জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
পায়ের উপর পা তুলে বসা নাজায়েজ নয়।
,
(০২)
হাত তালি দেয়া জায়েজ নয়।
এটি মূলত ইহুদী খৃষ্টানদের আনন্দ প্রকাশ পদ্ধতি। আর বিধর্মীদের পদ্ধতি অনুসরণ জায়েজ নয়। তাই একাজ পরিত্যাজ্য। {কেফায়াতুল মুফতী-৯/১১৬}
এটি একটি অযথা কাজ। আর অযথা কাজ ইসলামে জায়েজ নয়।
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا ۚ أُولَٰئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ [٣١:٦
একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং উহাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি। {সূরা লুকমান-৬}
فى رد المحتار- ( قوله وكره كل لهو ) أي كل لعب وعبث فالثلاثة بمعنى واحد كما في شرح التأويلات والإطلاق شامل لنفس الفعل ، واستماعه كالرقص والسخرية والتصفيق وضرب الأوتار من الطنبور والبربط والرباب والقانون والمزمار والصنج والبوق ، فإنها كلها مكروهة لأنها زي الكفار ، واستماع ضرب الدف والمزمار وغير ذلك حرام وإن سمع بغتة يكون معذورا ويجب أن يجتهد أن لا يسمع قهستاني (رد المحتار- كتاب الحظر والإباحة، فصل في البيع-6/395
সারমর্মঃ
প্রত্যেক অবান্তর,অনার্থক কাজই মাকরুহ।
ঢোল,তবলা,বাজনা ইত্যাদি সবই মাকরুহ।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে (আবু দাউদ শরীফ, হাদিস নং-৪০৩৩, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদিস নং-২৯৬৬, মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস নং-২০৯০৮৬)
(০৩)
ডেন্টাল ব্রেস (ইংরেজি: Dental braces) যা অর্থোডোন্টিক ব্রেস (orthodontic braces) বা সাধারণভাবে ব্রেস (braces) নামেও পরিচিত। এটি একটি ডিভাইস যা দাঁতের পাটি উপরে নিচে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে ব্যবহৃত হয়। সামঞ্জস্যপূর্ণ দাঁতের পাটি বিন্যাসের ফলে নিখুত ও সুবিধাজনক ভাবে কোনোকিছু কামড়ে ধরতে যাদের সমস্যা হয়, তাদের চিকিৎসার জন্যই মূলত ডেন্টাল ব্রেস ব্যবহৃত হয়।
★যদি কোনো মানুষ কষ্ট দূরীকরণার্তে বা কোনো দোষ দূরীকরণার্তে চায় (উক্ত দোষ নিজের মাধ্যমে আসুক বা কোনো অসুস্থতা বা দুর্ঘটনাজনিত হোক) তাহলে এমতাবস্থায় দাঁতে ব্রেস লাগানো জায়েয।
যেমন উরফুজা ইবনে আস'আদ রাযি থেকে বর্ণিত
عن ﻋﺮﻓﺠﺔ ﺑﻦ ﺃﺳﻌﺪ ﺃﻧﻪ ﻗﻄﻊ ﺃﻧﻔﻪ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻜُﻼﺏ، ﻓﺎﺗﺨﺬ ﺃﻧﻔﺎً ﻣﻦ ﻓﻀﺔ ﻓﺄﻧﺘﻦ ﻋﻠﻴﻪ، ﻓﺄﻣﺮﻩ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﺎﺗﺨﺬ ﺃﻧﻔﺎً ﻣﻦ ﺫﻫﺐ
কিলাবের যুদ্ধে উনার নাক কর্তিত হয়ে যায়,তখন তিনি রূপার নাক তৈরী করে লাগিয়ে নেন।কিন্তু উক্ত নাকে দুর্গন্ধ হয়ে যায়,যে জন্য নবীজী সাঃ উনাকে সর্ণের নাক বাধার অনুমিত প্রদান করেন।অতঃপর তিনি সর্ণের নাক বেধে নেন।(সুনানে তিরমিযি-১৭৭০)
★★★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কষ্টদায়ক বা অস্বস্তিকর হওয়ার দরুণ আপনি দাঁতে ব্রেস লাগাতে পারবেন।
তবে সৌন্দর্য্য গ্রহণের নিমিত্তে আপনি দাঁতে ব্রেস ব্যবহার করতে পারবেন না।
আরো জানুনঃ
(০৪)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
الحديث المشهور عن سلمان الفارسي -رضي الله عنه- أخرجه عنه جماعة منهم ابن خزيمة في صحيحه، وابن شاهين في فضائل رمضان، والبيهقي في الشعب وفي فضائل الأوقات.
وبوب له ابن خزيمة بقوله: (بَابُ فَضَائِلِ شَهْرِ رَمَضَانَ، إِنَّ صَحَّ الْخَبَرُ.) ولفظه عنده: عَنْ سَلْمَانَ قَالَ: خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي آخِرِ يَوْمٍ مِنْ شَعْبَانَ، فَقَالَ: "أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ أَظَلَّكُمْ شَهْرٌ عَظِيمٌ، شَهْرٌ مُبَارَكٌ، شَهْرٌ فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ، جَعَلَ اللَّهُ صِيَامَهُ فَرِيضَةً، وَقِيَامَ لَيْلِهِ تَطَوُّعًا. مَنْ تَقَرَّبَ فِيهِ بِخَصْلَةٍ مِنَ الْخَيْرِ، كَانَ كَمَنْ أَدَّى فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ، وَمَنْ أَدَّى فِيهِ فَرِيضَةً، كَانَ كَمَنْ أَدَّى سَبْعِينَ فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ. وَهُوَ شَهْرُ الصَّبْرِ، وَالصَّبْرُ ثَوَابُهُ الْجَنَّةُ، وَشَهْرُ الْمُوَاسَاةِ، وَشَهْرٌ يَزْدَادُ فِيهِ رِزْقُ الْمُؤْمِنِ، مَنْ فَطَّرَ فِيهِ صَائِمًا كَانَ مَغْفِرَةً لِذُنُوبِهِ، وَعِتْقَ رَقَبَتِهِ مِنَ النَّارِ، وَكَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْتَقِصَ مِنْ أَجْرِهِ شَيْءٌ". قَالُوا: لَيْسَ كُلُّنَا نَجِدُ مَا يُفَطِّرُ الصَّائِمَ. فَقَالَ: "يُعْطِي اللَّهُ هَذَا الثَّوَابَ مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا عَلَى تَمْرَةٍ، أَوْ شَرْبَةِ مَاءٍ، أَوْ مَذْقَةِ لَبَنٍ. وَهُوَ شَهْرٌ أَوَّلُهُ رَحْمَةٌ، وَأَوْسَطُهُ مَغْفِرَةٌ، وَآخِرُهُ عِتْقٌ مِنَ النَّارِ. مَنْ خَفَّفَ عَنْ مَمْلُوكِهِ غَفَرَ اللَّهُ لَهُ، وَأَعْتَقَهُ مِنَ النَّارِ. وَاسْتَكْثِرُوا فِيهِ مِنْ أَرْبَعِ خِصَالٍ: خَصْلَتَيْنِ تُرْضُونَ بِهِمَا رَبَّكُمْ، وَخَصْلَتَيْنِ لَا غِنًى بِكُمْ عَنْهُمَا. فَأَمَّا الْخَصْلَتَانِ اللَّتَانِ تُرْضُونَ بِهِمَا رَبَّكُمْ: فَشَهَادَةُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَتَسْتَغْفِرُونَهُ. وَأَمَّا اللَّتَانِ لَا غِنًى بِكُمْ عَنْهُمَا: فَتَسْأَلُونَ اللَّهَ الْجَنَّةَ، وَتَعُوذُونَ بِهِ مِنَ النَّارِ.
وَمَنْ أَشْبَعَ فِيهِ صَائِمًا، سَقَاهُ اللَّهُ مِنْ حَوْضِي شَرْبَةً لَا يَظْمَأُ حَتَّى يَدْخُلَ الْجَنَّةَ.
সারমর্মঃ
ইবনে খুযাইমা তাঁর সহিহ গ্রন্থে সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসের শেষদিন আমাদের উদ্দেশ্য খোতবা দিলেন। তিনি বললেন: “হে লোক সকল! এক মহান মাস, এক মুবারকময় মাস তোমাদের উপর ছায়া বিস্তার করেছে...”। [আল-হাদিস] এই হাদিসে রয়েছে “এ মাসের প্রথমভাগ হচ্ছে- রহমত। দ্বিতীয় ভাগ হচ্ছে- মাগফিরাত। আর তৃতীয় ভাগ হচ্ছে- জাহান্নাম থেকে নাজাত”
(০৫)
কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে,আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻳَﺎ ﻧِﺴَﺎﺀ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﻟَﺴْﺘُﻦَّ ﻛَﺄَﺣَﺪٍ ﻣِّﻦَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀ ﺇِﻥِ ﺍﺗَّﻘَﻴْﺘُﻦَّ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﺨْﻀَﻌْﻦَ ﺑِﺎﻟْﻘَﻮْﻝِ ﻓَﻴَﻄْﻤَﻊَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻓِﻲ ﻗَﻠْﺒِﻪِ ﻣَﺮَﺽٌ ﻭَﻗُﻠْﻦَ ﻗَﻮْﻟًﺎ ﻣَّﻌْﺮُﻭﻓًﺎ
(তরজমা) তোমরা (পর পুরুষের সাথে) বাক্যালাপে কোমলতা অবলম্বন কর না। যাতে এরূপ লোকের অন্তরে আকাঙ্ক্ষা (সঞ্চার) হয়, যার অন্তরে কুপ্রবৃত্তি রয়েছে। (সূরা আহযাব : ৩২)
নারীদের তেলাওয়াত পর-পুরুষের জন্য শ্রবণ করা জায়েয নয়।(আহসানুল ফাতাওয়া-৪/২০০)
মহিলারা সব নামাজেই এতটুকু আওয়াজে কিরাআত পড়বে,যাতে আওয়াজ নিজ কান পর্যন্ত পৌছতে পারে।
,
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 13315 নং ফয়োয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে
মহিলারা সব নামাজেই আস্তে কেরাত পড়বে।
তারা জন্য জোড়ে আওয়াজে কিরাআত পড়া নিষেধ।
কেহ যদি পড়ে,আর তার আওয়াজ গায়রে মাহরাম পুরুষ পর্যন্ত পৌছে,তাহলে সে গুনাহগার হবে।
তবে তারা নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
কোনো সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে শামী ১/৫০৪)
,
★★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আস্তে কিরাআতের নামাজে যদি মহিলারা তিনটি ছোট আয়াত বা একটি লম্বা আয়াত সমপরিমাণ জোড়ে পড়ে,তাহলে মহিলাদের উপরেও সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।