আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
90 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (53 points)
reshown by
১.আমার নিজের মামা এবং আম্মুর চাচাতো ভাই একসাথে এসেছিলেন। যেহেতু আম্মুর চাচাতো ভাই মামা হলেও নন-মাহরাম,তাই আমি দরজা আটকে দিই। আমার মামা খুঁজছিল কিন্তু আমি বের হইনি। এতে আম্মু অনেক ক্ষুব্ধ হয়েছে।
আমি কি কাজটা ঠিক করেছি??


২.পর্দা করার কারণে আব্বু আম্মু দুজনেই আমার উপর রাগ করে। কোনো ত্রুটি দেখলেই পর্দা করা নিয়ে কথা শোনায়। আমার বোন পর্দা করে চাচ্ছে কিন্তু আমার মতো হয়ে যাবে,এই কথা বলে এক্ষেত্রে আমি কি করতে পারি??
সবকিছু তো একদম ঠিকঠাক করে করা আমার পক্ষে সম্ভব না ।অথচ আমার জন্য তারা আমার বোনকে পর্দা করতে বাঁধা দিচ্ছে। আমি কি গুনাহগার  হবো??

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم  


আল্লাহ তা'আলা মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা এবং তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন।তাদের অবাধ্য হওয়াকে হারাম ঘোষনা দিয়েছেন।এ বিষয়ে সমস্ত উলামায়ে কেরাম ঐক্যমত পোষণ করে থাকেন।

মাতাপিতার সাথে উত্তম ব্যবহারের মনোভাব রাখার সাথে সাথে নেকী উপার্জনের আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন করার জন্য প্রশ্নকারী ভাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

আল্লাহর বিধি-বিধান দুই প্রকার যথাঃ-(১)ফরয/ওয়াজিব/সুন্নতে মু'আক্কাদা(২)এবং নফল/ মুস্তাহাব।

প্রথম প্রকারকে তরক করলে গোনাহ হবে।সুতরাং প্রথম প্রকারের বিধি-বিধানকে তরক করার জন্য মাতাপিতা সহ কারো আদেশকে মান্য করা যাবে না।কেননা হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।

ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ
আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)

মসজিদে জামাতের সাথে নামায পড়া ওয়াজিব বা সুন্নতে মু'ক্বাদা। সুতরাং কোনো প্রকার ক্ষতির আশংকা ব্যতীত মাতাপিতা যদি তার সুস্থ সবল বালেগ সন্তানকে মসজিদে যেতে বারণ করে, তাহলে এক্ষেত্রে মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা যাবে না।ঠিকতেমনিভাবে সন্তান ফরয হজ্বে যেতে চাইলে যদি মাতাপিতা বাধা প্রদান করে তাহলে এক্ষেত্রেও তাদের আদেশকে মানা যাবে না।

ইমাম বোখারী রাহ হাসান বসরী রাহ থেকে বর্ণনা করেন,

" إن منعتْه أمُّه عن العشاء في الجماعة شفقة:لم يطعها "
যদি মা তার সন্তানের কল্যাণ কামনায় তাকে অন্ধকারে এশার জামাতে যেতে বাধা প্রদান করে,তাহলে এক্ষেত্রে মায়ের আদেশকে মানা যাবে না।(সহীহ বোখারী-১/২৩০)

ইমাম আহমদ রাহ কে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো,যার পিতা তাকে মসজিদে গিয়ে নামায পড়তে বারণ করে।ইমাম আহমদ রাহ প্রতিউত্তরে বললেন,

" ليس له طاعته في الفرض "
আল্লাহর ফরয বিধানের উল্টো পিতার আদেশকে মান্য করা যাবে না।(গেযাউল আদাব ফি শরহে মনযুমাতিল আদাব-১/৩৮৫)

শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন

نصوص أحمد تدل على أنه لا طاعة لهما في ترك الفرض ،
ইমাম আহমদ রাহ এর মতামত এ কথার উপর দাবী রাখে যে,ফরয তরকের বেলায় মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা যাবে না।সুতরাং মাতাপিতার আদেশের  ভিত্তিতে জামাত তরক করা যাবে না।এবং হজ্বকে দেড়ীতে আদায় করা যাবে না।(আল মুসতাদরাক আ'লা মাজমুয়িল ফাতাওয়া-৩/২১৭)
,
বিস্তারিত  জানুন 
.
(০১)
★★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার মায়ের চাচাতো ভাই যেহেতু আপনার জন্য গায়রে মাহরাম, তাও তার সামনে আপনার পর্দা করা ফরজ। 
আপনার কাজটি সঠিক।
এই বিষয়ে আপনার মায়ের মনক্ষুন্ন হওয়া জায়েজ নেই। 
,
তবে তার সাথে কথা বলার বিশেষ প্রয়োজন হলে আপনি পর্দার আড়াল থেকে প্রয়োজনীয় কথা বলতে পারবেন।   
,
(০২)
এই বিষয়ে আপনার বাবা মা মেনে নিতে  না পারলে কোনো সমস্যা নেই।
আপনি পূর্ণ পর্দা চালিয়েই যাবেন।
আপনার বোনকে পর্দা করতে বাঁধা দিলে আপনি নন,বরং তারাই গুনাহগার হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...