আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,045 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (34 points)
আসসালামু আলাইকুম,

শায়েখ, গতকাল বৃষ্টির কারনে আমাদের মসজিদে বসে স্বল্পমূল্যে তেল, ডাল, চিনি বিক্রয় করা হয়েছে, আমি জানতাম মসজিদের মধ্যে ক্রয় বিক্রয় করা হারাম। এখন এখানে মাসা'লা হবে কি? আবার আমাদের মসজিদের বিভিন্ন প্রজেক্ট যেমন ,নারিকেল বিক্রি, ফল বিক্রি, গাছ বিক্রি , মসজিদের পুরোনো ফ্যান বিক্রি এগুলোও মসজিদের মধ্যে বসে সব মুসল্লির সামনে বসে করা হয় যেন সবাই উপস্থিত থাকে সে জন্য। এক্ষেত্রেও বা বিধান কি?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। 

  জবাবঃ- 

  মসজিদ হলো আল্লাহ তাআলার ঘর। এটি ইবাদত-বন্দেগী স্থান। ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা-বাণিজ্যের স্থান নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন এবং মসজিদের ভেতর ক্রয়-বিক্রয়কারীর জন্য বদ দুআ করেছেন। 


   হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন- نهي رسول الله صلي الله عليه و سلم عن الشراء و البيع في المسجد  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১০৭৯)


হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হয়েছ। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- إِذَا رَأَيْتُمْ مَنْ يَبِيعُ أَوْ يَبْتَاعُ فِي المَسْجِدِ فَقُولُوا: لَا أَرْبَحَ اللهُ تِجَارَتَكَ অর্থাৎ তোমরা মসজিদে কাউকে বেচা-কেনা করতে দেখলে তাকে বল, আল্লাহ তোমার ব্যবসাকে অলাভজনক করুন। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৩২১) 


  ইমাম মালেক রাহ. সূত্রে বর্ণিত যে, আতা ইবনুল ইয়াসার রাহ.-এর পাশ দিয়ে মসজিদে ক্রয়-বিক্রয়কারী কোনো ব্যক্তি অতিক্রম করলে তিনি তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করতেন, তোমার সাথে কী আছে এবং তোমার উদ্দেশ্য কি? সে ব্যবসার উদ্দেশ্য প্রকাশ করলে তিনি তাকে বলতেন- عَلَيْكَ بِسُوقِ الدُّنْيَا. فَإِنَّمَا هذَا سُوقُ الآخِرَةِ অর্থাৎ তুমি দুনিয়ার বাজারে যাও; কেননা মসজিদ তো কেবল আখেরাতের বাজার। (মুআত্তা ইমাম মালেক, হাদীস ৬০১) আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৪৮; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮৭; ফাতহুল কাদীর ২/৩১২  


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!  


উপরোক্ত আলোচনার দ্বারা আমরা জানতে পারলাম যে, মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করা নিষেধ। আর মসজিদে দানকৃত পণ্য বা মসজিদের মালিকানাধীন বস্তুর হুকুম একই। অর্থাৎ এগুলোও মসজিদের মধ্যে ক্রয়-বিক্রয় করা নিষেধ। অবশ্য ইতিকাফকারীর প্রয়োজনীয় কেনাকাটার কেউ না থাকলে পণ্য উপস্থিত না করার শর্তে এবং অন্য কারো ক্ষতি না করে অতীব প্রয়োজনীয় কেনাকাটা বা তার আলাপ-আলোচনার অনুমতি রয়েছে।   


  অতএব, মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও মুসল্লীদের জন্য জরুরি হল, মসজিদে ক্রয়- বিক্রয় থেকে বিরত থাকা এবং মসজিদের মালিকানাধীন বা দানকৃত কোনো কিছু বিক্রি করতে চাইলে মসজিদের বাইরে গিয়ে বিক্রি করবে।তবে মসজিদের মধ্যে উক্ত ক্রয়-বিক্রয়ের ইলান করতে পারবে । (তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২২৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮৭; রদ্দুল মুহতার ২/৩১২)    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...