আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
173 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
আসসালামু আ'লাইকুম,
প্রশ্ন ১: এক ব্যক্তি ফার্মগেট থেকে টেম্পুতে করে বাসায় ফিরবে। কিন্তু দীর্ঘ লাইন থাকায় সে ব্যক্তি যেদিক থেকে টেম্পু আসে সেখানে এগিয়ে গিয়ে আগে আগে উঠে পড়ে। লকডাউন কার্যকর হবার পর এ যাবৎকালে সম্ভবত ৬-৭ বার সে এভাবে লাইন না মেনে উঠেছে। কেউ কিছু বলেনি। কিন্তু এবার ওঠার পরপরই হেল্পার তাকে বলল যে, বাকি যাত্রীরা তাকে নামিয়ে দিবে, যেতে দিবে না। তবু উক্ত ব্যক্তি বসে রইল। কারণ সে আগেও এভাবেই গিয়েছে। কেউ অভিযোগ তোলেনি।
কিন্তু এবার কয়েকজন যাত্রী তাকে নেমে যেতে বলল। লাইনে দাঁড়িয়ে তারপর ওঠার দাবি জানালো। জবাবে ব্যক্তি জানালো যে সে মোড় থেকে আগেই উঠেছে। এবং টেম্পুচালক বা হেল্পারও তাকে উঠতে দিয়েছে। তবু যাত্রীরা চিল্লাপাল্লা করলে ব্যক্তি কোনো প্রত্যুত্তর দেয়নি। আল্লাহর জন্য চুপ থেকেছে।
এখন যাত্রীদের দাবি হলো, সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে আছে সময় ব্যয় করে। কাজেই কেউ অন্যত্র থেকে আগে আগে উঠে থাকলে তা প্রযোজ্য না এবং উঠে থাকলে নেমেও যেতে হবে।
আর আলোচ্য ব্যক্তির লাইন অনুসরণ না করার পিছে কারণ হলো
- বাসায় তাড়াতাড়ি ফেরা। ইল্ম অর্জন/পরিবারকে যথাযথ সময় দেবার জন্য।
- সে টেম্পুতে ভাড়া দিয়েই যাতায়াত করে। কারো চেয়ে কম দেয় না।
- লাইন লোকেরা তৈরি করেছে। এটা রাষ্ট্রীয় কোনো আইন না বা আনুষ্ঠানিকভাবে জারিকৃত কিছুও না। নিজেদের মতো তারা যাতায়াতের সুবিধার্থে তৈরি করেছে। আর গাড়িতে উঠতে গেলে গাড়ি কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন যাত্রীদের না। যেহেতু গাড়ি কর্তৃপক্ষ উঠতে দিয়েছে তাহলে এখানে যাত্রীদের অধিকার হরণ হয়েছে কিনা। (তবে হেল্পার শুধু এটুকু বলেছিল যে, বাকি যাত্রীরা যেতে দিবে না। কিন্তু এ কথা মুখে বললেও তারা ঠিকই গাড়িতে উঠিয়েছে। অনুমতি না থাকলে উঠতেই দেওয়া উচিৎ নয়।)

উক্ত ব্যক্তি পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে কাজটি করেছে। যাত্রীরা এরকম বাধা দিবে জানলে লাইনই অনুসরণ করত কিংবা এই রাস্তা দিয়েই যেত না। ভবিষ্যতেও এমন করবে না। এখন প্রশ্ন হলো তিনপক্ষের(ব্যক্তি, যাত্রীরা এবং টেম্পুপক্ষ) মধ্যে এক/একাধিক পক্ষ বান্দার হক জেনে/ না জেনে নষ্ট করেছে। সেই পক্ষটি কে/কারা? যদি হয়ে থাকে তাহলে ক্ষমা পাবার জন্য করণীয় কী?
প্রশ্ন ২: নাম গোপন রেখে নিজের/অন্য কারও গুনাহ বর্ণনা করলে সাক্ষী তৈরি হবে কি?

1 Answer

0 votes
by (589,200 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/9645 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِينًا
যারা বিনা অপরাধে বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা অবশ্যই মিথ্যা অপবাদ এবং স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে। (সূরা ৩৩ আহযাব: ৫৮)

আবূ মুসা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
وَعَنْ أَبي مُوسَى رضي الله عنه قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّ المُسْلمِينَ أَفْضَلُ ؟ قَالَ: «مَنْ سَلِمَ المُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! সর্বোত্তম মুসলিম কে?’ তিনি বললেন, “যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমরা নিরাপদ থাকে।” (বুখারী:৯, মুসলিম: ৪২, তিরমিযী, নাসাঈ, মুছান্নাফ সহ)

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত।
عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم قال المسلم من سلم المسلمون من لسانه ويده والمهاجر من هجر ما نهى الله عنه
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সে-ই স(প্রকৃত) মুসলিম, যার জিহবা ও হাত হতে সকল মুসলিম নিরাপদ এবং সে-ই প্রকৃত মুহাজির, আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা যে ত্যাগ করে।(বুখারী:১০; মুসলিম ১/১৪ হাঃ ৪০, আহমাদ: ৬৭৬৫)

আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত।
عن أبي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من كان يؤمن بالله واليوم الآخر فلا يؤذ جاره ومن كان يؤمن بالله واليوم الآخر فليكرم ضيفه ومن كان يؤمن بالله واليوم الآخر فليقل خيرا أو ليصمت
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয় এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের উপর ঈমান রাখে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন ভালো কথা বলে নতুবা চুপ থাকে। (বুখারী:৫৬৭২, মুসলিম:৪৭, বাইহাকী:১৬১৫৩, মুসতাদরাক, মু’জামুল আওসাত, সুনানে আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিযী, আহমাদ, মুছান্নাফ সহ অন্যান্য)

https://www.ifatwa.info/1197 নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে, 
নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,' যে ব্যক্তি ওই বস্তুর দিতে অগ্রসর হল, যে বস্তুর দিকে কোনো মুসলমান অগ্রসর হয় নাই,তাহলে ওই বস্তু ওই ব্যক্তির।(যে ওই দিকে প্রথম অগ্রসর হয়েছে।)আবু-দাউদ:৪/২৬৪ হাদীস নং২৯৪৭)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
উক্ত ব্যক্তির জন্য লাইন অতিক্রম করে আগে আগে গাড়িতে উঠা জায়েয হবে না। কেননা এখানে বান্দার হক নষ্ট হচ্ছে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (20 points)
জাঝাকাল্লাহ, পোস্টের কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়ত ভুলে গেছেন। জানিয়ে দিবেন আশা করি। 

 "তাহলে ক্ষমা পাবার জন্য করণীয় কী?
প্রশ্ন ২: নাম গোপন রেখে নিজের/অন্য কারও গুনাহ বর্ণনা করলে সাক্ষী তৈরি হবে কি?"

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...