আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,027 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (6 points)
আমাদের দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন জিনিসের ব্যাবহার ব্যাপক বৃদ্ধি  পেয়েছেে। কোনটা জয়েজ তাদের কোন ধারনা বা কাজ তাদের শিরক করাচ্ছে তারা বুঝতে পারছে না। আমি যদি মারসুস ভাইয়ের জন্মনিয়ন্ত্রণ বইটার আলোকে মানুষকে সচেতন করার নিয়তে পরিবার পরিকল্পনার অধীনে জব করি সেটা কি নাজায়েজ হবে??? যারা পরামর্শ নিতে আসবে তাদের যদি ইসলামে হারাম হালাল এর বিষয়টা তে সচেতন করি এরপর তাদের উপর ছেড়ে দেই। এটা কি জায়েজ হবে?? পুরুষের সাথে বিনা প্রয়োজনে কথা না বলে আর পর্দা করে আমি কি জব টা করতে পারবো???

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
  

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

মেয়েদের জব করার বিধান সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন:https://ifatwa.info/25068/

হারাম কাজ করে এমন কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা ইসলাম অনুমোদন করে না।

পক্ষান্তরে যদি প্রতিষ্ঠানটি এমন কোনো কাজ করে যা মূলগতভাবে হারাম নয় কিন্তু মানুষ এটাকে মন্দ বা হারাম কাজে ব্যবহার করে, এধরণের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা বৈধ।

জন্ম নিয়ন্ত্রনের সমস্ত ছুরত যেহেতু হারাম নয়,তাই ঢালাওভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণকে হারাম বলা যায়না,এটা নিয়ন্ত্রন কারীর নিয়ত ইত্যাদির উপর নির্ভর করে।আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/4441/?show=4441#q4441


আল্লামা ইউসুফ আল-কারদাবী বতমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম। সর্বজন শ্রদ্ধেয় এ মনীষীর গ্রহণযোগ্য একটি বিখ্যাত কিতাব “আল্ হালালু ওয়াল হারামু ফিল ইসলাম” (পৃষ্ঠা: ২৬০-২৬৫) থেকে আলোচ্য প্রশ্নের উত্তর এখানে উদ্ধৃত করা হল

যে অবস্থায় পরিবার পরিকল্পনা জায়েয---

বিশেষ প্রয়োজনে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ জায়েয হতে পারে। একটি প্রয়োজন হচ্ছে, মায়ের জীবন বা স্বাস্থ্যের ওপর যদি রোগ বা প্রসবকালীন সংকটের দরুণ হুমকি দেখা দেয়, তাহলে এ পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে। এ সংকট বা হুমকির কথা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জানা যাবে, কিংবা কোন বিশ্বস্ত-নির্ভরযোগ্য চিকিৎসাবিদ তা বলে দেবে।

 আল্লাহ্ নিজেই বলেছেন---

وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ ۛ وَأَحْسِنُوا ۛ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ

তোমরা নিজেদের হাতেই নিজেদের ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করো না (সুরা -২, আয়াত ১৯৫ )।

অন্যত্র তিনি বলেছেন

وَلَا تَقْتُلُوا أَنفُسَكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا

তোমরা নিজেরাই নিজেদের হত্যা করো না। আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতি অতীব দয়াবান (সুরা -৪, আয়াত -২৯) ।

দ্বিতীয় ভিত্তি হচ্ছেবৈষয়িক অসুবিধা, সমস্যা ও অনিশ্চয়তা অসহায়ত্বের মধ্যে পড়ে যাওয়ার আশংকা, যার দরুণ দীনি সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করা হবে। যার ফলে মানুষ সন্তানাদির কারণে হারাম জিনিস গ্রহণ ও অবৈধ কাজে লিপ্ত হওয়ার পরিণতি দেখা দেবে। আল্লাহ বলেছেন---

يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ

আল্লাহ্ তোমাদের সহজ স্বচ্ছলতা কামনা করেন এবং তিনি কষ্ট ও কাঠিন্য কামনা করেন না” (সুরা-২, আয়াত-১৮৫) ।

আল্লাহ্ তোমাদের উপর সংকীর্ণতা বা অসুবিধা চাপিয়ে দিতে চান না” (সুরা -৫, আয়াত-৬)।

তৃতীয় হচ্ছেসন্তানদের স্বাস্থ্য নষ্ট হওয়ার কিংবা তাদের সঠিক লালন-পালনের ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হওয়ার আশংকা।

শরীআতের দৃষ্টিতে আরও একটি প্রয়োজনের উল্লেখ করা যায়। তা হচ্ছে, দৃগ্ধপোষ্য শিশু মায়ের আবার গর্ভসঞ্চার হলে শিশুর পক্ষে তা ক্ষতিকর হতে পারে। তখন মায়ের দুধের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যেতে পারে, ফলে শিশু দুর্বল হয়ে পড়ে।

নবী করীম (স.) উম্মতের জন্যে সামষ্টিকভাবে কল্যাণকর কার্যাদি করার হিদায়াত দিতেন। আর যে সব কাজের ফলে উম্মতের ক্ষতি সাধিত হওয়ার আশংকা করতেন, তা পরিহার করে চলতে বলতেন।

সুতরাং পরিবার পরিকল্পনাতে পর্দার বিধান মেনে আপনার জন্য জব করা বৈধ হতে পারে তবে এই শর্তে যে ,আপনার দ্বারা যেন শরীয়তের কোন বিধান লঙ্ঘন না হয়ে এবং ইসলাম সমর্থন করেনা এমন দিকনির্দেশনা আপনার থেকে কেউ না পায়, তাহলে চাকুরীটি হারাম হবে না। এর থেকে প্রাপ্ত বেতনকেও হারাম বলা যাবে না। তবে সর্বদায় খেয়াল রাখতে হবে যে শরীয়ত বহির্ভুত কোনো কাজ যেনো না হয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...