আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
285 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (72 points)
কিছু হাদিসের সনদ সম্পর্কে জানতে চাই

১। "জানা লোকের কাছ থেকে জানো", "প্রমান সহকারে জানো"
আমরা যদি কোনো ইবাদত জানি বা শিখি তাহলে প্রমান সহকারে শিখতে হবে এই কথা ২টি কোন সুরায় বা কোন হাদিসে
বলা হয়েছে?

২। "যারা দিনকে বাড়াবে তারা জাহান্নামে যাবে",
"নবী (সঃ) বলেছেন যে আমার নামে কোনো কথা বলবে সে কথা যদি আমার না হয় তাহলে তার থাকার জায়গা
জাহান্নাম",
"কিছু মানুষ জাহান্নামে যাবে তখন নবি(সঃ) বলবেন এরা তো আমার উম্মত তখন আল্লাহ্‌ বলবেন আপনি জানেন না এরা
আপনার পরে দ্বিনকে বাড়িয়ে ছিলো"
এই কথা ৩টি কোন সুরায় বা কোন হাদিসে বলা হয়েছে?

৩। "হারাম জিনিস থেকে হারামই হয়" এই কথাটি কোন সুরায় বা কোন হাদিসে বলা হয়েছে?

৪। "এক পাপ অন্য পাপের উপরে বর্তায় না বা পরে না" এই কথাটি কোন সুরায় বা কোন হাদিসে বলা হয়েছে?

৫। "ব্যবসায়ীরা যেন বেশি বেশি দান করে কারন তারা মিথ্যা কথা বললে যাতে দানের কারনে মাফ হয়ে যায়" এই কথাটি
কোন সুরায় বা কোন হাদিসে বলা হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত  "জানা লোকের কাছ থেকে জানো" মর্মে কুরআন হাদীস থেকে দলিলঃ 

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ

জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।(সূরা নাহল-৪৩)


وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا قَبۡلَکَ اِلَّا رِجَالًا نُّوۡحِیۡۤ اِلَیۡہِمۡ فَسۡـَٔلُوۡۤا اَہۡلَ الذِّکۡرِ اِنۡ کُنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۷﴾ 
আর আপনার আগে আমরা ওহীসহ পুরুষদেরকেই পাঠিয়েছিলাম; সুতরাং যদি তোমরা না জান তবে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর।
(সুরা আম্বিয়া ০৭)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَنْطَاكِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ خُرَيْقٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ خَرَجْنَا فِي سَفَرٍ فَأَصَابَ رَجُلاً مِنَّا حَجَرٌ فَشَجَّهُ فِي رَأْسِهِ ثُمَّ احْتَلَمَ فَسَأَلَ أَصْحَابَهُ فَقَالَ هَلْ تَجِدُونَ لِي رُخْصَةً فِي التَّيَمُّمِ فَقَالُوا مَا نَجِدُ لَكَ رُخْصَةً وَأَنْتَ تَقْدِرُ عَلَى الْمَاءِ فَاغْتَسَلَ فَمَاتَ فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أُخْبِرَ بِذَلِكَ فَقَالَ " قَتَلُوهُ قَتَلَهُمُ اللَّهُ أَلاَّ سَأَلُوا إِذْ لَمْ يَعْلَمُوا فَإِنَّمَا شِفَاءُ الْعِيِّ السُّؤَالُ إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيهِ أَنْ يَتَيَمَّمَ وَيَعْصِرَ " . أَوْ " يَعْصِبَ " .
মূসা ইবনু আব্দুর রহমান ......... আতা (রহঃ) থেকে জাবের (রাঃ)-র সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন এক সফরে যাওয়ার সময় আমাদের এক ব্যক্তির মাথা প্রস্তরাঘাতে জখম হয় এ অবস্হায় তার স্বপ্নদোষ হয় সে তার সাথীদের জিজ্ঞাসা করে, এ অবস্হায় আমি কি তায়াম্মুম করতে পারি? তারা বলেন, যেহেতু তুমি পানি ব্যবহারে সক্ষম তাই তোমাকে তায়াম্মুমের অনুমতি দেয়া যায় না। অতঃপর সে ব্যক্তি গোসল করার ফলে মৃত্যুমুখে পতিত হয়।এই সফর হতে প্রত্যাবর্তনের পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এই সংবাদ দেয়া হলে তিনি বলেনঃ তার সাথীরা তাকে হত্যা করেছে, আল্লাহ তাদের ধবংস করুন (তিনি রাগান্বিতভাবে এরূপ উক্তি করেন)। যখন তারা অবগত ছিল না-তখন জিজ্ঞাসা করল না কেন? কেননা অজ্ঞতার ঔষধ হল জিজ্ঞাসা করা। সে ব্যক্তি তায়াম্মুম করলেই যথেষ্ট হত তার আহত স্হানে ব্যান্ডেজ করে তার উপর মাসেহ্ করলেই চলত এবং শরীরের অন্যান্য স্থান ধুয়ে ফেললেইতো হত।
(আবু দাউদ ৩৩৬)
,

★প্রশ্নে উল্লেখিত ২য় বাক্য "প্রমান সহকারে জানো" মর্মে হাদীসে খুজে পাইনি।
,
(০২)
ক,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

أَخْبَرَنَا عُتْبَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ أَنْبَأَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِي خُطْبَتِهِ يَحْمَدُ اللَّهَ وَيُثْنِي عَلَيْهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ يَقُولُ " مَنْ يَهْدِهِ اللَّهُ فَلاَ مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْهُ فَلاَ هَادِيَ لَهُ إِنَّ أَصْدَقَ الْحَدِيثِ كِتَابُ اللَّهِ وَأَحْسَنَ الْهَدْىِ هَدْىُ مُحَمَّدٍ وَشَرَّ الأُمُورِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ وَكُلَّ ضَلاَلَةٍ فِي النَّارِ "

উতবা ইবনু আব্দুল্লাহ (রহঃ) ... জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার খূৎবায় বলতেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার যথাযোগ্য প্রসংসা এবং গুন বর্ণনা করতেন।

مَنْ يَهْدِهِ اللَّهُ فَلاَ مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْهُ فَلاَ هَادِيَ لَهُ إِنَّ أَصْدَقَ الْحَدِيثِ كِتَابُ اللَّهِ وَأَحْسَنَ الْهَدْىِ هَدْىُ مُحَمَّدٍ وَشَرَّ الأُمُورِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ وَكُلَّ ضَلاَلَةٍ فِي النَّارِ

“যাকে আল্লাহ হিদায়াত করেন তাকে গুমরাহ করার কেউ নেই, আর যাকে গুমরাহ করেন তাকে হিদায়াত করার কেউ নেই।  
উত্তম হাদীস আল্লাহর কিতাব; উত্তম হিদায়াত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হিদায়াত; নিকৃষ্টতর কাজ হচ্ছে বিদ’আত, প্রত্যেক বিদ’আতই হচ্ছে ভ্ৰষ্টতা।
 প্রত্যেক গুমরাহী হচ্ছে জাহান্নামে যাবার কারণ।
,
খ,

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَنْ كَذَبَ عَلَىَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ

উক্ত আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আমার নামে ইচ্ছাকৃত মিথ্যা বলে, সে যেন নিজের বাসস্থান জাহান্নামে বানিয়ে নেয়।” (বুখারী ১১০, ৬১৯৭, মুসলিম ৪)

গ,

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ أَلاَ لَيُذَادَنَّ رِجَالٌ عَن حَوْضِى كَمَا يُذَادُ الْبَعِيرُ الضَّالُّ أُنَادِيهِمْ أَلاَ هَلُمَّ فَيُقَالُ إِنَّهُمْ قَدْ بَدَّلُوا بَعْدَكَ فَأَقُولُ سُحْقًا سُحْقًا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, হাওয কওসরের পানি পান করার জন্য পিপাসার্ত লোক (কিয়ামতের) দিন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হবে। কিন্তু তাদেরকে নিরুদ্দেশ উট বিতাড়িত করার ন্যায় বিতাড়িত করা হবে। তিনি বলবেন, ওরা আমার দলের। (বা ওরা তো আমার উম্মত)। বলা হবে, আপনি জানেন না, আপনার বিগত হওয়ার পর ওরা কি নবরচনা করেছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বলবেনঃ দূর হও, দূর হও।
(মুসলিম ৬০৭)

حديث أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، يَزِيدُ فِيهِ فَأَقُولُ: إِنَّهُمْ مِنِّي، فَيُقَالُ إِنَّكَ لاَ تَدْرِي مَا أَحْدَثُوا بَعْدَكَ، فَأَقُولُ: سُحْقًا سُحْقًا لِمَنْ غَيَّرَ بَعْدِي
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) এর নিকট হতে এতটুকু অধিক বর্ণিত। [নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ] আমি তখন বলব যে এরা তো আমারই উম্মাত। তখন বলা হবে, তুমি তো জান না তোমার পরে এরা কি সব নতুন নতুন কীর্তি করেছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন তখন আমি বলব, দূর হও! আমার পরে যারা দীনের মাঝে পরিবর্তন এনেছ তারা আল্লাহর রহমত থেকে দূর হও।

সহীহুল বুখারী, পর্ব ৮১: সদয় হওয়া, অধ্যায় ৫৩, হাঃ ৬৫৮৪; মুসলিম, পর্ব ৪৩: ফাযায়েল, অধ্যায় ৯, হাঃ ২২৯০, ২২৯১

(০৩)
এ মর্মে কোনো আয়াত/হাদীসে খুজে পাইনি।

(০৪)
এ মর্মে কোনো আয়াত/হাদীসে খুজে পাইনি।
তবে এভাবে পেয়েছিঃ
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

 (وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى) 
‘‘একের বোঝা অন্যের উপর চাপানো হবে না।’’
আর কোন বহনকারী অন্য কারো গুনাহের ভার বহন করবে না।
[সূরা আল-আন‘আমঃ ১৬৪, বনী ইসরাঈলঃ ১৫, ফাতিরঃ ১৮, যুমারঃ ৩৯ এবং নাজমঃ ৩৮]

(০৫)
এ মর্মে কোনো আয়াত/হাদীসে খুজে পাইনি।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...