আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
432 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু,
আমার প্রশ্ন হলো, আমরা জানি ছেলে-মেয়ের ফ্রী মিক্সিং নিষিদ্ধ ইসলামে জরুরি ক্ষেত্র গুলো বাদে। জরুরি ক্ষেত্র গুলো বাদেও এমন অনেক পরিস্থিতির সম্মুখীন একজন সদ্য দ্বীনে ফেরা মুসলিমকে হতে হয়। যেমন-
১.পরিবারের সবাই মিলে রেস্টুরেন্টে ডিনার/লাঞ্চের আয়োজন করা হলে সেক্ষেত্রে ফ্রি মিক্সিং হয়। আর এইরকম পরিস্থিতি এড়ানো ও সম্ভব হয়না। এক্ষেত্রে একজন মুসলিমাহর কি করণীয়?
২. শুধু মাত্র বান্ধুবীদের নিয়ে যদি রেস্টুরেন্টে খেতে যায় পরিপূর্ণ পর্দার সহিত, সেক্ষেত্রেও ফ্রি মিক্সিং এড়ানো সম্ভবপর হয়না, যেহেতু রেস্টুরেন্টের অন্যান্য কাস্টমার + স্টাফ ও পুরুষ হয়। আর বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য আলাদা কোন রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থা ও নেই। তাহলে কি শুধু মেয়েরা মিলেও এসব জায়গায় খেতে যাওয়া নিষেধ?
৩. মেডিকেলের কোন প্রোগ্রামে ছেলে মেয়ে আলাদা ব্যাবস্থা নেয় অথচ ছেলেরা একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আর মেয়েরা তাদের যথাস্থানে অবস্থান করে এবং পারস্পরিক কোন প্রকার কথা-বার্তা না হয় এমন প্রোগ্রামে কি এটেন্ড করা জায়েজ হবে? উল্লেখ্য যে অন্যান্য মেয়েরা ঠিকই ছেলেদের সাথে কথাবার্তায় মশগুল থাকে। কিন্তু একজন ইন্ডিভিজুয়াল হিসেবে আমি সেখানে দূরত্ব বজায় রেখে প্রোগ্রাম এটেন্ড করছি।
অনুগ্রহপূর্বক আমার প্রশ্নের উত্তর দিবেন এবং এমন পরিস্থিতিতে ধৈর্যের সাথে কিভাবে নাসীহাহ দিতে পারি এবং বুদ্ধিমত্তার সাথে জবাব দিতে পারি সেই ব্যাপারে জানাবেন।

জাঝাকুমুল্লাহু খইরান।

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পর্দা করা ফরজ ।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 
    
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}
,
(০১)
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ডিনার/লাঞ্চে যাওয়া যাবেনা।
কারন এতে পর্দার খেলাফ হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
,
(০২)
হোটেলের ওয়েটার,অন্যান্য কাষ্টমারদের সামনেও যেহেতু পর্দা করা ফরজ,তাই পূর্ণ পর্দা রক্ষা করা সম্ভব হলেই কেবল রেস্টুরেন্টে খেতে পারবে।
নতুবা খেতে পারবেনা।
প্যাকেট করে বাসায় নিয়ে আসতে পারে।
,
একটি পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারেঃ
এমন একটি কর্ণারে বা এমন এক স্থানে গিয়ে বসা,যেখানে সামনে থেকে কোনো গায়রে মাহরাম আর চেহারা দেখতে পারবেনা।
(পিছনের দিক থেকে কাহারো নজর পড়লেও চেহারা দেখা তো সম্ভব নয়।)

সেখানে বসে ওয়েটারকে প্রথমেই বলে দেওয়া যে আপনি শুরুতেই এই এই,,,  খাবার দিয়ে যাবেন,আমাদের পরবর্তীতে এখানে আসবেননা,আমরা বিল পে করে চলে যাবো।
সমস্যা মনে করলে আপনাদের পর্দার কথা বলতে পারেন।
এভাবে বলে ওয়েটার খাবার দিয়ে চলে গেলে খাবার খেতে পারবেন।
,
(০৩)
হ্যাঁ এই প্রোগ্রামে যুক্ত হওয়া যাবে।
তবে শরীয়ত বহির্ভূত কোনো কান যেনো না হয়।
সেদিকে পূর্ণ খেয়াল রাখতে হবে।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...