আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,144 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
আসসালামু আলাইকুম!

হযরত আমি জানতে চাচ্ছি, বর্তমানে আহলে কিতাব কারা?
কুরআনে বর্ণিত আহলে কিতাব দ্বারা যাদেরকে বুঝানো হয়েছে, তারা কি বর্তমানেও আছে? যদি থাকে তবে তাদের সাথে মুসলিমদের মেলা-মেশা করার হুকুম কি? অনেকে বলে থাকেন আহলে কিতাবদের সাথে সম্পর্ক তৈরিতে কোন সমস্যা নেই। এটা কতটুকু সত্যি?

বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করলে উপকৃত হতাম। যেন সব সন্দেহ দুর হয়ে যায়।

1 Answer

+1 vote
by (589,200 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আহলে কিতাব অর্থ হল,কিতাব ওয়ালা।ইহুদী খৃষ্টানরা হল,অাহলে কিতাব।অর্থাৎ তাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিলো, তাদের নিকট নবী প্রেরণ করা হয়েছিল।

আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مَا مِنْ نَبِيٍّ بَعَثَهُ اللهُ فِي أُمَّةٍ قَبْلِي إِلَّا كَانَ لَهُ مِنْ أُمَّتِهِ حَوَارِيُّونَ، وَأَصْحَابٌ يَأْخُذُونَ بِسُنَّتِهِ وَيَقْتَدُونَ بِأَمْرِهِ، ثُمَّ إِنَّهَا تَخْلُفُ مِنْ بَعْدِهِمْ خُلُوفٌ يَقُولُونَ مَا لَا يَفْعَلُونَ، وَيَفْعَلُونَ مَا لَا يُؤْمَرُونَ، فَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِيَدِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِلِسَانِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِقَلْبِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلَيْسَ وَرَاءَ ذَلِكَ مِنَ الْإِيمَانِ حَبَّةُ خَرْدَلٍ».
“আমার পূর্বে যে উম্মাতের কাছেই আল্লাহ নবী পাঠিয়েছিলেন তারই নিজ উম্মাতের মধ্য হতে সাহায্যকারী ও সাথী ছিল যারা তার সুন্নতকে গ্রহণ করতো ও তার আদেশের অনুসরণ করতো। আর তাদের (নবীদের) পর অনেক উত্তরসূরীদের জন্ম হবে তারা যা করবে না তা বলবে, যার আদেশ দিবে তা করবে না। সুতরাং যে তাদের বিরুদ্ধে হাত দিয়ে জিহাদ করবে সে মুমিন, আর যে তাদের বিরুদ্ধে মুখ দিয়ে জিহাদ করবে সেও মুমিন এবং যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে অন্তর দিয়ে জিহাদ করবে সেও মুমিন তবে এর পর ঈমানের আর কোনো অংশ নেই।(সহীহ মুসলিম-৫০)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আহলে কিতাবদের সাথে মুসলমানদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কখনো জায়েয হবে না।
অমুসলিমের সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ককে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
لاَّ يَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاء مِن دُوْنِ الْمُؤْمِنِينَ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ فَلَيْسَ مِنَ اللّهِ فِي شَيْءٍ إِلاَّ أَن تَتَّقُواْ مِنْهُمْ تُقَاةً وَيُحَذِّرُكُمُ اللّهُ نَفْسَهُ وَإِلَى اللّهِ الْمَصِيرُ
মুমিনগন যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কেন কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এরূপ করবে আল্লাহর সাথে তাদের কেন সম্পর্ক থাকবে না। তবে যদি তোমরা তাদের পক্ষ থেকে কোন অনিষ্টের আশঙ্কা কর, তবে তাদের সাথে সাবধানতার সাথে থাকবে আল্লাহ তা’আলা তাঁর সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করেছেন। এবং সবাই কে তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবে।(সূরা আলে ইমরান-২৮)

কোনো অমুসলিমকে ইসলামের দিকে দীক্ষিত করতে,বা কোনো প্রভাবশালী অমুসলিমের ক্ষতি থেকে নিজেকে হেফাজত করতে তার সাথে বাহ্যিক বন্ধুত্ব রাখা যায়, তবে আন্তরিক বন্ধুত্ব স্থাপন কখনো জায়েয হবে না।

বর্তমানেও আহলে কিতাবরা রয়েছে। আহলে কিতাব বলতে যারা ইসা আঃ কে আল্লাহর নবী দাবী করে। এবং মুসা আঃ কে আল্লাহর নবী দাবী করে । 
https://www.ifatwa.info/4748 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
ফুকাহায়ে কেরামদের সসর্বসম্মতিক্রমে বলেছেন যে, মুসলমানদের জন্য অাহলে কিতাব মহিলাদেরকে বিয়ে করা মাকরুহের সাথে জায়েয।

মুসলমান মহিলার জন্য আহলে কিতাব পুরুষদের সাথে বিবাহ কি জায়েয?
এ সম্পর্কে আলোচনা হল,
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَلاَ تَنكِحُواْ الْمُشْرِكَاتِ حَتَّى يُؤْمِنَّ وَلأَمَةٌ مُّؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِّن مُّشْرِكَةٍ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ وَلاَ تُنكِحُواْ الْمُشِرِكِينَ حَتَّى يُؤْمِنُواْ وَلَعَبْدٌ مُّؤْمِنٌ خَيْرٌ مِّن مُّشْرِكٍ وَلَوْ أَعْجَبَكُمْ أُوْلَـئِكَ يَدْعُونَ إِلَى النَّارِ وَاللّهُ يَدْعُوَ إِلَى الْجَنَّةِ وَالْمَغْفِرَةِ بِإِذْنِهِ وَيُبَيِّنُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ
আর তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে করোনা, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরেক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভালো লাগে। এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহ্বান করে, আর আল্লাহ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।(সূরা বাকারা-২২১)

উপরোক্ত আয়াত প্রমাণ করে যে,মুসলমান মহিলার জন্য আহলে কিতাব পুরুষকে বিয়ে করা হারাম।এতে মুফাস্সিরীনে কেরামের মধ্যে কোনো মতবিরোধ নেই।অমুসলিম কারো সাথে মুসলমান মহিলার বিয়ে জায়েয নয়,চায় হিন্দু হোক বা ইহুদী হোক কিংবা খৃষ্টান হোক।আহলে কিতাবরা যদি তাদের ধর্ম মেনে প্রাণী জবাই করে তাহলে তাদের জবাই করা প্রাণী ভক্ষণ করাও জায়েয আছে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (26 points)
একটি বিষয়ে খটকা রয়ে গেলো, সূরা বাকারা-২২১ নাম্বার আয়াত দিয়ে যদি মুসলমান মহিলার জন্য আহলে কিতাব পুরুষকে বিয়ে করা হারাম হয়ে যায়, তবে উক্ত আয়াতের দ্বারা তো মুসলমান পুরুষের জন্য আহলে কিতাব মহিলাকে বিয়ে করা হারাম হয়ে যাওয়ার কথা, কারন মহান আল্লাহ তায়ালা, উভয়ের জন্যে সেইম হুকুম উল্লেখ করেছেন!

তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে করোনা যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে।
এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। 

দয়া করে বিষয়টি কি একটু বুঝিয়ে বলা যায়? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...