ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
যে কোনো মুসলমানকে চাই সে জীবিত হোক বা মৃত হোক নফল ইবাদতের সওয়াব পৌঁছানো যাবে, এবং সওয়াব পৌছবে।
আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ.এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা এভাবে তুলে ধরেন।তিনি বলেনঃ
ﻭﺍﻷﺻﻞ ﻓﻴﻪ ﺃﻥ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻟﻪ ﺃﻥ ﻳﺠﻌﻞ ﺛﻮﺍﺏ ﻋﻤﻠﻪ ﻟﻐﻴﺮﻩ ﺻﻼﺓ ﺃﻭ ﺻﻮﻣﺎ ﺃﻭ ﺻﺪﻗﺔ ﺃﻭ ﻗﺮﺍﺀﺓ ﻗﺮﺁﻥ ﺃﻭ ﺫﻛﺮﺍ ﺃﻭ ﻃﻮﺍﻓﺎ ﺃﻭ ﺣﺠﺎ ﺃﻭ ﻋﻤﺮﺓ ﺃﻭ ﻏﻴﺮ ﺫﻟﻚ ﻋﻨﺪ ﺃﺻﺤﺎﺑﻨﺎ ﻟﻠﻜﺘﺎﺏ ﻭﺍﻟﺴﻨﺔ
মূলকথা হলঃ মানুষ তার আমলের সওয়াব অন্যর জন্য দিতে পারবে, সে আমল চাই নামায/রোজা/সদকা/কোরআন তেলাওয়াত/যিকির/তাওয়াফ/হজ্ব/উমরা বা অন্য কিছুই হোকনা কেন।
এটা আমাদের উলামাদের কাছে কোরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।(বাহরুর রায়েক,হজ্ব অধ্যায়;৩/৬৩)
যেমনঃ- আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺟَﺎﺅُﻭﺍ ﻣِﻦ ﺑَﻌْﺪِﻫِﻢْ ﻳَﻘُﻮﻟُﻮﻥَ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟَﻨَﺎ ﻭَﻟِﺈِﺧْﻮَﺍﻧِﻨَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺳَﺒَﻘُﻮﻧَﺎ ﺑِﺎﻟْﺈِﻳﻤَﺎﻥِ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺠْﻌَﻞْ ﻓِﻲ ﻗُﻠُﻮﺑِﻨَﺎ ﻏِﻠًّﺎ ﻟِّﻠَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺭَﺅُﻭﻑٌ ﺭَّﺣِﻴﻢٌ
তরজমাঃআর এই সম্পদ তাদের জন্যে, যারা তাদের পরে আগমন করেছে। তারা বলেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে এবং ঈমানে আগ্রহী আমাদের ভ্রাতাগণকে ক্ষমা কর এবং ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের পালনকর্তা, আপনি দয়ালু, পরম করুণাময়।(সূরাঃ-হাশর-১০)
অত্র আয়াতে ঐ সমস্ত মুসলমান ভাইদের জন্য মাগফিরাতের দুআ করা হচ্ছে,এবং দু'আ করতে মুসলমাদেরকে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে যারা এ নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে অনেক আগেই চলে গেছেন।
আল্লাহ তা'আলা আরও বলেনঃ-
ﻓَﺎﻋْﻠَﻢْ ﺃَﻧَّﻪُ ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺍﺳْﺘَﻐْﻔِﺮْ ﻟِﺬَﻧﺒِﻚَ ﻭَﻟِﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻭَﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕِ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﻳَﻌْﻠَﻢُ ﻣُﺘَﻘَﻠَّﺒَﻜُﻢْ ﻭَﻣَﺜْﻮَﺍﻛُﻢْ
জেনে রাখুন, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। ক্ষমাপ্রার্থনা করুন, আপনার ক্রটির জন্যে এবং মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্যে। আল্লাহ, তোমাদের গতিবিধি ও অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞাত।(সূরাঃ-মুহাম্মদ-১৯)
হাদীসে ঈসালে সওয়াব।
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺇﺳﻤﺎﻋﻴﻞ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﻲ ﻣﺎﻟﻚ ﻋﻦ ﻫﺸﺎﻡ ﺑﻦ ﻋﺮﻭﺓ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﺃﻥ ﺭﺟﻼ ﻗﺎﻝ ﻟﻠﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺇﻥ ﺃﻣﻲ ﺍﻓﺘﻠﺘﺖ ﻧﻔﺴﻬﺎ ﻭﺃﺭﺍﻫﺎ ﻟﻮ ﺗﻜﻠﻤﺖ ﺗﺼﺪﻗﺖ ﺃﻓﺄﺗﺼﺪﻕ ﻋﻨﻬﺎ ﻗﺎﻝ ﻧﻌﻢ ﺗﺼﺪﻕ ﻋﻨﻬﺎ-
তরজমাঃ হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত, একব্যক্তি নবীজী সাঃ কে এসে বললঃআমার মা হঠাৎ মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছেন,আমি মনে করি যদি তিনি কথা বলতেন,তাহলে তিনি সদকা করতেন,আমি তার পক্ষ্য থেকে কি সদকা করতে পারব? নবীজী সাঃ তদুত্তরে বললেনঃহ্যা পারবে।তুমি তার পক্ষ্য থেকে সদকা কর।(সহীহ বুখারী-২৬০৯) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/3565
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) ঈসালে সওয়াবের নিয়তে কাউকে কুরআন পড়ে দেওয়া যাবে। সুতরাং কেউ ২০ পারা পড়ার পর তার হায়েয শুরু হলে তার অবশিষ্ট ১০ অন্য কেউ পড়ে তাকে সওয়াব পাঠিয়ে দিতে পারবে।
(২) এভাবে টাকার বিনিময়ে হলে কুরআন খতম জায়েয নয়। হ্যা এমনিতেই বিনিময়হীন যদি কেউ একজন বা একাধিকজন কুরআন খতম করে দেয়, তাহলে এটা হারাম হবে না।