আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
267 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (51 points)
edited by

১। জামাতে ছাড়াই জোহরের নামাজ আদায় করার সময় যে চার রাকাত সুন্নত নামাজ আছে সেটা চার রাকাত ফরজ এবং দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করার পরে আদায় করলে কোন সমস্যা হবে কি ?
২। ওয়াদা করার ক্ষেত্রে যুদি আল্লাহর নাম সারা সাধারন ভাবে ওয়াদা করা হয় যেমন আমি আপনার কথা রাকব বা আমি আপনার আমানত ঠিক ভাভে রাকব ওয়াদা করলাম তাহলে কি সেটা শিরক হবে নাকি কোন সমস্যা হবে না ?

৩। খ্রিস্টান দের চার্চ এ এখন তারা যিশুর মূর্তির  সামনে উপাসনা করতে দেকেসি ? সেই ক্ষেত্রে তারা কি এখন মুসরিক হয়ে গেসে ? খ্রিস্টান রা  ত্রিনটি(Trinity)  তে বিশ্বাস করে এটা আসলে কি ?

৪।নিচের এই ভিডিও তে একজন ভাই বললেন যে আল্লাহর হুকুম নয় বরং আল্লার ইচ্ছা সারা গাসের পাতাও পরে না কারন একজন নাস্তিক এইবাভে বলেসিল যে তাহলে যে জেনা করচে সে ত আল্লাহর হুকুমেই করছে কিন্তু আল্লাহ ত এরকম হুকুম দিবেন না তিনি শুধু ভাল কাজের জন্য ই আদেস করেন। এই বিষয়ে নিচের ভিদিও দেকে যুদি আমাকে পরিস্কার করতেন যে তিনি আসলে কি বোজাতে ছেয়েসেন তাহলে অনেক ভাল হত ?

 https://youtu.be/E3tIE6gHF9o

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
সুন্নাতে মুয়াক্কাদা সম্পর্কে আল্লামা জুরজানী রাহ বলেনঃ 
ﻭﺣﻜﻤﻬﺎ ﻛﺎﻟﻮﺍﺟﺐ -— ﺇﻻ ﺃﻥ ﺗﺎﺭﻙ ﺍﻟﻮﺍﺟﺐ ﻳﻌﺎﻗﺐ ﻭﺗﺎﺭﻛﻬﺎ ﻻ ﻳﻌﺎﻗﺐ - ( ﺍﻟﺘﻌﺮﻳﻔﺎﺕ ﻟﻠﺠﺮﺟﺎﻧﻰ 138-
সুন্নতে মুআক্কাদা ওয়াজিবের মতই। অর্থাৎ ওয়াজিবের ব্যাপারে যেমন জবাবদিহী করতে হবে, তেমনি সুন্নতে মুআক্কাদার ক্ষেত্রে জবাবদিহী করতে হবে। তবে ওয়াজিব তরককারীর জন্য সুনিশ্চিত শাস্তি পেতে হবে, আর সুন্নতে মুআক্কাদা ছেড়ে দিলে কখনো মাফ পেয়ে যেতেও পারে। তবে শাস্তিও পেতে পারে।

ফরজ নামাযের আগে পরের সুন্নতে মুআক্কাদার অত্যধিক গুরুত্ব দেয়া উচিত। এ কারণেই ফুক্বাহায়ে কেরাম লিখেন যে, 
ﺭﺟﻞ ﺗﺮﻙ ﺳﻨﻦ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﺍﻥ ﻟﻢ ﻳﺮ ﺍﻟﺴﻨﻦ ﺣﻘﺎ ﻓﻘﺪ ﻛﻔﺮ، ﻷﻧﻪ ﺗﺮﻛﻬﺎ ﺍﺳﺘﺨﻔﺎﻓﺎ ( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ - 2/492 ، ﺑﺪﺍﺋﻊ ﺍﻟﺼﻨﺎﺋﻊ - 1/644
যদি কেউ সুন্নতকে হক মনে না করে এটাকে ছেড়ে দেয়, তাহলে এ কর্ম তাকে কুফরী পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে।

ﻭﺍﻥ ﺭﺁﻫﺎ ﺣﻘﺎ ﻓﺎﻟﺼﺤﻴﺢ ﺃﻧﻪ ﻳﺄﺛﻢ، ﻷﻧﻪ ﺟﺎﺀ ﺍﻟﻮﻋﻴﺪ ﺑﺎﻟﺘﺮﻙ، ﻛﺬﺍ ﻓﻰ ﻣﺤﻴﻂ ﺍﻟﺴﺮﺧﺴﻰ، ( ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ - 1/112
তবে কেউ যদি সুন্নতকে সহীহতো মনে করে, কিন্তু অলসতা করে ছেড়ে দেয়। তাহলে সে গোনাহগার হবে।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন-400

জোহর ও জুম্মার সুন্নতে কাবলিয়্যাহ যদি এগুলো তরক হয়ে যায়,তাহলে জোহরের ওয়াক্তের ভিতর জোহরের ফরয এবং ফরয পরবর্তী সুন্নত নামাযের পর(ফরয পরবর্তী সুন্নতের আগে না পরে পড়তে হবে?এ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে) সেগুলোকে পড়ে নেয়া জরুরী।তবে ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পর জরুরী নয়।
لما في الدرالمختار ج٢-ص٥٨
(بخلاف سنة الظهر) وكذا الجمعة (فإنه) إن خاف فوت ركعة (يتركها) ويقتدي (ثم يأتي بها) على أنها سنة (في وقته) أي الظهر (قبل شفعه) عند محمد، وبه يفتى جوهرة.
و في ردالمحتار تحت 
(قوله في وقته) فلا تقضى بعده لا تبعا ولا مقصودا بخلاف سنة الفجر.
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/3443 

(২) ওয়াদা করার ক্ষেত্রে যদি আল্লাহর নাম ছাড়া সাধারনভাবে ওয়াদা করা হয়, যেমন আমি আপনার কথা রাকব বা আমি আপনার আমানত ঠিকভাবে হেফাজত করবো, তাহলে এদ্বারা শিরক হবে না। তবে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে কসম করা শিরক। 

(৩) 6274 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
ইহুদী এ্বং খৃষ্টানরা শিরিকে লিপ্ত হওয়ার পরও আল্লাহ তাদেরকে মুশরিক না বলে আহলে কিতাব বলেছেন।ইহুদিরা হযরত উযাইর আঃ কে আল্লাহর বেটা এবং খৃষ্টানরা হযরত ইসা আঃ কে আল্লাহর বেটা বলত।যেমন তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলছেন,
وَقَالَتِ الْيَهُودُ عُزَيْرٌ ابْنُ اللّهِ وَقَالَتْ النَّصَارَى الْمَسِيحُ ابْنُ اللّهِ ذَلِكَ قَوْلُهُم بِأَفْوَاهِهِمْ يُضَاهِؤُونَ قَوْلَ الَّذِينَ كَفَرُواْ مِن قَبْلُ قَاتَلَهُمُ اللّهُ أَنَّى يُؤْفَكُونَ
ইহুদীরা বলে ওযাইর আল্লাহর পুত্র এবং নাসারারা বলে ‘মসীহ আল্লাহর পুত্র’। এ হচ্ছে তাদের মুখের কথা। এরা পূর্ববর্তী কাফেরদের মত কথা বলে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন, এরা কোন উল্টা পথে চলে যাচ্ছে।(সূরা তাওবাহ -৯)

ত্রিনটি(Trinity)  এর ভিন্ন ভিন্ন ব্যখ্যা পাওয়া যায়, সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ব্যখ্যা হল, আল্লাহ এবং আল্লাহর স্ত্রী মারয়াম ও ছেলে ইসা এর সমন্বয়েই মূলত ইশ্বরের অস্থিত্ব। (নাউযুবিল্লাহ)


(৪) 
তাক্বদীর শব্দটির অর্থ নির্ধারণ করা বা অনুমান করা।
শারঈ পরিভাষায় তাক্বদীর হ’ল, আল্লাহ কর্তৃক বান্দার ভবিষ্যত নির্ধারণ করা। 

তাকদীর বিষয়ক দুয়েকটা আয়াত ও হাদীস  লক্ষণীয়........
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি-থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- 
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ اﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ -( «ﻛَﺘَﺐَ اﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻘَﺎﺩِﻳﺮَ اﻟْﺨَﻼَﺋِﻖِ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳَﺨْﻠُﻖَ اﻟﺴَّﻤَﺎﻭَاﺕِ ﻭَاﻷَْﺭْﺽَ ﺑِﺨَﻤْﺴِﻴﻦَ ﺃَﻟْﻒَ ﺳَﻨَﺔٍ)ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ.
আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মানুষের তাক্বদীর লিপিবদ্ধ করেছেন আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে এবং তিনি যার ভাগ্যে যা লিপিবদ্ধ করেছেন তাই ঘটবে।(ছহীহ মুসলিম, মিশকাত হাদীস নং/৭৯)। 

একদিন ছাহাবায়ে কেরাম তাকে কেবল তাক্বদীরের উপর ভরসা করে সকল আমল ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানালে রাসূল (ছাঃ) বললেন, তোমরা সৎকর্ম করে যাও। কেননা যাকে যেজন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার পক্ষে সে কাজ সহজসাধ্য হবে। যারা সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত, তাদের জন্য সেরূপ আমল এবং যারা দুর্ভাগাদের অন্তর্ভুক্ত তাদের জন্য সেরূপ আমল সহজ করে দেওয়া হয়েছে।
(বুখারী হা/৪৯৪৯)। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/58

আল্লাহ তা’আলা বলেন, 
وَهَدَيْنَاهُ النَّجْدَيْنِ
বস্তুতঃ আমি তাকে দু’টি পথ প্রদর্শন করেছি।
فَلَا اقْتَحَمَ الْعَقَبَةَ
অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি। ( সূরা বালাদ-১০-১১)


সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আল্লাহ মূলত বান্দাকে সৎ ও অসৎ দুটি কাজেরই তাওফিক দিয়ে থাকেন। যখন বান্দা কোনো কাজের নিয়ত করে  ঐ কাজ সম্পাদন করার জন্য অগ্রসর হয়, তখনই আল্লাহ তা’আলা বান্দাকে ঐ কাজের তাওফিক দিয়ে দেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...