বিয়ের আগে পাত্রপাত্রীর যে বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে তার মধ্যে ‘কুফু’ অন্যতম।
আরবি ‘কুফু’ শব্দের অর্থ সমতা, সমান, সাদৃশ্য, সমকক্ষ, সমতুল্য ইত্যাদি।
বিয়ের ক্ষেত্রে বর-কনের দ্বীনদারি, সম্পদ, বংশ, সৌন্দর্যতা সব কিছু সমান সমান বা কাছাকাছি হওয়াকে ইসলামী পরিভাষায় কুফু বলে।
স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের রুচি, চাহিদা, অর্থনৈতিক অবস্থান খুব বেশি ভিন্ন হলে সেখানে সুখী দাম্পত্যজীবন প্রতিষ্ঠা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। একজন উচ্চ শ্রেণীর ছেলেমেয়ের চাহিদা-রুচির সাথে একজন দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়ের রুচিবোধের মিল না থাকাটাই স্বাভাবিক।
আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহতুল কোয়েতিয়্যাহ নামক কিতাবের ৩৪নং ভলিউমের২৬৬নং পৃষ্টায় উল্লেখ আছে যে,
ففي النكاح: عرفها الحنفية بأنها مساواة مخصوصة بين الرجل والمرأة
কু'ফু বা কাফা'আত হচ্ছে পুরুষ মহিলার মধ্যকার এক বিশেষ ধরণের সমতা বিধান।
তবে সর্বজনগৃহীত কথা হচ্ছে কু'ফু শুধুমাত্র পুরুষের দিক দিয়েই বিবেচ্য। মহিলার দিক দিয়ে বিবেচ্য হবে না। অর্থাৎ-পুরুষের থেকে মহিলা যতই এবং যেদিকেই নিম্নমানের হোক না কেন, এক্ষেত্রে কু'ফু বা সমতা বিধান প্রযোজ্য হবে না।বরং শুধুমাত্র যদি মহিলা থেকে পুরুষ নির্দিষ্ট কয়েক প্রকারে নিম্নশ্রেণীর হয় তাহলে সেক্ষেত্রে সমতা বিধান প্রযোজ্য হবে।
★ অত্যন্ত হীন-নীচ বংশের পুরুষের নিকট বিবাহ দেওয়া চলিবে না উচ্ছ ভদ্র-অভিজাত বংশীয় মেয়ে। ব্যবসায়ীর মেয়ে কৃষিজীবী ছেলেকে বিবাহ করিলে রুচি ও আচার-আচরণ এবং সাংসারিক কাজ-কামের পার্থক্য, পারিবারিক নিয়ম-নীতি ও ধরণ-ধারণের পার্থক্যের কারণে বিশেষ অসুবিধা অমিল ও মানসিক অশান্তির সৃষ্টি হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
এই কারণেই ইহা পছন্দ করা হয় নাই।
কুফু মেনে বিবাহ করতে বলা হয়েছে।
কিন্তু যদি এই রূপ (কুফু না মেনেই) বিবাহ হয়, তবে বিবাহ যে ছহীহ হইবে তাহা নিঃসন্দেহ।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
সহীহ : বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)
,
★সুতরাং মেয়ের বংশ ছেলের তুলনায় অনেক উঁচু হলে সেই বিবাহ না হওয়াই ভালো।
কারন এতে ভবিষ্যত জীবনে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
তবে এমন বিবাহ নাজায়েজ নয়,এমন বিবাহ হলে জায়েজ আছে।
,
বিস্তারিত জানুনঃ