আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
430 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমার কাছে কয়েক হাজার টাকা আছে এই টাকা যদি কয়েকজনের বদলে একজনকে দেই তাহলে কি সওয়াবের পরিমাণ একই হবে নাকি অনেকজনকে প্রতিদিন একটু একটু করে দিলে তার সওয়াব বেশি? কিভাবে সদাকা দিলে সওয়াব বেশি হবে? একসাথে অনেকগুলো টাকা একবারেই একজনকে দেওয়া নাকি প্রতিদিন ১,২,৫,১০ টাকা করে দিতে থাকাটা?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনি যদি যাকাত দিতে চান,তাহলে শুধুমাত্র গরীব ও মিসকিস মুসলমানকেই দিতে পারবেন। আর নফল সদকাহ দিতে চাইলে মুসলিম অমুসলিম যে কাউকেই দিতে পানবেন।

নফল সদকা যদিও সবাইকে দেওয়া যায়,তথাপি নেককার মুত্তাকি পরহেজগার লোক দেখে দেওয়া উত্তম।হাদিস শরীফে এসেছে...........
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
তরজমা- নবী কারীম সাঃ বলেছেনঃ- মু'মিন এবং ঈমানের পরিছয় হচ্ছে,ঐ ঘোড়ার মত যাকে(ঘাস খাওয়ার জন্য)দড়ি দিয়ে বেধে দেয়া হয়েছিল,কিন্তু সে নির্ধারিত সীমানা থেকে দুরে যাওয়ার জন্য লাফালাফী ও ছুটাছুটি করছে, অতঃপর নিরাশ হয়ে আবার সে নির্ধারিত জায়গায় ফিরে আসছে।মু'মিন বান্দার দৃষ্টান্ত হইল সেই বেধে রাখা ঘোড়ার মত অর্থ্যাৎ সে মাঝে-মধ্যে  ভুল করে বসে,অবশেষে আবার সে ঈমানের দিকে ফিরে আসে।সুতরাং তোমরা (এই পাপ মোচনস্বরূপ) নেককার লোকদেরকে আহার করাও।এবং মু'মিনদের সাথে তোমাদের দানকে বিষেশায়িত করো।

উক্ত হাদিস থেকে বুঝা যায় যে,নেককার পরহেজগারদেরকে দান করা উত্তম।তবে নেককার পরহেজগার না হলেও সওয়াবে কোনো কমতি আসবেনা যা নিম্নোক্ত হাদিস থেকে বুঝে আসছে।

হযরত আবু হুরইরহ রদিয়াল্লহু আ’নহু হইতে বর্ণিত আছে যে,

তরজমা-রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, (বনী ইসরাইলের) এক ব্যক্তি (মনে মনে) বলিল, আমি আজ (রাতে গোপনে) ছদকা করিব। সুতরাং (রাতে গোপনে সদকার মাল লইয়া বাহির হইল এবং অজ্ঞাতসারে) এক চোরের হাতে দিয়া দিল। সকালে লোকজনের মধ্যে আলোচনা হইল (যে, রাতে) চোরকে সদকা দেওয়া হইয়াছে। সদকা দানকারী বলিল, হে আল্লহ! (চোরকে সদকা দেওয়ার মধ্যেও) আপনার জন্যই প্রশংসা। (কেননা, তাহার অপেক্ষা আরও বেশি খারাপ মানুষকে যদি দেওয়া হইত তবে আমি কি করিতে পারিতাম।) অতঃপর সে দৃঢ় সংকল্প করিল যে, আজ রাত্রে(ও) অবশ্যই আমি সদকা করিব। (কেননা, পূর্বের সদকা তো নষ্ট হইয়া গিয়াছে) সুতরাং রাত্রে সদকার মাল লইয়া বাহির হইল এবং (অজ্ঞাতসারে) সদকা একজন ব্যাভিচারিণী মেয়েলোককে দিয়া দিল। সকালে আলোচনা হইল যে, আজ রাত্রে ব্যাভিচারিণী মেয়েলোককে সদকা দেওয়া হইয়াছে। সে বলিল, হে আল্লহ! ব্যাভিচারিণী মেয়েলোককে সদকা দেওয়ার মধ্যেও আপনার জন্যই প্রশংসা। (কেননা, আমার মাল তো এই উপযুক্তও ছিল না।) অতঃপর (তৃতীয়বার) ইচ্ছা করিল যে, আজ রাত্রে অবশ্যই সদকা করিব। অতএব, রাত্রে সদকার মাল লইয়া বাহির হইল এবং উহা একজন ধনী ব্যক্তির হাতে দিয়া দিল। সকালে আলোচনা হইল যে, রাত্রে একজন ধনী ব্যক্তিকে সদকা দেওয়া হইয়াছে। সদকা দানকারী বলিল, হে আল্লহ! চোর, ব্যাভিচারিণী মেয়েলোক ও ধনী ব্যক্তিকে সদকা দেওয়ার উপর আপনারই প্রশংসা। (কেননা, আমার মাল তো এরূপ লোকদের দেওয়ার উপযুক্তও ছিল না।) স্বপ্নে বলিয়া দেওয়া হইল যে, (তোমার সদকা কবুল হইয়া গিয়াছে।) তোমার সদকা চোরের উপর এইজন্য করানো হইয়াছে যে, হইতে পারে সে চুরির অভ্যাস হইতে তওবা করিয়া লইবে, ব্যাভিচারিণী মেয়েলোকের উপর এইজন্য যে, হইতে পারে সে ব্যাভিচার হইতে তওবা করিয়া লইবে (যখন সে দেখিবে যে, ব্যাভিচার ছাড়াও আল্লহ তায়া’লা দান করেন, তখন তাহার অনুভুতি আসিবে) আর ধনীর উপর এইজন্য, যাহাতে সে শিক্ষা লাভ করে (যে, আল্লহ তায়া’লার বান্দারা কিরূপে গোপনে সদকা করে; এই কারণে) হইতে পারে সেও ঐ সমস্ত মাল হইতে যাহা আল্লহ তায়া’লা তাহাকে দান করিয়াছেন, আল্লহ তায়া’লার পথে খরচ করিতে আরম্ভ করিবে।(মিশকাত১৬৫)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/216


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
নেসাব পরিমাণ যাকাতের মাল কাউকে দেয়া মাকরুহ।বরং এলাকার সকল গরীবকে বন্টন করে দেওয়াই উত্তম।
(وكره إعطاء فقير نصابا) أو أكثر (إلا إذا كان) المدفوع إليه (مديونا أو) كان (صاحب عيال) بحيث (لو فرقه عليهم لا يخص كلا) أو لا يفضل بعد دينه (نصاب) فلا يكره فتح.
আদ্দুর্রুল মুখতার-২/৩৫৩

সুতরাং আপনি সবাইকে বন্টন করে দিবেন। এতে সওয়াব বেশী হবে।



(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...