আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
308 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (45 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম । আমি যাওয়া আসা করি যে রাস্তা দিয়ে সেই রাস্তায় আমি কয়েকটি টমেটো ও মরিচ গাছ দেখতে পাই যেগুলো অবহেলায় বেড়ে উঠছে । তার পাশে আছে ইটের স্তুপ। এখন আমি চাচ্ছি যে গাছগুলো নিয়ে এসে যত্ন করে বড় করতে।এটা কি শরিয়তসম্মত হবে?

(আসলে গাছগুলো কারো মালিকাধীন বলে মনে হচ্ছে না। মানে ময়লার স্তুপে যেরকম গাছ বের হয় সেরকম। )

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
জ্বী, আপনি উক্ত গাছ নিয়ে আসতে পারবেন। কেননা এগুলো কারো মালিকানধীন নয়। 

https://www.ifatwa.info/7998 নং ফাতাওয়ায় আপনার প্রশ্নের রিলেটেড একটি ফাতাওয়া প্রদান করেছিলাম যে,
কুড়িয়ে পাওয়া সম্পদকে আরবিতে 'লোকতা' বা 'লোকাতা' বলে। 

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'তোমাদের কেউ যখন কোনো কুড়িয়ে পাওয়া বস্তু কুড়িয়ে নেয় সে যেন তার ওপর দুইজন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষী রাখে, তারপর সে যেন তা গোপন না করে, পরিবর্তন-পরিবর্ধন না করে, তারপর যদি তার মালিক আসে, তবে সে সেটার অধিকারী, আর যদি না আসে, তবে সেটা আল্লাহর সম্পদ, তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন।' (ইবনে হিব্বান : ৪৮৯৪)। 

অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, 'যে কেউ কোনো পথহারা প্রাণীকে আশ্রয় দেবে, সে নিজেই ভ্রষ্ট লোক বলে বিবেচিত হবে, যতক্ষণ না সে তা প্রচার করে দেয়।' (মুসলিম : ১৭২৫)।

ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায়- 'কুড়ানো বস্তু' বলতে বোঝায়, এমন সম্পত্তি যা তার মালিক থেকে পড়ে গেছে, আর অন্য কেউ তা কুড়িয়ে নিয়েছে। অথবা এমন বস্তু যা কোনো ব্যক্তি পড়ে থাকতে দেখে কুড়িয়ে নিয়েছে এবং আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছে। (ফাতহুল কাদির)। 

মৌলিকভাবে কুড়িয়ে পাওয়া বস্তু চার ধরনের- 

১. মালিকানাবিহীন অবস্থায় প্রাপ্ত কোনো বস্তু- স্বর্ণ, রৌপ্য ও সামগ্রী। 
২. কুড়িয়ে পাওয়া মানবসন্তান। যাকে সাধারণত কেউ খাওয়া-পরা দেয়ার ভয়ে কিংবা সন্দেহযুক্ত সন্তান হওয়ায় অপমানের ভয়ে কোথাও ফেলে গেছে, সেটা যে পাবে সে তাকে লালন-পালন করবে। 

৩. চতুষ্পদ জন্তু, যেমন- উট, গরু, ছাগল ইত্যাদি। 
৪. খাদ্যজনিত বস্তু, যা রাস্তায় পাওয়া যাবে। 

যে ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির মালামাল কুড়িয়ে পায় এবং মালিককে ফেরত দানের উদ্দেশে নিজের তত্ত্বাবধানে রাখে তাহলে উদ্ধারকারীর ওপর নিম্নোক্ত দায়িত্বগুলো আরোপিত হবে- 
১. উদ্ধারকারীর দায়িত্ব হচ্ছে প্রকৃত মালিকের কাছে কুড়ানো বস্তু পৌঁছে দেয়ার জন্য যথোপযুক্ত সময় পর্যন্ত ঘোষণা দিতে থাকা। 
২. প্রাপ্ত দ্রব্য সম্পর্কে যথোপযুক্ত যত্ন গ্রহণ করা উদ্ধারকারীর কর্তব্য। অবশ্য যুক্তিসঙ্গত যত্ন নেয়ার পরও দ্রব্যের কোনো ক্ষতি হলে এ জন্য তাকে দায়ী করা যাবে না। 
৩. প্রাপ্ত বস্তু আমানত হিসেবে থাকবে যখন উদ্ধারকারী এ মর্মে সাক্ষী রাখবে যে, সে হেফাজত করা এবং মালিককে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য তা উঠিয়ে নিচ্ছে। 
৪. যদি বস্তুটির মূল্য কম হয় তাহলে কিছুদিন ঘোষণা দেবে। পক্ষান্তরে বেশি হলে এক বছর ঘোষণা দেবে। আর মালিককে খুঁজে পাওয়া না গেলে তা সদকা করে দেবে। 
৫. উদ্ধারকারীর কখনোই উচিত নয় প্রাপ্ত দ্রব্য নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করা। তবে যদি নিরুপায় হয় তাহলে সে শরিয়ত নির্ধারিত পন্থায় ব্যবহার করতে পারবে। 
৬. নিজের অনুরূপ দ্রব্যের সঙ্গে কখনোই কুড়িয়ে পাওয়া বস্তুর সঙ্গে মিশ্রণ করা উদ্ধারকারীর উচিত নয়। 
৭. উদ্ধারকারী যদি আদালতের নির্দেশ ছাড়া তার রক্ষণাবেক্ষণে অর্থ ব্যয় করে তাহলে সে স্বেচ্ছাদানকারী হবে। 
৮. প্রকৃত মালিককে পাওয়ার পর যুক্তিসঙ্গত পারিশ্রমিক প্রাপ্তিসাপেক্ষে ওই দ্রব্য প্রত্যর্পণ করাও উদ্ধারকারীর দায়িত্ব।
 ৯. কুড়িয়ে পাওয়া জিনিসের যদি কোনো বৃদ্ধি বা লাভ হয় তবে তাও প্রকৃত মালিককে প্রদান করতে হবে। 
১০. কুড়ানো বস্তু বিক্রি করা হলে নিজ পাওনা বাদে অবশিষ্ট অর্থ প্রকৃত মালিককে দিতে হবে। (হেদায়া)। 
যদি বস্তুটির মূল্য ১০ দিরহামের কম হয়, তাহলে কয়েকদিন ঘোষণা দেবে (এখানে কয়েক দিন অর্থ আদালত যে ক'দিন সমীচীন মনে করেন) অথবা ব্যক্তি তার বিবেক অনুসারে তা যথেষ্ট মনে করে। (দ্র. মারগিনানী, হিদায়া : ২/৪১৭।) 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...