উত্তরঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
,
(০১) শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মাখরাজ সহকারে কুরআন ছহিহ শুদ্ধ ভাবে আদায় করা ওয়াজিব।
নামাজের ভিতর যদি মাখরাজ ভুল হয়ে যায়,তাহলে সাথে সাথে সঠিকভাবে পড়ে নিবেন।
,
কারন যদি সঠিক ভাবে না পড়া হয়,আর অর্থ বিকৃত হয়ে আল্লাহর শানের খেলাফ,বা কুরআনের খেলাফ কোনো অর্থ দাড়ায়!
তাহলে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।
তবে যদি এমন অর্থ বিকৃত না হয়,তাহলে নামাজ হয়ে যাবে।
,
(০২) নামাজের ভিতর ব্যাতিত অন্যান্য সময় দোয়া দরুদ, তেলাওয়াত ইত্যাদির ক্ষেত্রে শুধু ঠোঁট নাড়ালেও কোনো সমস্যা নেই।
,
তবে কুরআনের আয়াত হলে অবশ্যই মাখরাজ সহকারে আদায় করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
অর্থ বিকৃত না হলে কোনো সমস্যা নেই।
, অন্যান্য ক্ষেত্রে মাখরাজ গুন্নাহ ইত্যাদি ব্যাতিত আদায় করলে কোনো সমস্যা নেই।
,
(০৩) ব্রাশ করতে গিয়ে যিকির করার ক্ষেত্রে আপনি যিকির করতে পারেন।
চেষ্টা করবেন মাখরাজ মেইনটেইন এর জন্য।
,
তবে অর্থ বিকৃত না হলে কোনো সমস্যা নেই।
সেই সময় শুধু আল্লাহ আল্লাহ যিকির করবেন,তাহলে তো মাখরাজ আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা থাকেনা।
অনেক সহজ শব্দ এটা।
,
(০৪) হাঁচি দেওয়া এবং হাই তোলার সময় কুরআনের আদব ও তা'জিম রক্ষার্থে তেলাওয়াত বন্ধ রাখবেন।
তারপর যেখান থেকে থেমেছেন,তার কিছুটা আগে থেকে পড়বেন।
,
তবে যিকির চালিয়ে যেতে পারেন,এতে কোনো সমস্যা নেই।
তেলাওয়াত চালাকালীন হাঁচি দেওয়ার সময় আলহামদুলিল্লাহ বলতে হবেনা।
তবে যিকিরের সময় হাঁচি আসলে আলহামদুলিল্লাহ বলতে পারবেন।
,
★হাঁচি দেওয়ার সময় আলহামদুলিল্লাহ পড়ার কথা হাদীস শরীফে এসেছে।
হাই তোলার পর মুখে হাত দিয়ে মুখ বন্ধ করার কথা হাদিস শরীফে এসেছে।
হাই তোলার জবাবে
لاحول ولا قوة إلا بالله العلي العظيم
বলার কথা কোনো হাদিসেই নেই।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِذَا عَطَسَ أَحَدُكُمْ فَلْيَقُلْ: الحَمْدُ لِلَّهِ، وَلْيَقُلْ لَهُ أَخُوهُ أَوْ صَاحِبُهُ: يَرْحَمُكَ اللَّهُ، فَإِذَا قَالَ لَهُ: يَرْحَمُكَ اللَّهُ، فَلْيَقُلْ: يَهْدِيكُمُ اللَّهُ وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ “
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ হাঁচি দিলে সে যেন আলহামদুলিল্লাহ বলে এবং তার সঙ্গী মুসলমান ভাই অথবা বলেছেন সঙ্গী ব্যক্তি যেন “ইয়ারহামুকাল্লাহ” বলে জবাব দেয়। আর যখন জবাবদাতা হাঁচিদাতাকে “ইয়ারহামুকাল্লাহ” বলে, তখন হাঁচিদাতা যেন “ইয়াহদীকুমুল্লাহু ওয়াইয়ুছলিহু বালাকুম” বলে। {বুখারী, হাদীস নং-৬২২৪}
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا تَثَاءَبَ أَحَدُكُمْ، فَلْيُمْسِكْ بِيَدِهِ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَدْخُلُ»
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যখন তোমাদের কারো হাই আসে, তখন সে যেন নিজের হাত দ্বারা মুখ বন্ধ করে রাখে। নতুবা শয়তান তার মুখের ভিতরে চলে যায়। {মুসলিম, হাদীস নং-২৯৯৫}
★নামাজের ভিতর শুধু তিলাওয়াত রত অবস্থায় নয়,বরং সর্বাবস্থায় (চাই সেটা রুকুতে হোক,বা সেজদাতে হোক,বা বৈঠকে হোক) হাঁচির জবাব বা হাই তোলার জবাবে কিছুই বলা যাবেনা।
এতে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।
,
হাদিস শরিফে কঠিন ভাবে নিষেধ করা হয়েছে।
عن معاویۃ بن الحکم السلمي قال: صلیت مع رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم فعطس رجل من القوم، فقلت: یرحمک اللّٰہ، فرماني القوم بأبصارہم، فقلت: واثکل أمیَّاہ ما شأنکم تنظرون إليّ، فجعلوا یضربون بأیدیہم علی أفخاذہم، فعرضت أنہم یصمِّتوني … فلما صلی رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم قال: إن ہٰذہ الصلاۃ لا یحل فیہا شيء من کلام الناس ہٰذا۔ (سنن أبي داؤد، الصلاۃ / باب تشمیت العاطس في الصلاۃ رقم: ۹۳۰)
,
হাদিসের শেষাংশে রাসুল সাঃ বলেন যে এই জাতীয় শব্দ (হাঁচির জবাবে আলহামদুলিল্লাহ) নামাজের ভিতর বলা জায়েজ নয়।
,
والله أعلم بالصواب
.
উত্তর লিখনে
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ IOM