আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
416 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (65 points)
reshown by
আসসালামু 'আলাইকুম,

১,বালতিতে ক্ষুদ্র ইদুরের পায়খানা পড়েছে।সেক্ষেত্রে বালতির পানি পুরাটা নাপাক হবেনা বলে জানি।এক্ষেত্রে এও জানতাম যে পায়খানাটি ফেলে না দিলে তা অযুর জন্য ব্যবহার করা যাবেনা।কিন্তু যখম প্রসাব পড়বে এক ফোটা তখন? কারণ সেই প্রসাব ত মিক্সড হয়ে গেছে তা আলাদা করব কিভাবে?

উল্লেখ্য উভয় ক্ষেত্রে স্বাদ গন্ধ রঙ কিছুই চেঞ্জ হয়নি

২,আমি ও আমার স্ত্রী ওয়ালি ছাড়া বিয়ে করেছি। বিয়ের আগে আমি আহলে হাদীস চিন্তাধারার ছিলাম।যদিও গোড়া আহলে হাদীস নয়।যাইহোক, ওয়ালির মাস'য়ালায় আমি তখন বিলিভ করতাম যে বিয়ে হয়না।পরে যখন বিয়ের প্রস্তাব আসে  তখন থেকে আমি এইটা জানা শুরু করি,বিভিন্ন হানাফী ও আহলে হাদীস ভাইদের মত জানার চেষ্টা করি।কিন্তু এরপরেও আমার সন্দেহ কাটছিল না।কিন্তু এক পর্যায়ে যেয়ে আমি সিদ্ধান্ত নিই যা হবার হোক বিয়ে করব।এটা ছিল ডিটারমাইন্ড একটা সিদ্ধান্ত।

এরপর বিয়ের মজলিসে যখন আমার এই কথা বলি,তখন ওইখানকার যারা বিয়ে পড়াবে(এক বিখ্যাত মাদ্রাসার ত্বলীবুল ইলম) উনারা বললেন, এইসব স্ত্রী হানাফী, স্বামী আহলে হাদীস এসব ক্ষেত্রে আমাদের মুরুব্বিরা বিয়ে পড়াতে নিষেধ করেছেন।এরপর উনারা বলে আমাদের কনফেস করতে হবে  তখন আমি বললাম বেশ আমি হানাফী (উনারা যাতে বিয়ে পড়ায়)।এরপর বিয়ে পড়ানো হয়। কিন্তু তখনো আমার মনে সন্দেহ ছিল।আমি ভাবছিলাম পরে যেহেতু বাবা মার মাধ্যমে বিয়ে করে নিব যদিও বা সমস্যা হয় তখন বিয়ে ঠিক হয়ে যাবে।এবং কিছুভাইয়ের পরামর্শে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে বিয়ে করব কিন্তু শারীরিক সম্পর্ক করবনা,যেহেতু কনফিউশান থেকে যায়।এরপর বিয়ে পড়ানোর পর স্ত্রীর সাথে কিছুক্ষণ থাকার পর স্ত্রী যখন ওর বাসায় যায়,এরপর আমার মাঝে অনেক অপরাধবোধ কাজ করছিল। আমি ভাবতাম আমাদের বিয়ে অসম্পূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্থ,এজন্য স্ত্রীকেও দুয়া করতে বলতাম।পরবর্তীতে মাঝে মাঝে এই কনফিউশান তীব্র হত,বিভিন্ন লোকের কাছে ছুটাছুটি করতাম।মাঝে মাঝে দুএকবার দুয়াও করেছি যে বিয়ে যদি না হয় তাহলে আল্লাহ আমাদের ভেংগে দিন বিয়ে,আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন ফিতনাতিন নিসা বলে দুয়াও করেছি।এক্ষেত্রে নিসা অর্থ আমার স্ত্রীকে মিন করেছিলাম।যাইহোক পরবর্তীতে কিছু ভাইদের চিন্তাভাবনা দ্বারা প্রভাবিত হই,এবং হানাফী ফিক্বহের প্রতি ভালবাসা জন্মে।যদিও প্রথমে বিয়ের আসরে ওই বিয়ে পড়ানো ভাইদের দ্বারা বাধ্য ছিলাম হানাফী থাকতে,তখন এক প্রকার বাধ্য হয়ে মানতাম পরে ধীরে ধীরে ভালবাসা আসে।কিন্তু তবু মাঝে মাঝে আমার ও আমার স্ত্রী মনে হত বিয়ে হয়নি।ত এরপর নিজে নিজে ত্বহাবী শরীফের ইমাম ত্বহাবী রাহিঃ এর উক্ত মাস'য়ালায় হাদীসের তাহক্বীক এবং কিছু মুফতির ফতোয়া ও এক তুলনামূলক ফিক্বহ জানা ভাইএর কথায় বুঝতে পারি বিয়ে হয়েছে বর্তমানেআমি গোড়া হানাফী না হলেও আমি এই মাস'য়ালায় মোটামুটি ইয়াক্বীনের পর্যায়ে যে ওয়ালী ছাড়া বিয়ে হয়।যদিও মাঝে মাঝে মনে হয় যদি না হয় তখন কি হবে(উল্লেখ্য,আমি ওয়াসওয়াসার রোগী)।আরেকটা বিষয় আমার তালাক নিয়ে প্রচুর ওয়াসোয়াসা হত,তখন ভাবতাম তালাক হলেও ওই মতে আবার বিয়ে করব বা ফিউচারে অফিশিয়ালি বিয়ে যখন করব ঠিক হবে।

তুলনামূলক ফিক্বহ জানা ভাইটি আমার এই সন্দেহ থাকার কারণে বলেছিল যে ভাই,এটাত ইজতিহাদি বিষয়,আমিত মুজতাহিদ নই,যদি সম্ভব হয় বিয়ে নতুন করে করেনেন। আমি বললাম না এটা  কঠিন আর আমার জন্য মানসিক ভাবে অনেক কঠিন,আর যদি তার আগেই আমাদের কেউ মারা যায় তাহলে আমরাত জান্নাতে একে অপরকে পাব না।এরপর উনি বললেন বেশ তাহলে সমস্যা নেই বিয়ে ঠিক আছে,আর ইনফিউচারেত ফ্যামিলিগত ভাবে বিয়ে করবেন তখন বিয়ের চুক্তিটা রিনিউ হবে।

বর্তমানে আমি বিশ্বাস করি এই মাস'য়ালায় যে বিয়ে হয়ে যায় সমস্যা নেই,আমাদের সংসার তিন বছর,যদিও দুজন দুই বাড়িতে থাকি,এখনো বাবা মা জানেনা,আমরা কিছুদিন পর পর দেখা করি।আমাদের মাঝে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল সম্পর্ক আমরা উভয়ে দ্বীনের ব্যাপারে সিরিয়াস,ইলম অর্জনের চেষ্টা চলছে।আমরা একে অপরকে অনেক ভালবাসি,একে অপরকে ছাড়া কল্পনাও করতে পারিনা।

কিন্তু বিয়ে পড়ানোর সময় যেহেতু আমার চিন্তা এবং ওই মাস'য়ালায় বিশ্বাস অন্যরকম ছিল বিয়ে কি হয়েছে কিনা এই চিন্তা লাগে।
মোদ্দা কথা,আমি কনফিউশান অথবা অবিশ্বাস নিয়ে বিয়ে করেছিলাম,যেহেতু ওয়াসোয়াসা আছে তাই নিশ্চিত বলতে পারছিনা

৩, আমার অনেক ওয়াসোয়াসা,ত মাঝে মাঝে তালাকের কথা মাথায় আসলে তালাকের স্বপক্ষে মাথা নাড়লে কি তালাক হবে? উল্লেখ্য আমার ফুল ডিটারমিনেশান থাকেনা তালাকের,কিন্তু মাঝে মাঝে একটু মনমালিন্য হলে ক্ষুদ্র সময়ের জন্য মনে হয় যদিও কানে শোনা যায় মত এভাবে উচ্চারণ করিনি কখনো।

৪,একবার এই ভাই আমার সামনে বলছিল আমি এক হাম্বলী মেয়ে বিয়ে করব,তখন আমি হেসে বলছি(অথবা ঠোট নাড়াইছি,আমার কানে শোনা যায়নি সম্ভবত) যে আমারটাকে হাম্বলী বানায়া বিয়ে করেন।এতে কি কোনো সমস্যা হবে?

প্রসংগ দীর্ঘায়িত করার জন্য দুঃখিত
আমি অত্যন্ত পেরেশানির মাঝে আছি।যদি বিয়ে টা না হয় তখন আবার বিয়ের আগেই যদি স্ত্রী বা আমি মারা যায় তখন জান্নাতে কি পাব তাকে।আর সে অনেক দূরে থাকে এভাবে বিয়ে করা আবার অনেক মেন্টালি শকনেস কাজ করে।এই পেরেশানির কারণে অলরেডি ইবাদাতে মনের শক্তি কমে গেছে,কোনো কাজ করতে পারিনা,মন স্থির করতে পারিনা,ভয়ে কুকড়ে গেছি।
জাযাকুমুল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

জবাবঃ- 
(১)
বালতিতে ক্ষুদ্র ইদুরের পায়খানা বা প্রস্রাব যা কিছুই পড়ুক না কেন, সবই নাপাক বলে বিবেচিত হবে।
(২)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
পূর্বে অনেক ফাতাওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে,মাতাপিতার সম্মতি ব্যতীত কখনো কোনো মুসলমান যুবক যুবতীর জন্য কোর্ট মেরেজ করা সমীচীন হবে না,মঙ্গলজনক হবে না।মাতাপিতাকে না জানিয়ে বালিগ ছেলে মেয়ের বিবাহ নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।উনেক উলামায়ে কেরাম অভিভাবকহীন বিয়েকে বাতিল বলে মনে করেন।হানাফি মাযহাব মতে কু'ফু হিসেবে ছেলেটি মেয়ের সমকক্ষ বা বেশী মর্যাদার অধীকারী হলেই কেবল বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে।নতুবা মেয়ের অভিভাবকের অনুমতির উপর বিয়ে মওকুফ থাকবে।জানুন-https://www.ifatwa.info/994, কুফু সম্পর্কে জানতে https://www.ifatwa.info/780চার মাযহাবের অবস্থান দলীল সহ বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/1524


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনারা অভিভাবকের অনুমতি ব্যতিত যে বিবাহ করেছিলেন, সেই বিবাহ সংগঠিত হয়ে গেছে।
(৩)
তালাকের উচ্ছারণ ব্যতিত তালাক পতিত হবে না।

(৪)
আমারটারে হাম্বলি বানিয়ে বিয়ে করে নেন,একথার দ্বারা ঈমানে কোনো হবে না।তবে এরকম কথাবার্তা বলা কখনো উচিৎ নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
জবাব দেয়া হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...