
★সিজারের দ্বারা নিজ শরীরের ক্ষতি করা হয়, যা ইসলামে নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,
وَ لَا تُلۡقُوۡا بِاَیۡدِیۡکُمۡ اِلَی التَّہۡلُکَۃِ ۚۖۛ
‘তোমরা নিজেদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়ো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৫)
★অধিক সন্তান ধারণের দিক থেকে অনেকটা পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়। কেননা সিজার করলে দুই-তিনটির বেশি সন্তান নেওয়া যায় না। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ভালোবাসাপ্রবণ ও অধিক সন্তান জন্মদানে সক্ষম নারীকে বিবাহ করো। আমি কিয়ামতের দিন উম্মতের আধিক্য নিয়ে গর্ব করব।’
পূর্ণ হাদিসটি হলোঃ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا مُسْتَلِمُ بْنُ سَعِيدٍ ابْنَ أُخْتِ مَنْصُورِ بْنِ زَاذَانَ، عَنْ مَنْصُورٍ يَعْنِي ابْنَ زَاذَانَ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ، عَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: إِنِّي أَصَبْتُ امْرَأَةً ذَاتَ حَسَبٍ وَجَمَالٍ، وَإِنَّهَا لَا تَلِدُ، أَفَأَتَزَوَّجُهَا، قَالَ: لَا ثُمَّ أَتَاهُ الثَّانِيَةَ فَنَهَاهُ، ثُمَّ أَتَاهُ الثَّالِثَةَ، فَقَالَ: تَزَوَّجُوا الْوَدُودَ الْوَلُودَ فَإِنِّي مُكَاثِرٌ بِكُمُ الْأُمَمَ حسن صحيح
মা‘কিল ইবনু ইয়াসার (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে উপস্থিত হয়ে বললো, আমি এক সুন্দরী ও মর্যাদা সম্পন্ন নারীর সন্ধান পেয়েছি। কিন্তু সে বন্ধ্যা। আমি কি তাকে বিয়ে করবো? তিনি বললেনঃ না। অতঃপর লোকটি দ্বিতীয়বার এসেও তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাকে নিষেধ করলেন। লোকটি তৃতীয়বার তাঁর নিকট এলে তিনি তাকে বললেনঃ এমন নারীকে বিয়ে করে যে, প্রেমময়ী এবং অধিক সন্তান প্রসবকারী। কেননা আমি অন্যান্য উম্মাতের কাছে তোমাদের সংখ্যাঘিধক্যের কারণে গর্ব করবো।
(আবু দাউদ, হাদিস : ২০৫০)
★বিনা প্রয়োজনে কোনো পুরুষকে সতর দেখানো হয়।
★বিনা কারনে সিজার করলে অর্থের অপচয় হয়। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,
وَ لَا تُبَذِّرۡ تَبۡذِیۡرًا ﴿۲۶﴾
اِنَّ الۡمُبَذِّرِیۡنَ کَانُوۡۤا اِخۡوَانَ الشَّیٰطِیۡنِ ؕ
‘তোমরা অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই। (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৬-২৭)