بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব-
জিলহজ মাসের
প্রথম দশ দিন অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ। এই দিনগুলো আমলের মাধ্যমে কাটানো উচিত। যিনি কুরবানী
দিবেন তার জন্য জিলহজ্জ মাসের চাঁদ উঠার পর থেকে চুল নখনা কাটা মুস্তাহাব। আর যিনি
কুরবানী দিবেন না, তার জন্য তা মুস্তাহাব নয়। তবে আশা করা যায়,
তিনি করলে সওয়াব পাবেন। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا رَأَيْتُمْ هِلَالَ ذِي الْحِجَّةِ، وَأَرَادَ أَحَدُكُمْ أَنْ يُضَحِّيَ، فَلْيُمْسِكْ عَنْ شَعْرِهِ وَأَظْفَارِهِ.
অর্থ : উম্মে
সালামা রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, যখন যিলহজ্বের দশক শুরু হবে
তখন তোমাদের মধ্যে যে কুরবানী করবে সে যেন তার চুল নখ না কাটে। (সহীহ মুসলিম,
হাদীস ১৯৭৭; জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫২৩)
এই হাদীসের
উপর ভিত্তি করে ফকীহগণ কুরবানীকারীর জন্য নখ-চুল না কাটাকে মুস্তাহাব বলেছেন।উপরোক্ত
হাদীস বর্ণনা করার পর 'ইলাউস সুনান' গ্রন্থ প্রণেতা
বলেন-
أقول : نهى النبى صلى الله عليه وسلم من أراد التضحية عن قلم الأظفار وقص الشعر فى العشر الأول، والنهى محمول عندنا على خلاف الأولى
'আমার অভিমত হলো, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কুরবানীর ইচ্ছাকারী ব্যক্তির জন্য জিলহজের প্রথম দশকে নখ কাটতে এবং চুল কাটতে নিষেধ
করেছেন। তারি নিষিদ্ধতা অনুত্তমের পর্যায়ভুক্ত। (ইলাউস সুনান : ১৭/২৬৪)
وقال الشامى: بعد نقل هذا الحديث: هذا محمول على الندب دون الوجوب بالإجماع (رد المحتار، باب العيدين، مطلب فى إزالة الشعر والظفر فى ذى الحجة-3/66)
'আল্লামা শামী উক্ত হাদিস উল্লেখ করার পর বলেন, ওলামায়ে
কেরামের সর্বসম্মতিক্রমে এর দ্বারা মুস্তাহাব উদ্দেশ্য, ওয়াজিব
নয়। (রদ্দুল মুহতার : ৩/৬৬)
তবে এ হুকুম
তাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে যারা যিলকদের শেষে নখ-চুল কেটেছে।অন্যথায় নখ-চুল বেশি
লম্বা হয়ে যাবে। যা সুন্নাতের খেলাফ। এ বিষয়ে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ أَنَسٌ وُقِّتَ لَنَا فِى قَصِّ الشَّارِبِ وَتَقْلِيمِ الأَظْفَارِ وَنَتْفِ الإِبْطِ وَ حَلْقِ الْعَانَةِ أَنْ لاَ نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً
হযরত আনাস বিন
মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের জন্য মোচ,
নখ কর্তন এবং বগলের চুল ও অবাঞ্ছিত লোম কাটার সময় নির্ধারণ
করে দেয়া হয়েছে। সেটি হল, যেন তা চল্লিশ দিনের উর্দ্ধে না যায়। (সহীহ
মুসলিম, হাদীস নং-২৫৮, সুনানে ইবনে মাজাহ,
হাদীস নং-২৯৫)
★প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনি ভাই/বোন!
এ বিধানটি কুরবানী
দাতাদের জন্য মুস্তাহাব আমল।পশুর গলায় ছুরি দেওয়ার আগ পর্যন্ত তারা এ আমল চালিয়ে যাবে।তবে
উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যে যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়,তারাও যদি কুরবানী দাতাদের সাথে সাদৃশ্যতা
অবলম্বন মূলক খালেছ নিয়তে এই আমল করে,তাহলে তারাও ছওয়াব পাবে,ইনশাআল্লাহ।সুতরাং আপনার পরিবারে যাদের পক্ষ থেকে কুরবানী দেওয়া হবে তাদের
জন্য উক্ত আমল মুস্তাহাব হবে আর পরিবারের অন্য সদস্যগন ছওয়াবের আশায় উক্ত আমল করতে পারেন,না করলে কোন ক্ষতি নেই।
এ দশদিনের অন্যান্য
আমল সম্পর্কে জানুনঃ
https://ifatwa.info/22382/