আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
292 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (19 points)
আসসালামু  আলাইকুম
সম্মানিত  মুফতি  সাহেব
১) আমি জেনেছি  স্ত্রীকে মায়ের  সাথে তুলনা করলে নাকি স্ত্রী  তালাক হয়ে যায়,এটা কি আমি ঠিক জেনেছি?
"স্বামী  যদি  স্ত্রীকে বলে তোমার চুল আমার মায়ের মতো লম্বা, তুমি আমার  মায়ের মতো মোটা,লম্বা।

স্বামী  যদি স্ত্রীকে বলে তোমার  হাতের রান্না  আমার মায়ের  মতো।
 এইসব বললেও স্ত্রী  তালাক হয়ে যাবে?

২) ভুলে অথবা দুষ্টমি করে স্ত্রীকে বোন অথবা মা বললেও কি স্ত্রী  তালাক হয়ে যায়???

৩) রাগের সময় স্বামী  যদি স্ত্রীকে বলে " আরে শালা! চুপ করো....
স্ত্রীকে শালা বলাতে বিয়ের কোন সমস্যা  হয়?

1 Answer

0 votes
by (598,080 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
الَّذِينَ يُظَاهِرُونَ مِنكُم مِّن نِّسَائِهِم مَّا هُنَّ أُمَّهَاتِهِمْ إِنْ أُمَّهَاتُهُمْ إِلَّا اللَّائِي وَلَدْنَهُمْ وَإِنَّهُمْ لَيَقُولُونَ مُنكَرًا مِّنَ الْقَوْلِ وَزُورًا وَإِنَّ اللَّهَ لَعَفُوٌّ غَفُورٌ
তোমাদের মধ্যে যারা তাদের স্ত্রীগণকে মাতা বলে ফেলে, তাদের স্ত্রীগণ তাদের মাতা নয়। তাদের মাতা কেবল তারাই, যারা তাদেরকে জন্মদান করেছে। তারা তো অসমীচীন ও ভিত্তিহীন কথাই বলে। নিশ্চয় আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল।

وَالَّذِينَ يُظَاهِرُونَ مِن نِّسَائِهِمْ ثُمَّ يَعُودُونَ لِمَا قَالُوا فَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مِّن قَبْلِ أَن يَتَمَاسَّا ذَلِكُمْ تُوعَظُونَ بِهِ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
যারা তাদের স্ত্রীগণকে মাতা বলে ফেলে, অতঃপর নিজেদের উক্তি প্রত্যাহার করে, তাদের কাফফারা এই একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটি দাসকে মুক্তি দিবে। এটা তোমাদের জন্যে উপদেশ হবে। আল্লাহ খবর রাখেন তোমরা যা কর।

فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ مِن قَبْلِ أَن يَتَمَاسَّا فَمَن لَّمْ يَسْتَطِعْ فَإِطْعَامُ سِتِّينَ مِسْكِينًا ذَلِكَ لِتُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ وَلِلْكَافِرِينَ عَذَابٌ أَلِيمٌ
যার এ সামর্থ্য নেই, সে একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একাদিক্রমে দুই মাস রোযা রাখবে। যে এতেও অক্ষম হয় সে ষাট জন মিসকীনকে আহার করাবে। এটা এজন্যে, যাতে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত শাস্তি। আর কাফেরদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণা দায়ক আযাব।(সূরা মুজাদালাহ-২-৪)
শুধুমাত্র মা বললে যিহার হবে না।বরং মা বা মায়ের কোনো অঙ্গের সাথে স্ত্রীকে তাশবিহ বা উপমা দিতে হবে।হ্যা এটা অবশ্যই ঠিক যে স্ত্রীকে মা,মেয়ে,বোন ইত্যাদি বলে ডাকা মাকরুহ।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন।
প্রশ্নে বর্ণিত সূরতে যিহার হয়ে যাবে,যেহেতু তিনি তার স্ত্রীকে নিজ মায়ের "মতো" বলেছেন।সুতরাং স্ত্রী স্বামীর উপর হারাম হয়ে যাবে।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-১৩/৩২৯)

যিহার সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/509

এখন করণীয় হল,কাফফারা দিতে হবে।যদিও উচিৎ ছিল,যিহার করার পর কাফফারা আদায় পূর্বক স্ত্রীর নিকটবর্তী হওয়া।

যিহারের কাফফারা হল,
كفارة الفطر، وكفارة الظهار واحدة ، وهي عتق رقبة مؤمنة أو كافرة فإن لم يقدر على العتق فعليه صيام شهرين متتابعين، وإن لم يستطع فعليه إطعام ستين مسكينا كل مسكين صاعا من تمر أو شعير أو نصف صاع من حنطة
রোযা এবং যিহার উভয়ের কাফ্ফারা একিই।
তা এই যে,একটা গোলাম আযাদ করা চায় গোলাম ঈমানদ্বার হোক বা কাফির হোক।যদি গেলাম আযাদ করা অসম্ভব হয়,তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখতে হবে। যদি রোযা রাখাও অসম্ভব হয়, তাহলে ষাটজন মিসকিন খাওয়াতে হবে। প্রত্যেক মিসকিনকে যব বা কিসমিস হলে এক সা' আর গম হলে অর্ধেক সা' করে দিতে হবে।{ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২১৫}বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/102

(১)
স্ত্রীকে মায়ের অঙ্গের সাথে তুলনা করলে যিহার হয়, আর যিহার হলে তার কাফফারা না দিলে এক তালাক বায়েন পতিত হবে। 

(২)ভুলে অথবা দুষ্টমি করে স্ত্রীকে বোন অথবা মা বললে যিহার হবে না। তালাকও হবে না। 

(৩) রাগের সময় স্বামী  যদি স্ত্রীকে বলে " আরে শালা! চুপ করো.... এভাবে স্ত্রীকে শালা বললে যিহারও হবে না,এবং তালাকও হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...