বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-
১।আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা পরকালে মুসলমানদেরকে প্রতিধান সরূপ জান্নাত দিবেন।এবং অমুসলিমদদেরকে প্রতিধান স্বরুপ জাহান্নাম দিবেন।কুফুর হচ্ছে জাহান্নামের আলামত। তাছাড়া ছোট-বড় গোনাহগুলোও হচ্ছে সাময়িক জাহান্নামের আলামত।
কিন্তু এগুলা নিশ্চিত কোনো আলামত বা প্রমানাদি নয়,কেননা আল্লাহ তা'আলা ইচ্ছা করলে নিজ কৃপায় পাহাড় সমপরিমাণ গোনাহকেও মাফ করে দিতে পারেন।
এছাড়া অন্যান্য কোনো অভ্যাসগত বা প্রাকৃতিক বিষয়াদি জাহান্নামের আলামত হতে পারে না।তবে হ্যা জাহান্নামে যেভাবে মানুষগণ বসবাস করে ঠিক সেভাবে পৃথিবীতেও কোনো মানুষ বসবাস করতে পারে।যেমন জাহান্নামে কাল পোষাক পরিধান করানো হবে,এবং তথাকার অধিবাসিগণ নিখুঁত কাল হবে।এমনটাই বিভিন্ন বর্ণনা দ্বারা প্রমানিত হয়।তাই বলে কি যেই পৃথিবীতে কাল হয়ে জন্মাবে বা কাল রং/কাপরকে পছন্দ করবে, সেটাই তার জাহান্নামের আলামত হয়ে যাবে।
না তা কখনই সম্ভব হতে পারে না।
২। জাহান্নামের অধিবাসিগণকে উপূর করে শুয়ানো হবে।এটা তাদেরকে তথায় শাস্তিসরূপ করা হবে।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাদেরকে ডান কাদে শয়ন করার পরামর্শ দিয়েছেন।কেননা তা মানব শরীরের জন্য অত্যান্ত ফায়দাজনক।এবং এর বিপরীত শয়ন মানবশরীরের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর।
দেখুন একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাঃ উপূর হয়ে শয়ন কারীকে কিভাবে ধমক দিয়েছেন।
ﻳَﻌِﻴﺶُ ﺑْﻦُ ﻃِﻬﻔَﺔَ ﺍﻟﻐﻔﺎﺭﻱ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ ﻗَﺎﻝَ : ﺿﻔﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻴﻤﻦ ﺗﻀﻴﻔﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺴﺎﻛﻴﻦ ( ﺃﻱ ﻧﺰﻟﺖ ﻋﻠﻴﻪ ﺿﻴﻔﺎ ) ﻓﺨﺮﺝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻲ ﺍﻟﻠﻴﻞ ﻳﺘﻌﺎﻫﺪ ﺿﻴﻔﻪ ﻓﺮﺁﻧﻲ ﻣﻨﺒﻄﺤﺎ ﻋﻠﻰ ﺑﻄﻨﻲ ﻓﺮﻛﻀﻨﻲ ﺑﺮﺟﻠﻪ ﻭﻗﺎﻝ ﻻ ﺗﻀﻄﺠﻊ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻀﺠﻌﺔ ﻓﺈﻧﻬﺎ ﺿﺠﻌﺔ ﻳﺒﻐﻀﻬﺎ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰ ﻭﺟﻞ . ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ : ﻓَﺮَﻛَﻀَﻪُ ﺑِﺮِﺟْﻠِﻪِ ﻓَﺄَﻳْﻘَﻈَﻪُ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻫَﺬِﻩِ ﺿِﺠْﻌَﺔُ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﺭﻭﺍﻩ ﺃﺣﻤﺪ : ﺍﻟﻔﺘﺢ ﺍﻟﺮﺑﺎﻧﻲ 14/244 .245- ﻭﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﺭﻗﻢ 2798 ﻁ . ﺷﺎﻛﺮ ﻭﺭﻭﺍﻩ ﺃﺑﻮﺩﺍﻭﺩ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻷﺩﺏ ﻣﻦ ﺳﻨﻨﻪ ﺭﻗﻢ 5040 ﻁ . ﺍﻟﺪﻋﺎﺱ ﻭﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺠﺎﻣﻊ 2270 - 2271
তরজমাঃ
ইয়াঈশ ইবনে ত্বিহাফাতাল আনসারী তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করে বলেনঃআমি একবার রাসূলুল্লাহ সাঃ এর মেহমান হলাম,নবীজী সাঃ রাত্রে মেহমানদের খোজ-খবর নেওয়ার জন্য বের হলেন।এবং আমাকে মসজিদে উপূর হয়ে (পেঠের উপর ভর দিয়ে)শুতে দেখতে পেলেন।হঠাৎ একব্যক্তি আমাকে পা দিয়ে নাড়া দিল,এবং বললঃ"ও হে তুমি এমন ককরে শয়ন করিও না।কেননা এটা এমন এক শয়ন পদ্ধতি যাকে আল্লাহ তা'আলা অপছন্দ করেছেন।জামে-তিরমিযি-২৭৯৮।
এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি,
উপূর হয়ে শয়ন কারীকে রাসূলুল্লাহ সাঃ কঠোর ধমক দিয়েছেন।যাতে করে অপ্রয়োজনে ইচ্ছাকৃতভাবে উপূর হয়ে কেউ শয়ন না করে।এর অর্থ এই নয় যে, যে ব্যক্তি উপূর হয়ে শয়ন করবে,আল্লাহ তা'আলা তাকে জাহান্নামে প্রেরণ করবেন।
৩।
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ
"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় " উপূর হয়ে ঘুমের হুকুম সম্পর্কিত বিবরণ এভাবে এসেছে,
ومن النوم المكروه: نوم الرجل منبطحا على وجهه فإنها ضجعة يبغضها الله تعالى،
তরজমাঃ
মাকরুহ ঘুম সমূহ থেকে একটি ঘুম। হচ্ছে,উপূর হয়ে(তার পেঠের উপর ভড় দিয়ে)ঘুমানো,কেননা এটা এমন একটা ঘুম যাকে আল্লাহ তা'আলা অপছন্দ করে থাকেন।(৪২/১৭)
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, Iom.