আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
364 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (36 points)
আসসালামুআলাইকুম।
আমার এক বোন আমাকে প্রশ্ন করেছে তার এক সমস্যা নিয়ে। তার স্কুলের দুইজন খুব ভালো বান্ধবীর মধ্যে একজন হিন্দু। বন্ধুত্ব হওয়ার পরে সে জানতে পেরেছে যে হিন্দু বা অন্য ধর্মের কারোর সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক থাকতে হয় না। সে এখন বন্ধুত্ব ভেঙে ও দিতে পারছে না।এক্ষেত্রে তার এখন করণীয় কি? অন্য ধর্মের মেয়েদের সাথে কি বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখা যায়?যদি রাখা যায় তাহলে সেটা কি ধরনের হতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (565,350 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো মুসলিম চাই পুরুষ হোক বা মহিলা হোক,কোনো অমুসলিমের সাথে তার বন্ধুত্ব জায়েজ নেই। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 
    
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوۡا عَدُوِّیۡ وَ عَدُوَّکُمۡ اَوۡلِیَآءَ تُلۡقُوۡنَ اِلَیۡہِمۡ بِالۡمَوَدَّۃِ وَ قَدۡ کَفَرُوۡا بِمَا جَآءَکُمۡ مِّنَ الۡحَقِّ ۚ یُخۡرِجُوۡنَ الرَّسُوۡلَ وَ اِیَّاکُمۡ اَنۡ تُؤۡمِنُوۡا بِاللّٰہِ رَبِّکُمۡ ؕ اِنۡ کُنۡتُمۡ خَرَجۡتُمۡ جِہَادًا فِیۡ سَبِیۡلِیۡ وَ ابۡتِغَآءَ مَرۡضَاتِیۡ ٭ۖ تُسِرُّوۡنَ اِلَیۡہِمۡ بِالۡمَوَدَّۃِ ٭ۖ وَ اَنَا اَعۡلَمُ بِمَاۤ اَخۡفَیۡتُمۡ وَ مَاۤ اَعۡلَنۡتُمۡ ؕ وَ مَنۡ یَّفۡعَلۡہُ مِنۡکُمۡ فَقَدۡ ضَلَّ سَوَآءَ السَّبِیۡلِ ﴿۱﴾ 

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আমার শত্রু ও তোমাদের শক্ৰকে বন্ধুরূপে গ্ৰহণ করো না, তোমরা কি তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা প্রেরণ করছ, অথচ তারা, তোমাদের কাছে যে সত্য এসেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে, রাসূলকে এবং তোমাদেরকে বহিস্কার করেছে এ কারণে যে, তোমরা তোমাদের রব আল্লাহর উপর ঈমান এনেছ। যদি তোমরা আমার পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে এবং আমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য বের হয়ে থাক, তবে কেন তোমরা তাদের সাথে গোপনে বন্ধুত্ব করছ? আর তোমরা যা গোপন কর এবং তোমরা যা প্ৰকাশ কর তা আমি সম্যক অবগত। তোমাদের মধ্যে যে কেউ এরূপ করে সে তো বিচ্যুত হয় সরল পথ থেকে। 
(সুরা মুমতাহিনা ০৬)


يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَىٰ أَوْلِيَاءَ ۘ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ

হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। (সূরা মায়েদা-৫১)


لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ أَنْ تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ  إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَى إِخْرَاجِكُمْ أَنْ تَوَلَّوْهُمْ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরম্নদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ি থেকে বহিষ্কার করেনি, তাদের সঙ্গে সদাচরণ করতে ও তাদের প্রতি ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালোবাসেন। আল্লাহ  তো তোমাদের তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন, যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে এবং তোমাদেরকে বের করার কাজে একে অন্যের সহযোগিতা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে তারা জালিম। -সূরা মুমতাহিনা : ৮-৯

হাদিস শরিফে এসেছে, আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
‘রাসূলুল্লাহ (সা.) বদর অভিমুখে রওয়ানা হলেন। যখন তিনি ‘হাররাতুল ওবারা’ নামক স্থানে পৌঁছলেন, তখন এমন এক ব্যক্তি এসে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করল, যে আগে থেকে তার শৌর্য-বীর্য ও সাহসিকতার জন্য মশহুর ছিল। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সাহাবীগণ তাকে দেখতে পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত হলেন। সে যখন সাক্ষাৎ করল, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বললো, আমি আপনার সঙ্গে যেতে এবং আপনার সঙ্গে (গনীমত) পেতে এসেছি। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে বললেন: তুমি কি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান রাখ? সে বললে: না। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন: তাহলে তুমি ফিরে যাও, আমি কোনো মুশরিকের সাহায্য গ্রহণ করব না।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮১৭]
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মহিলাদের সাথে উক্ত বোনের বন্ধুত্ব করা জায়েজ হয়নি।

শরীয়তের সীমারেখায় থেকে তাদের সঙ্গে  শালীন ও সুন্দর আচরণ করা, বিপদে তাদের সহযোগিতা ইত্যাদি করা যাবে।
তবে কোনোভাবেই মন থেকে মুহাব্বত করা যাবেনা।

এক্ষেত্রে তাদের সামনে মৌখিক ভাবে বন্ধুত্ব ভেঙ্গে না দিয়ে  দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে তাদেরকে ইসলামের ছায়াতলে নিয়ে আসার চেষ্টা করতে পারে। 
তবে আন্তরিল ভাবে যেনো মুহাব্বত সৃষ্টি না হয়,সেদিকে খেয়াল রাখবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...