আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
600 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (61 points)
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

১) ভূমিকম্প হলে অনেকে আযান দেয়। এটা কি সুন্নাহসম্মত?

২) জন্মের পর বাচ্চাদের কানে আযানের পর ইকামাত দেওয়া কি সুন্নাহসম্মত?

৩) মসজিদের মাইকে আযান দিতে হলে সাধারণত মসজিদের ভিতর থেকেই আযান দিতে হয়। এতে মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে আযান দেওয়ার সুন্নাহর খেলাপ হয় না?

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
মসিবত ইত্যাদি সময়ে নামাজ পড়ার কথা সুন্নাহ থেকে প্রমানীত।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ، أَخْبَرَنِي مَنْ، أُصَدِّقُ وَظَنَنْتُ أَنَّهُ يُرِيدُ عَائِشَةَ قَالَ كُسِفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قِيَامًا شَدِيدًا يَقُومُ بِالنَّاسِ ثُمَّ يَرْكَعُ ثُمَّ يَقُومُ ثُمَّ يَرْكَعُ ثُمَّ يَقُومُ ثُمَّ يَرْكَعُ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ ثَلاَثُ رَكَعَاتٍ يَرْكَعُ الثَّالِثَةَ ثُمَّ يَسْجُدُ حَتَّى إِنَّ رِجَالاً يَوْمَئِذٍ لَيُغْشَى عَلَيْهِمْ مِمَّا قَامَ بِهِمْ حَتَّى إِنَّ سِجَالَ الْمَاءِ لَتُصَبُّ عَلَيْهِمْ يَقُولُ إِذَا رَكَعَ " اللَّهُ أَكْبَرُ " . وَإِذَا رَفَعَ " سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ " . حَتَّى تَجَلَّتِ الشَّمْسُ ثُمَّ قَالَ " إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لاَ يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ يُخَوِّفُ بِهِمَا عِبَادَهُ فَإِذَا كُسِفَا فَافْزَعُوا إِلَى الصَّلاَةِ " .

উসমান ইবন আবু শায়বা (রহঃ) .......... আয়শা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী করীম (সা) এর যুগে সূর্যগ্রহণ হলে তিনি লোকদের সাথে নামায (কুসুফ) আদায়কালে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন,,,, তিনি আরও বলেনঃ যখন সূর্য ও চন্দ্রগ্রহন শুরু হবে তখন তোমরা দ্রুত নামায আদায়ে মনোনিবেশ করবে। 
(আবু দাউদ ১১৭৭)

وفي رواية: "فصلُّوا حتى يُفرِّج اللهُ عنكم"، معناه: بادِرُوا بالصلاة وأسرِعوا إليها؛ حتى يزولَ عنكم هذا العارضُ الذي يُخافُ كونُه مُقدِّمةَ عذابٍ" [شرح النووي(6/203)]
সারমর্মঃ
অন্য এক রেওয়ায়েতে এসেছেঃ
তোমরা নামাজ পড় যতক্ষন পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা উক্ত আযাব থেকে স্বস্তি না দেয়।

ভূমিকম্প, ঝড় বৃষ্টি,তুফান,অন্ধকার সহ অন্যান্য আসমানী বালা মসিবতের সময় আযান দেওয়া সুন্নাহ দ্বারা প্রমানীত নয়।
সুতরাং কেহ যদি এটাকে সুন্নাত বা জরুরী মনে করে করে,তাহলে তাহা ভুল হবে।
কেরামগন বলেছেন তাহলে এটি বিদ'আত হবে।

فی المواضع التی یندب لھا الاذان فی غیرالصلوۃ قالوا یسن للمھموم ان یامر غیرہ ان یؤذن فی اذنہ فانہ یزیل الھم۔ (فتاوی شامی 3/63)۔   

সারমর্মঃ
নামাজ ব্যাতিত যেসব ক্ষেত্রে আযান  দেওয়ার বিধান এসেছে,অনেকে বলেছেন যে সেটি পেরেশানী দূরকরনের জন্য সুন্নাত।

(০২)
হ্যাঁ, এটি সুন্নাত। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ أَبِي رَافِعٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ : رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - أَذَّنَ فِي أُذُنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا - حِينَ وَلَدَتْهُ فَاطِمَةُ بِالصَّلَاةِ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ ، وَأَبُو دَاوُدَ . وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ : هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ 

আবূ রাফি' (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ হাসান ইবনু ‘আলী (রাঃ)-কে যখন ফাতিমা (রাঃ) প্রসব করলেন, তখন আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তার কানে সলাতের আযানের ন্যায় আযান দিতে দেখেছি। 
ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।

তিরমিযী ১৫১৪, আবূ দাঊদ ৫১০৫, ইরওয়া ১১৭৩, মুসনাদে আহমাদ ২৩৮৬৯, শু‘আবুল ঈমান ৮৬১৭। 

(০৩)
আযানের ক্ষেত্রে আসল উদ্দেশ্য  হলো আওয়াজ উঁচু করা,এবং দূর পর্যন্ত আওয়াজ পৌছানো।
এই জন্য যখন মাইকে আযান দেওয়া হয়,তখন সাধারণত হর্ন মসজিদের উপরে স্থাপন করা থাকে।
তাই মসজিদের ভিতরে আযান দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা  নেই।
যেই কিতাব গুলোতে মসজিদে ভিতরে আযান দেওয়া মাকরুহ বলা হয়েছে,সেটি ঐ সময়ে,যখন মাইক ছাড়া আযান দেওয়া হবে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৩/১৭১)

واعلم أن الأذان لا یکرہ في المسجد مطلقًا کما فہِم بعضہم من بعض العبارات الفقہیۃ وعمومہ ہٰذا الأذان؛ بل مقیدًا بما إذا کان المقصود إعلام ناس غیر حاضرین کما في رد المحتار، وفي السراج: وینبغي للمؤذن أن یؤذن في موضع یکون أسمع للجیران ویرفع صوتہ، ولا یجہد نفسہ؛ لأنہ یتضرر - إلی قولہ - في الجلابي: أنہ یؤذن في المسجد أو ما في حکمہ لا في البعید عنہ۔ قال الشیخ: قولہ في المسجد صریح في عدم کراہۃ الأذان في داخل المسجد وإنما ہو خلاف الأولی إذا مست الحاجۃ إلی الإعلان البالغ وہو المراد بالکراہۃ المنقولۃ في بعض الکتب فافہم۔ (إعلاء السنن، أبواب الجمعۃ / باب التأذین عند الخطبۃ ۸؍۸۶-۸۷ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
সারমর্মঃ
মসজিদের ভিতরে আযান দেওয়া সর্বদায় মাকরুহ নয়।,,,,
মুয়াজ্জিনের জন্য উচিত হলো এমন জায়গায় আযান দেওয়া,যাতে আশেপাশের  লোক জন শুনতে পারে।
এবং আওয়াজ উঁচু হয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...