উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১) সুরা কাফিরুন এর শেষ আয়াত
لكم دينكم ولي دين
তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম, আরা আমার জন্য আমার ধর্ম। (আয়াত নং ৬)
হ্যাঁ এই আয়াত ধর্মের ব্যাপারে ইসলামের উদারতা নির্দেশ করে। মানে সবাই যার যার ধর্ম মানতে পারবে,ইসলামের কোনো সমস্যা নেই।
কাউকে চাপ দিয়ে কোনো ধর্মে আনা যাবেনা।
মহানবী (সা) স্পষ্ট করে দেন যে তাওহিদ ও শিরকের মধ্যে তথা একত্ববাদ ও অংশিবাদিতার মধ্যে আপোষ অসম্ভব। শিরক অর্থ মহান আল্লাহর সমকক্ষ বা তাঁরই সমতুল্য কিছু থাকার অস্তিত্বে বিশ্বাস করা। অন্যদিকে একত্ববাদের অর্থ হল ঠিক এর বিপরীত। একত্ববাদের দৃষ্টিতে শির্ক অত্যন্ত বড় বিভ্রান্তি ও জুলুম যা ক্ষমার অযোগ্য পাপ। তাই ইসলাম ও কাফিরদের পথ সম্পূর্ণ ভিন্ন ও বিপরীতমুখী। এই সুরার শেষ বাক্য 'এ অবস্থায় তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম এবং আমার জন্য আমার ধর্ম' অর্থাৎ কাফেরদের জোর করে মুসলমান বানানো যাবে না, তবে জিহাদও নিষিদ্ধ নয়; অন্য কথায়, কাফেরদের বলা হচ্ছে, যদি তোমরা আল্লাহর উপাসনা করতে ইচ্ছুক না হও, তবে তোমাদের যা ইচ্ছা কর, আর যেমন করবে তেমন ফলই পাবে। কিংবা বলা যায় আমাদের জন্য আমাদের কর্ম, আর তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম।
শিরক ও কুফরির মোকাবেলায় মহানবীর (সা) এই যে দৃঢ় প্রতিরোধ ও আপোষহীনতা তা থেকে বোঝা যায় ইসলামের মূল নীতিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন কোনো লেন-দেন বা আপোষ করা যাবে না। এ ধরনের অন্যায্য আবদারের ব্যাপারে যতই চাপ আসুক বা যত বারই যত লোভ দেখিয়েই বলা হোক না কেন বিন্দুমাত্র নমনীয়তাও দেখানো যাবে না, বরং কঠোর ও স্পষ্ট ভাষায় প্রত্যাখ্যান করতে হবে
(০২)
ইসলাম সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ কে কোনো ভাবেই অনুমোদন দেয়না।
যারা এই আয়াত ব্যবহার করে এমন কথা বলছেন,তারা ভুল করছেন, এই আয়াত থেকে সেটা কোনোভাবেই প্রমাণিত হয়না।
এই আয়াতের কথা হলো
তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম, আরা আমার জন্য আমার ধর্ম।
কিন্তু সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ এর মুল থিউরি হলো ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার।
এখানে এই আয়াতে শুধুমাত্র ধর্ম নিয়ে কথা বলা হয়েছে,যে সকলেই নিজ ইচ্ছা মত ধর্ম পালন করতে পারবে। রাষ্ট্র নিয়ে এই আয়াতে কোনো কথাই বলা হয়নি।
অন্যত্রে এসেছে,
কেউ নিজ ইচ্ছামত রাষ্ট্র চালাতে পারবেনা।
বরং রাষ্ট্র শুধুমাত্র আল্লাহর আইন অনুযায়ীই চলবে।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
ان الحكم إلا لله
আইন শুধু আল্লহরই চলবে,অন্য কোনো মানবরচিত আইন চলবেনা।
,
সমাজতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে নাস্তিকতার ওপর। ধর্মদ্রোহিতা ও আল্লাহকে অস্বীকার করা হল সমাজতন্ত্রের মূল বুনিয়াদ। তাদের ভাষায়-ধর্ম হল উন্নতির পথে বাধা। দোকান বন্ধ করলে, ব্যবসায় ক্ষতি হয়। হজ্ব আদায়ের দ্বারা শারীরিক দুর্বলতা আসে, কাজ-কর্মে বিঘ্ন ঘটে এবং সম্পদ নষ্ট হয়। ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেন দেনে হালাল হারাম বের করলে, অবৈধ উপার্জনের পথ রুদ্ধ করা হয়। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তথা মসজিদ, মাদরাসা, খানকাহ ইত্যাদি নির্মাণ করলে দেশের জমি নষ্ট করা হয়।
আল্লাহ তায়ালা হেফাজত করুন।
আমিন।
والله أعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ IOM