ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
সদকায়ে জারিয়া হচ্ছে-কোন জিনিষ আল্লাহর রাস্তায় ওয়াকফ করে দেওয়া,ওয়াকফ করা ব্যতীত সদকায়ে জারিয়া হবে না। যেমন হাদীসের মধ্যে এসেছে..................
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত,
ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﺇﺫﺍ ﻣﺎﺕ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﺍﻧﻘﻄﻊ ﻋﻨﻪ ﻋﻤﻠﻪ ﺇﻻ ﻣﻦ ﺛﻼﺛﺔ : ﺇﻻ ﻣﻦ ﺻﺪﻗﺔ ﺟﺎﺭﻳﺔ، ﺃﻭ ﻋﻠﻢ ﻳﻨﺘﻔﻊ ﺑﻪ، ﺃﻭ ﻭﻟﺪ ﺻﺎﻟﺢ ﻳﺪﻋﻮ ﻟﻪ
তরজমা- তিনি বলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “মানুষ মরে গেলে তার আমল বন্ধ হয়ে যায়; তবে তিনটি আমল ব্যতীত: সদকায়ে জারিয়া, উপকারী ইলম কিংবা নেক সন্তান; যে তার জন্য দুআ করে।”[সহিহ মুসলিম (১৬৩১)
ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসেরর ব্যখ্যায় বলেনঃ
" ﺍﻟﺼﺪﻗﺔ ﺍﻟﺠﺎﺭﻳﺔ ﻫﻲ ﺍﻟﻮﻗﻒ " ﺍﻧﺘﻬﻰ .
অর্থ্যাৎ- সদকায়ে জারিয়া দ্বারা উদ্দেশ্য হল ওয়াকফ।(আল-মিনহাজ্ব-১১/৮৫)
খতীব শারবিনী রাহ বলেন
" ﺍﻟﺼﺪﻗﺔ ﺍﻟﺠﺎﺭﻳﺔ ﻣﺤﻤﻮﻟﺔ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻮﻗﻒ ﻛﻤﺎ ﻗﺎﻟﻪ ﺍﻟﺮﺍﻓﻌﻲ ، ﻓﺈﻥ ﻏﻴﺮﻩ ﻣﻦ ﺍﻟﺼﺪﻗﺎﺕ ﻟﻴﺴﺖ ﺟﺎﺭﻳﺔ .
উলামায়ে কেরামদের নিকট সদকায়ে জারিয়া দ্বারা ওয়াকফ-ই উদ্দেশ্য,যেমনটা ইমাম রাফেয়ী বলেছেন।এবং অন্যান্য সদকা জারিয়া নয়।(মুগনিল-মুহতাজ-৩/৫২২)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সদকায়ে জারিয়ার জন্য ওয়াকফ করা শর্ত। সুতরাং ওয়াকফ করা ব্যতীত আর কোনো সদকাহ বা দান সদকায়ে জারিয়া হবে না। তাই আমরা বলব, মসজিদে টাকা পয়সা দান করা অধিক সওয়াবের কাজ হলেও তা সদকায়ে জারিয়া হবে না।
ভিক্ষাবৃত্তি এবং ইসলাম
ভিক্ষাবৃত্তি কাদের জন্য জায়েয আর কাদের জন্য জায়েয নয়?এ সম্পর্কে যৎ সামান্য হাদীস উল্লেখযোগ্য। নিম্নে প্রদত্ত হল।
হযরত ক্বাবিসাহ ইবনে মুখারিক্ব রাঃ থেকে বর্ণিত,তিনি বলেনঃ
1837 - «عَنْ قَبِيصَةَ بْنِ مُخَارِقٍ قَالَ: تَحَمَّلْتُ حَمَالَةً، فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - أَسْأَلُهُ فِيهَا، فَقَالَ: " أَقِمْ حَتَّى تَأْتِيَنَا الصَّدَقَةُ، فَنَأْمُرَ لَكَ بِهَا "، ثُمَّ قَالَ: " يَا قَبِيصَةُ إِنَّ الْمَسْأَلَةَ لَا تَحِلُّ إِلَّا لِأَحَدِ ثَلَاثَةٍ: رَجُلٍ تَحَمَّلَ حَمَالَةً فَحَلَّتْ لَهُ الْمَسْأَلَةُ حَتَّى يُصِيبَهَا ثُمَّ يُمْسِكُ، وَرَجُلٍ أَصَابَتْهُ جَائِحَةٌ اجْتَاحَتْ مَالَهُ، فَحَلَّتْ لَهُ الْمَسْأَلَةُ حَتَّى يُصِيبَ قِوَامًا مِنْ عَيْشٍ، أَوْ قَالَ سِدَادًا مِنْ عَيْشٍ، وَرَجُلٍ أَصَابَتْهُ فَاقَةٌ حَتَّى يَقُولَ ثَلَاثَةٌ مِنْ ذَوِي الْحِجَا مِنْ قَوْمِهِ: لَقَدْ أَصَابَتْ فُلَانًا فَاقَةٌ فَحَلَّتْ لَهُ الْمَسْأَلَةُ حَتَّى يُصِيبَ قِوَامًا مِنْ عَيْشٍ، أَوْ قَالَ سِدَادًا مِنْ عَيْشٍ، فَمَا سِوَاهُنَّ مِنَ الْمَسْأَلَةِ يَا قَبِيصَةُ سُحْتٌ، يَأْكُلُهَا صَاحِبُهَا سُحْتًا» ". رَوَاهُ مُسْلِمٌ.
আমি একবার অন্যর ঋণের বোঝা/রক্তপণ নিজ দায়িত্বে নিয়ে আসি।অতঃপর অনুন্যপায় হয়ে নবীজী সাঃ এর কাছে যাই যাতে করে উনার কাছে এ সম্পর্কে সুওয়াল করি।
নবীজী সাঃ বলেনঃ তুমি দাড়াও যতক্ষণ না আমাদের কাছে সদকার (যাকাতের)কোনো মাল আসে,আসলে তোমার জন্য নির্দেশ দিয়ে দিবো।অতঃপর নবীজী সাঃ বললেনঃ হে ক্বাবিসাহ! সুওয়াল করা তিন প্রকার মানুষ ব্যতীত অন্য কারো জন্য বৈধ নয়।
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
রাস্তার ভিক্ষুক যাদের ভিক্ষাবৃত্তি আজকাল একরকম পেশা হয়ে গেছে।তন্মধ্যে অনেকের আবার আর্থিক সচ্ছলতা ও শারীরিক সক্ষমতা রয়েছে।এদেরকে রুক্ষ ভাষায় ধমক না দিয়ে উপদেশ দিতে হবে।নরম ভাষায় তাদেরকে বুঝাতে হবে।না দিলে সুন্দরভাবে বিদায় দিতে হবে , কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﺍﻟﺴَّﺎﺋِﻞَ ﻓَﻼ ﺗَﻨْﻬَﺮْ
তরজমাঃএবং(হে নবী) আপনি সওয়ালকারীকে ধমক দিবেন না।
হাদীস শরীফে এসেছে, নবীজী সাঃ বলেনঃ
ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﻟﻠﺴﺎﺋﻞ ﺣﻖ ﻭﺇﻥ ﺟﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﻓﺮﺱ-
তরজমাঃসুওয়াল কারীর ও একটি হক্ব রয়েছে যদিও সে ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে আসে। (আবু-দাউদ-১৬৬৫)
সুওয়াল করার হুকুম ভিক্ষুকের অবস্থার উপর নির্ভর করবে।সে যদি সাবলম্বী হয় তাহলে সুওয়াল করা তার জন্য উপরের বর্ণিত ধারা অনুযায়ী হারাম হবে ঠিক কিন্তু সুওয়ালকৃত ব্যক্তির জন্য কিছু দিয়ে দেয়াটা উচিৎ।কেননা (শেষ)