আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
388 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (6 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ

17828 নং প্রশ্নের আলোকে আমরা ব্যাখাটুকু আরো বিস্তারিত জানতে চাই।
পূর্বের প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়েছিল যে, "আজকে থেকে ডিভোর্স" এই কথাটা দুই দিন বলার কারণে দুই তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে। এবং বাদবাকি যে কথাগুলো আছে সেগুলো কেনায়া তালাকের অন্তর্ভুক্ত। যদি তালাকের নিয়ত থাকে তাহলে তালাক হবে, আর নিয়ত না থাকলে তালাক পতিত হবে না।
এখন, তালাক বাকি থাকে মাত্র একটা এবং এর বিপরীতে কেনায়া নির্দেশক বাক্য তিন-চারটা। আর মাত্র একটা তালাক বাকি থাকাতে খুব সিরিয়াস সমস্যা লাগছে ব্যাপারটাকে। কারণ,  এটা হালাল হারামের ব্যাপার। অসর্তকতাবশত, যদি তিন তালাকই পতিত হয়ে গিয়ে থাকে, আর সেটা আমাদের অজানা থেকে যায়, তাহলে তো সারাজীবন হারামে থাকতে হবে এবং জিনার গুনাহ হবে। তাই, কেনায়ামূলক শব্দ গুলো সম্পর্কে আরেকটু বিস্তারিত ভাবে স্পষ্ট মাসালা জানতে চাচ্ছি।
*****

[১] আমার স্বামী একদিন বলেছেন-- "তুমি হয় আজকের মধ্যে আসবা, আর নাহয় আমাকে ছাড়বা,  আজকে যদি  না আস, তাহলে আজকেই শেষ মনে কর।" ঝগড়া করে বলেছিলেন।
(এই কথাগুলো বলেছিলেন সকাল বেলা, সেদিন রাতের বেলা আমাদের ফোনে কথা হয় ও রাগ ভেঙে যায়। তবে আমি পরেরদিন সকালে তৈরি হতে দেরি হলে দুপুরবেলা এসেছিলাম। লক্ষণীয় যে, বলা হয়েছে আগের দিন, আমি এসেছি পরের দিন।)
এখন, এখানে  উত্তর এসেছিল এটা----

"এই কথা দ্বারা তালাকে মুআল্লাক পতিত হবে।অর্থাৎ আপনি যদি সেইদিন স্বামীর কথামত না গিয়ে থাকেন,তাহলে তালাক পতিত হবে।কয় তালাক পতিত হবে? প্রতিউত্তরে বলা যায় যে,এক্ষেত্রে স্বামীর নিয়ত গ্রহণযোগ্য।স্বামী এক বা তিন তালাকের নিয়ত করলে এক বা তিন তালাক পতিত হবে।"

এখন,  আমি জানতে চাই, সেইদিন বলতে কি সেদিনের সময়সীমা ঐদিন সন্ধ্যা বা রাত পর্যন্ত  ধরা হবে? কারণ আমি তো পরের দিন দুপুরে এসেছিলাম। নাকি যখন কথা গুলো বলা হয়েছে, ঠিক ঐ মুহুর্ত থেকে আগামী ২৪ ঘন্টাকে দিন ধরা হবে। যদি সন্ধ্যা পর্যন্ত হয়, তাহলে কি তালাক পতিত হবে? আর যদি ঠিক ঐ মুহুর্ত থেকে আগামী ২৪ ঘন্টা হয় তাহলে কি তালাক পতিত হবে না?  এটা জানতে চাই।
**আরো কয়েকটা কথা রয়ে যায়, কিন্তু আমরা জানতাম না যে এসব কথায় তালাক পতিত হতে পারে। তাই আমার স্বামী বলিছে, যেহেতু আমরা  জানতামই না এসব কথায় তালাক হয়,  তাহলে সরাসরি তালাকের নিয়ত কিভাবে করব। তবে যেই কথাটা যে উদ্দেশ্যে বলা হয়েছিল,  সেটা ভেঙে বলছি সেই নিয়ত সহ।
[২]
একদিন বলে ফেলেছেন--- "কিভাবে শেষ করবা কর। তোমার পরিবার নিয়ে বস, কখন বসবা, বস। "( এটা রাগে বিরক্ত হয়ে বলেছেন)।
-------এটা পরিবার নিয়ে বসার নিয়তেই বলেছিলেন।
[৩]
আরেকদিন মেসেজে বলেছেন---"ফি আমানিল্লাহ"। আর মুখে বলেছিলেন-" তোমার যা মন চায় কর।"  (আশা  ছেড়ে দিয়ে বলেছিলেন।)

------ফি আমানিল্লাহ বলেছিলেন বিদায় হিসেবে, যে উনি আর যোগাযোগ রাখবেন না। আর "তোমার যা মন চায় কর" বলেছিলেন এই জন্য যে, উনি আমাকে কখনোই সাধবেন না আর। মানে এবার আমার যা মন চায়। আমি চাইলে আসতে পারি, আর চাইলে নাও আসতে পারি। এটা আমার উপর।
[৪]
আরেকদিন সাধারণ ভাবে বলেছেন যে-- তুমি তোমার জন্য জামাই দেখ। (এটা শান্ত অবস্থায় এমনিতেই বলেছিলেন।)
----এটাতে  নিয়ত ছিল যে, যদি বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় তবে যেন আমাকে কষ্ট করতে না হয়। তাই, বলেছেন, তুমি তোমার জন্য জামাই দেখ।
[৫]

উনি আরেকদিন বলেছেন যে,---"তোমার গার্জিয়ানদের জানাও, তাদের ডাক। "(এটাও রেগে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে বলেছিলেন।)
 আরেক দিন বলা হয়েছে যে, "তুমি তোমার গার্জিয়ান ডাক। কারে জানাইবা জানাও।"

------এই কথা গুলো রাগান্বিত অবস্থায় গার্জিয়ানকে জানানোর নিয়তে  বলেছিলেন।
****
আবার, এই ওয়েবসাইটের অন্য একটা মাসালা পড়তে গিয়ে দেখলাম লিখা আছে যে---

"রাগের অবস্থায় স্বামী তালাকের নিয়তকে অস্বীকার করলে স্বামীর উক্ত বক্তব্যকে সত্যায়ন করা হবে। কেননা সেই শব্দ সমূহে গালিগালাজ ও স্ত্রীর তালাকের আবেদনকে -ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান রয়েছে। তবে যেই সমস্ত শব্দাবলীতে শুধুমাত্র তালাকের অর্থ বিদ্যমান রয়েছে, গালিগালাজ বা (স্ত্রীর তালাকের আবেদন) ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান না থাকে,  তাহলে সেই সমস্ত শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা হবে না। বরং তালাক পতিত হবে।

যেমন - তুমি ইদ্দত গণণা কর, তুমি পছন্দ কর, তোমার বিষয় তোমার হাতে, অভিভাবক ডাক, তোমার জন্য পাত্র দেখ ইত্যাদি। সুতরাং এমন শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা হবে না। বরং তালাক পতিত হবে।"
এখন, যেহেতু আমরা নিয়ত সম্পর্কে দৃঢ় করে কিছু বলতে পারছিনা, আর রাগের মাথায় স্বামীর এসব বক্তব্যের অস্বীকারকে সত্যায়ন করা হবে না, বরং তালাক পতিত হবে। অথচ, বাকি আছে মাত্র একটা তালাক। তাই আমরা,  বিবাহ কি বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে নাকি হয়নি এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছি না। একটা সন্দেহের উপরে আছি। আমাদের সমস্ত কথার উপর ভিত্তি করে ফাইনালি মাসালা কি আসে আমাদের সাংসারিক হালাতের উপর, এটা জানতে চাই আপনাদের কাছে? এখন আমাদের কি করণীয়?
একটা তালাক অবশিষ্ট থাকা অবস্থায় সন্দেহের উপরে কি সংসার করা যাবে? হালাল হবে?
যদি বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে কি আমাকে ইদ্দত পালান করতে হবে?
বিচ্ছেদ হয়ে গিয়ে থাকলে কি এই স্বামীর সাথে পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে সংসার করা যাবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/17828 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
"আজকে থেকে ডিভোর্স" এই কথাটা দুই দিন বলার কারণে দুই তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে। এবং বাদবাকি যে কথাগুলো আছে সেগুলো কেনায়া তালাকের অন্তর্ভুক্ত। যদি স্বামীর এতে তালাকের নিয়ত থাকে তাহলে তালাক পতিত হবে, আর তালাকের নিয়ত না থাকলে তালাক পতিত হবে না।এখন, তালাক বাকি থাকে মাত্র একটা এবং এর বিপরীতে কেনায়া নির্দেশক বাক্য তিন-চারটা। সুতরাং আরো একটা তালাক পতিত হবে। এবং অন্যান্য কোনো তালাক পতিত হবে না। কেননা তখন তালাকের আর কোনো স্থান বাকী নাই। 

"তুমি হয় আজকের মধ্যে আসবা, আর নাহয় আমাকে ছাড়বা,  আজকে যদি  না আস, তাহলে আজকেই শেষ মনে কর।" 
এখানে আজ দ্বারা আজকের দিন এবং রাত শামিল। তথা আপনি যদি পরের দিন ফজরের পূর্বে চলে আসতেন, তাহলে তালাক পতিত হত না। কিন্তু এখানে তালাক পতিত হয়ে যাবে। সুতরাং আগের দুই তালাক এখন আরো এক তালাক পতিত হয়ে আপনি তিন তালাক প্রাপ্তা হয়ে আপনি আপনার স্বামীর জন্য হারাম হয়ে গিয়েছেন। সুতরাং এখন আপনাদের জন্য একত্রে বসবাস করা জয়েয হবে না। 

" ومن قال لامرأة يوم أتزوجك فأنت طالق فتزوجها ليلا طلقت " لأن اليوم يذكر ويراد به بياض النهار فيحمل عليه إذا قرن بفعل يمتد كالصوم والأمر باليد لأنه يراد به المعيار وهذا أليق به ويذكر ويراد به مطلق الوقت قال الله تعالى: {وَمَنْ يُوَلِّهِمْ يَوْمَئِذٍ دُبُرَهُ} [لأنفال: 16] والمراد به مطلق الوقت فيحمل عليه إذا قرن بفعل لا يمتد والطلاق من هذا القبيل فينتظم الليل والنهار ولو قال عنيت به بياض النهار خاصة دين في القضاء لأنه نوى حقيقة كلامه والليل لا يتناول إلا السواد والنهار لا يتناول إلا البياض خاصة وهذا هو اللغة.
«الهداية في شرح بداية المبتدي» (1/ 230)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (6 points)
জাযাকাল্লাহু খয়রান।  

হযরত, আমার স্বামী বলছেন, উনি নাকি   একেবারে বিচ্ছেদের জন্য আমাকে এই কথা বলেননি। আমি যেন উনার কথা রেখে চলে আসি সে জন্য বলছেন।

এখন, রাতের বেলায় তো আমাদের ফোনে কথা হয়, মনোমালিন্য ভেঙে যায় এবং পরদিন সকালে যাব বলে দুজনের মধ্যে কথা ঠিক হয়।
আমাদের আর ঝগড়া থাকেনা তখন।
 একটা ঝামেলার জন্য সকালে আসতে না পারায় আমি দুপুরে যাই। 

 রাগ বা মনোমালিন্য কেটে যাওয়ার পর কি তার ওয়াদা বহাল রয়েছে? এখানে তালাকের সন্দেহ কি আর তাকে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...