وَلِلْحَافِظِ ابْنِ الْقَيِّمِ الْحَنْبَلِيِّ رِسَالَةٌ فِي طَلَاقِ الْغَضْبَانِ قَالَ فِيهَا: إنَّهُ عَلَى ثَلَاثَةِ أَقْسَامٍ: أَحَدُهَا أَنْ يَحْصُلَ لَهُ مَبَادِئُ الْغَضَبِ بِحَيْثُ لَا يَتَغَيَّرُ عَقْلُهُ وَيَعْلَمُ مَا يَقُولُ وَيَقْصِدُهُ، وَهَذَا لَا إشْكَالَ فِيهِ. وَالثَّانِي أَنْ يَبْلُغَ النِّهَايَةَ فَلَا يَعْلَمُ مَا يَقُولُ وَلَا يُرِيدُهُ، فَهَذَا لَا رَيْبَ أَنَّهُ لَا يَنْفُذُ شَيْءٌ مِنْ أَقْوَالِهِ.
الثَّالِثُ مَنْ تَوَسَّطَ بَيْنَ الْمَرْتَبَتَيْنِ بِحَيْثُ لَمْ يَصِرْ كَالْمَجْنُونِ فَهَذَا مَحَلُّ النَّظَرِ، وَالْأَدِلَّةُ عَلَى عَدَمِ نُفُوذِ أَقْوَالِهِ. اهـ. مُلَخَّصًا مِنْ شَرْحِ الْغَايَةِ الْحَنْبَلِيَّةِ، لَكِنْ أَشَارَ فِي الْغَايَةِ إلَى مُخَالَفَتِهِ فِي الثَّالِثِ حَيْثُ قَالَ: وَيَقَعُ الطَّلَاقُ مِنْ غَضَبٍ خِلَافًا لِابْنِ الْقَيِّمِ اهـ وَهَذَا الْمُوَافِقُ عِنْدَنَا لِمَا مَرَّ فِي الْمَدْهُوش
অর্থ- হাফিজ ইবনুল ক্বাঈয়ুম রাহ "রিসালাতুন ফি তালাকিল গাদবান"নামক গ্রন্থে বলেনঃ রাগান্বিত অবস্থায় তালাক তিন প্রকারঃ
- রাগের প্রথমিক কিছু চিন্থ প্রকাশ পাবে,তবে তার জ্ঞানে কোনো পরিবর্তন আসবে না,এবং সে যা কিছু বলবে তা বুঝতে পারবে।এমতাবস্থায় তলাক পতিত হবে।এতে কোনো সন্দেহ নেই।
- চুরান্ত পর্যায়ে রাগান্বিত হওয়া অর্থ্যাৎ হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলা।সে যা বলছে কিছুই বুঝতে পারছেনা।এবং যা কিছু এখন তার মুখ থেকে বের হচ্ছে,তা বলারও আপাতত কোনো ইচ্ছা না।এমতাবস্থায় তালাত পতিত হবে না।এবং এতে কোনো সন্দেহ নেই।
- উক্ত দু-অবস্থার মধ্যবর্তি অবস্থা,
মূলত এ তৃতীয় অবস্থার হুকুম নিয়েই ফুকাহায়ে কেরামদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে।
ইবনুল কাইয়্যিম রাহ, এর মতে তালাক পতিত না হওয়াটাই যুক্তিসংগত।তবে "গায়তুল হাম্বলীয়্যাহ" নামক কিতাবে হাম্বলী মাযহাবের ফাতাওয়া তার উল্টো বর্ণিত রয়েছে।তথায় তালাক পতিত হওয়ার কথাই উল্লেখ রয়েছে।এবং এ অভিমতটাই আমাদের মতে কুরআন-সুন্নাহর সাথে সবচেয়ে বেশী সামঞ্জস্যশীল।(রদ্দুল মহতার,খঃ৩-পৃঃ২৪৪)ইমদাদুল ফাতাওয়া -২/৪০৫
,
তালাক শব্দ মারাত্মক শব্দ।
হেসে খেলে দিলেও তাহা পতিত হয়।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}
★শরীয়তের বিধান হলো যদি কেহ রাগের বশে তালাক দেয়, তাহলে তালাক হয়ে যাবে।
আরো জানুন
https://ifatwa.info/3190/
স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে দেবার পর আফসোস করে কোন ফায়দা নেই।
এক্ষেত্রে সূরত একটিই বাকি আছে। তা হল, স্ত্রীর অন্যত্র বিবাহ হতে হবে।তারপর সেই স্বামীর সাথে স্বাভাবিক ঘর সংসার করতে হবে। এমনকি শারিরীক সম্পর্ক হতে হবে। তারপর উক্ত স্বামী যদি সেই স্ত্রীকে তালাক দেয়, তারপর ইদ্দত শেষ হয়, তাহলেই কেবল আপনি আবার উক্ত (১ম) স্বামীর সাথে বিবাহ বসতে পারবেন। এবং আবার ঘর সংসার করতে পারবেন। এছাড়া দ্বিতীয় কোন রাস্তা খোলা নেই।
দুনিয়া একেবারেই ক্ষণস্থায়ী। দুনিয়ার মোহ মায়ায় আমরা যেন অনন্ত আখেরাতকে বরবাদ না করি। আল্লাহর বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন না করি। প্রতিটি বিধানকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করি।
আল্লাহ তাআলা আপনার জীবনকে সহজ করে দিন। ধৈর্য ধারণ করুন। আমীন।
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ [٢:٢٣٠]
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে,তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়,তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা;যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। [সূরা বাকারা-২৩০]
وقال اللي عن نافع كان ابن عمر إذا سئل عمن طلق ثلاثا قال لو طلقت مرة أو مرتين فأن النبي صلى الله عليه و سلم أمرني بهذا فإن طلقتها ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غيرك
হযরত নাফে রহ. বলেন,যখন হযরত ইবনে উমর রাঃ এর কাছে ‘এক সাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক পতিত হওয়া না হওয়া’ (রুজু‘করা যাবে কিনা) বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো,তখন তিনি বলেন-“যদি তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো তাহলে ‘রুজু’ [তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই ফিরিয়ে আনা] করতে পার। কারণ,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরকম অবস্থায় ‘রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন। যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে, সে তোমাকে ছাড়া অন্য স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত। {সহীহ বুখারী-২/৭৯২, ২/৮০৩}
عن مجاهد قال كنت عند ابن عباس فجاء رجل فقال إنه طلق امرأته ثلاثا. قال فسكت حتى ظننت أنه رادها إليه ثم قال ينطلق أحدكم فيركب الحموقة ثم يقول يا ابن عباس يا ابن عباس وإن الله قال (وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا) وإنك لم تتق الله فلم أجد لك مخرجا عصيت ربك وبانت منك امرأتك
অর্থ: হযরত মুজাহিদ রহঃ. বলেন,আমি ইবনে আব্বাস রাঃ-এর পাশে ছিলাম। সে সময় এক ব্যক্তি এসে বলেন-‘সে তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ চুপ করে রইলেন। আমি মনে মনে ভাবছিলাম-হয়ত তিনি তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার কথা বলবেন (রুজু করার হুকুম দিবেন)। কিছুক্ষণ পর ইবনে আব্বাস রা. বলেন,তোমাদের অনেকে নির্বোধের মত কাজ কর;[তিন তালাক দিয়ে দাও!] তারপর ‘ইবনে আব্বাস! ইবনে আব্বাস! বলে চিৎকার করতে থাক। শুনে রাখ আল্লাহ তা‘য়ালা বাণী-“যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘য়ালাকে ভয় করে আল্লাহ তা‘য়ালা তার জন্য পথকে খুলে দেন। তুমিতো স্বীয় রবের নাফরমানী করেছো [তিন তালাক দিয়ে]। এ কারণে তোমার স্ত্রী তোমার থেকে পৃথক হয়ে গেছে। {সুনানে আবু দাউদ-১/২৯৯, হাদীস নং-২১৯৯, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৪৭২০, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১৪৩}
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তিন তালাক পতিত হয়েছে ।
সেই স্বামীর সাথে উক্ত মহিলার ঘর সংসার সম্পূর্ণ হারাম।
এতে যেনার গুনাহ হবে।
সন্তান হলে সেটি হারাম সন্তান হবে।
,
ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক সে ঐ বাচ্চা নিয়ে যেতে পারবে।
অন্যত্রে বিবাহ বসার আগ পর্যন্ত সে তার লালন পালন করতে পারবে।
এক্ষেত্রে তার সেই স্বামী না মানলে সে আইনী সহায়তা নিতে পারে।
তালাকের পর সন্তানের লালন পালন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ
https://www.ifatwa.info/11383/