জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(১.২)
তালাক শব্দ। এটি খুবই জঘন্য একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়।
হাদীসে এসেছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}
.
★★প্রশ্নে বাক্যটি তালাকে ছরীহ এর মতো।
অর্থাৎ কেহ যদি নিয়ত ছাড়া স্ত্রীকে বলে "" তোমাকে ছেড়ে দিলাম"" তাহলে তালাকে রজয়ী পতিত হয়ে যাবে।
.
এ সংক্রান্ত একটি ফতোয়াঃ
আমাদের সমাজে তোকে ছেড়ে দিলাম বাক্যটি তালাকের জন্যই ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী উক্ত কথা দ্বারা তালাকের উদ্দেশ্য না থাকলেও আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়েছে। এখন আপনি পুণরায় সুষ্ঠুরূপে ঘর-সংসার করতে চাইলে ইদ্দতের মধ্যে রজআত অর্থাৎ স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবেন।
রজআতের উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে, ইদ্দতের ভিতরে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করা। যেমন, এ কথা বলবেন যে, তোমাকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করলাম। এর দ্বারাই আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পুণঃবহাল হয়ে যাবে।
আর যদি আপনি ইদ্দতের ভিতরে (ঋতুমতী মহিলার জন্য তিনটি হায়েয অতিক্রান্ত হওয়া পর্যন্ত আর অন্তঃসত্তা মহিলার জন্য সন্তান প্রসব পর্যন্ত) রজআত না করেন তবে ইদ্দত শেষ হওয়ার সাথে সাথে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আবার ঘর-সংসার করতে
চাইলে নতুন মোহর ধার্য করে দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে নতুন করে বিবাহ করতে হবে।
প্রকাশ থাকে যে, এই স্ত্রীকে ইদ্দতের ভিতরে কিংবা ইদ্দত শেষ হয়ার পর পুণরায় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করলে পরবর্তীতে আপনি দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। তাই পরবর্তীতে এই স্ত্রীকে কখনো দুই তালাক দিলে পূর্বের এক তালাকের সাথে মিলে তিন তালাক হয়ে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নতুন করে বিবাহ করেও একত্রিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না। তাই সামনে থেকে তালাক বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালাক দেওয়া অন্যায়। অনেক ক্ষেত্রে তালাক স্ত্রী-সন্তানের উপর এবং নিজের উপরও জুলুমের কারণ হয়। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা কর্তব্য।
বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৪৩১; আলবাহরুর রায়েক ৩/৩০০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৪৬৩; রদ্দুল মুহতার ৩/২৯৯; আলবাহরুররায়েক ৪/৫০; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৮৮)
.
★তোমাকে আযাদ করে দিলাম।
★তোমাকে মুক্ত করে দিলাম।
★তোমাকে ছেড়ে দিলাম।
★তুমি মুক্ত।
★তুমি আযাদ।
,
এই বাক্য বলার সময় যদি সেই হালত তালাক সংক্রান্ত হয়,অন্য কোনো অবস্থা যদি সেখানে না হয়ে থাকে, তাহলে সাথে সাথে তালাকে রজয়ী পতিত হবে।
নিয়তের প্রয়োজন নেই।
,
অর্থাৎ ব্যবহারিক স্থলে তালাকের অর্থ নেওয়া ব্যাতিত অন্য কোনো অর্থের যদি ইঙ্গিত সেখানে না থাকে,তাহলে এগুলো তালাকের আলফাযে ছরীহ তথা স্পষ্ট বাক্যের ন্যায়।
নিয়ত না করলেও তালাকে রজয়ী পতিত হয়ে যাবে
,
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 63306 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য।