জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
মৌলিকভাবে অযু ভঙ্গের কারণ ৭টি।
পেশাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন বায়ু, পেশাব পায়খানা, পোকা ইত্যাদি। (হেদায়া-১/৭)
আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
إِنَّمَا الْوُضُوءُ مِمَّا خَرَجَ ، وَلَيْسَ مِمَّا دَخَلَ
শরীর থেকে যা কিছু বের হয় এ কারণে অযু ভেঙ্গে যায়, প্রবেশের দ্বারা ভঙ্গ হয় না। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী ৫৬৮)
বিস্তারিত জানুনঃ
সুতরাং সামনের রাস্তা দিয়ে বায়ু বের হওয়া এটি অযু ভেঙ্গে যাওয়ার কারনের মধ্যে নহে।
তাই এতে অযু ভেঙ্গে যাবেনা।
★শরীয়তের বিধান হলো পুরুষ মহিলাদের লজ্জাস্থান (সামনের রাস্তা) দিয়ে বায়ু নির্গত হলে তাতে ওযু নষ্ট হয় না।
ফাতাওয়ায়ে শামী ১/২৬৩ মাকতাবায়ে যাকারিয়া।
হালবি কাবির ১২৫.ফাতাওয়ায়ে হক্কানীয়া ২/৯৩৫,ফাতাওয়ায়ে মারিগুবুল ফাতওয়া ৯৮.
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 60219 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য।
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/16302/
,
(০২)
অযু ভেঙ্গে যাওয়ার কারন বিস্তারিত জানুনঃ
,
(০৩)
হ্যাঁ ইতেকাফ অবস্থায় মসজিদে প্রয়োজনে মোবাইল ব্যবহার করা যাবে।
এতে ইতেকাফ ভেঙ্গে যাবেনা।
,
★বিনা প্রয়োজনে মাসজিদ থেকে বের হওয়া। বেচাকেনা, চাষাবাদ, এমনকি রোগীর সেবা ও জানাযায় অংশ গ্রহণের জন্যও মাসজিদ থেকে বের হওয়া জায়েয নয়। বের হলে ইতেকাফ বাতিল হয়ে যাবে।
,
শুধুমাত্র মানবিক প্রয়োজনে’ তথা প্রস্রাব-পায়খানা, খাওয়া-দাওয়া ও পবিত্রতা অর্জনের জন্য মাসজিদ থেকে বের হওয়া জায়েয আছে। তবে মাসজিদে এসব ব্যবস্থা থাকার পর যদি কেউ বাইরে যায় তাহলে ই‘তিকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
,
স্বামী স্ত্রীর মিলন, স্ত্রীকে চুম্বন ও স্পর্শ করা। যে কোন প্রকার যৌন সম্ভোগ কর। কোন শির্ক বা কুফরী কাজ করা। পাগল বা বেঁহুশ হওয়া। এগুলোর কোনও একটি হলে ইতেকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ بَقِيَّةَ، أَخْبَرَنَا خَالِدٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، - يَعْنِي ابْنَ إِسْحَاقَ - عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتِ السُّنَّةُ عَلَى الْمُعْتَكِفِ أَنْ لاَ يَعُودَ مَرِيضًا وَلاَ يَشْهَدَ جَنَازَةً وَلاَ يَمَسَّ امْرَأَةً وَلاَ يُبَاشِرَهَا وَلاَ يَخْرُجَ لِحَاجَةٍ إِلاَّ لِمَا لاَ بُدَّ مِنْهُ وَلاَ اعْتِكَافَ إِلاَّ بِصَوْمٍ وَلاَ اعْتِكَافَ إِلاَّ فِي مَسْجِدٍ جَامِعٍ
ওয়াহব ইবন বাকীয়্যা ......... আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ই‘তিকাফের জন্য সুন্নাত এই যে, সে যেন কোন রোগীর পরিচর্যার জন্য গমন না করে, জানাযার নামাযে শরীক না হয়, স্ত্রীকে স্পর্শ না করে এবং তার সাথে সহবাস না করে। আর সে যেন বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত মসজিদ হতে বের না হয়। রোযা ব্যতীত ই‘তিকাফ নেই এবং জামে মসজিদ ব্যতীত ই‘তিকাফ শুদ্ধ নয়।
(আবু দাউদ ২৪৬৫)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – قَالَتْ: وَإِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «لَيُدْخِلُ عَلَيَّ رَأْسَهُ وَهُوَ فِي المَسْجِدِ، فَأُرَجِّلُهُ، وَكَانَ لاَ يَدْخُلُ البَيْتَ إِلَّا لِحَاجَةٍ إِذَا كَانَ مُعْتَكِفًا»
আম্মাজান আয়শা রাঃ বলেন, রাসূল সাঃ মসজিদে থাকা অবস্থায় আমার দিকে মাথা বাড়িয়ে দিতেন আর আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম এবং তিনি যখন ইতিকাফে থাকতেন, তখন [প্রাকৃতিক] প্রয়োজন ছাড়া ঘরে প্রবেশ করতেন না। {বুখারী, হাদীস নং-২০২৯, ১৯২৫, ১৯০২}
ফরজ গোসল ছাড়া সাধারণ গোসলের জন্যও ইতিকাফ অবস্থায় বের হওয়া নিষেধ।
,
হ্যাঁ, মুফতীয়ানে কেরাম একটি সূরত বলেছেন, সেটি হল এই যে, গোসল খানায় আগে থেকে কাউকে দিয়ে পানি ভরে রাখবে, তারপর ইস্তিঞ্জার জন্য বের হবে, ইস্তিঞ্জা শেষ করে অজু করার সময় দ্রুত গায়ে কিছু পানি ঢেলে চলে আসবে। এতে করে ইতিকাফ ভাঙ্গবে না। তবে গোসল করতে গিয়ে দেরী করবে না।
আরো জানুনঃ
(০৪)
দুর্গন্ধ যুক্ত খাবার খেয়ে গন্ধ যুক্ত মুখ নিয়ে মসজিদে যাওয়া মাকরুহ।
,
এটি নাজায়েজ নয়।
অর্থাৎ এমন ব্যাক্তির জন্য মসজিদে যাওয়া জায়েজ নেই,বিষয়টি এমন নয়।
,
জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَن أَكلَ ثوماً أو بصَلاً فليعتَزِلْنا، أو قالَ: فليَعتزلْ مسجدَنا، وليقعُدْ في بيتهِ، وفي روايةٍ: فلا يَغشانا في مساجدِنا».
“যে ব্যক্তি রসুন কিংবা পেঁয়াজ খাবে, সে যেন আমাদের থেকে দূরে থাকে। অথবা তিনি বলেছেন, সে যেন আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকে এবং নিজ বাড়ীতে বসে থাকে”।
সহীহ বুখারী; সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৪১৭৯।
সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে,
«مَنْ أَكَلَ مِنْ هَذِهِ الْبَقْلَةِ، الثُّومِ - وقَالَ مَرَّةً: مَنْ أَكَلَ الْبَصَلَ وَالثُّومَ وَالْكُرَّاثَ فَلَا يَقْرَبَنَّ مَسْجِدَنَا، فَإِنَّ الْمَلَائِكَةَ تَتَأَذَّى مِمَّا يَتَأَذَّى مِنْهُ بَنُو آدَمَ»
“যে ব্যক্তি পেঁয়াজ, রসুন ও কুর্রাছ খাবে, সে যেন কখনই আমাদের মসজিদ পানে না আসে। কেননা বনী আদম যাতে কষ্ট পায় ফিরিশতারাও তাতে কষ্ট পায়”।
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৬৪।
উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একদা জুমু‘আর খুৎবায় বলেছিলেন, হে লোক সকল! তোমরা দু’টি গাছ খেয়ে থাক। আমি ঐ দু’টিকে কদর্য ছাড়া অন্য কিছু মনে করি না। সে দু’টি হচ্ছে পেঁয়াজ ও রসুন। কেননা আমি রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি,
«إِذَا وَجَدَ رِيحَهُمَا مِنَ الرَّجُلِ فِي الْمَسْجِدِ، أَمَرَ بِهِ فَأُخْرِجَ إِلَى الْبَقِيعِ، فَمَنْ أَكَلَهُمَا فَلْيُمِتْهُمَا طَبْخًا»
“কারো মুখ থেকে তিনি এ দু’টির গন্ধ পেলে তাকে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিতেন। ফলে তাকে বাক্বী‘ গোরস্থানের দিকে বের করে দেওয়া হতো। সুতরাং কাউকে তা খেতে হলে সে যেন পাকিয়ে খায়”।
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৬৭।
★★এগুলো মাকরুহ হওয়ার কারন হলো এ অবস্থায় মসজিদে ঢুকে তারা আল্লাহর মুসল্লী বান্দা ও ফিরিশতাদের কষ্ট দেয়।
,
তবে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে গেলে কোনো সমস্যা নেই।
,
ডিম গন্ধযুক্ত খাবারের মধ্যে পড়েনা,আর সামান্য যা গন্ধ আছে,এটি মুখ ধুয়ে কুলি করে গেলে কোনো সমস্যাই নেই।
,
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মসজিদে যাওয়া মাকরুহ নয়।