আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
338 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (115 points)
নতুন দ্বীনের পথে চলতে গেলে চারপাশের মানুষ, সমাজ তাদের আচরণ দেখে নিউ দ্বীনের ওরা বাধার যেমন সৃষ্টি হয় তেমনি তারা সাধারণ জীবন থেকে বিমুখ হয়ে যায়।সাধারণ জীবনেও যে ইসলাম পালন করা যায় তা ভুলে যায়।আসলে অনেক কারণ থাকতে পারে।কিন্তু আমার মতে তারা বেশি জ্ঞান অর্জন করতে চাই।দাওয়াহ দিতে চায়।কিন্তু সেই জ্ঞান অনুযায়ী আমল করেনা। আমি বলছিনা জ্ঞান অর্জন খারাপ!কিন্তু যতটুক জ্ঞান অর্জন করছি তা যদি আমল ই না করি তাহলে সেই জ্ঞান এর জন্য কি আমরা আল্লাহর কাছে পাঁকড়াও হবো না??যারা বেশি জানে তারাই তো বেশি পাঁকড়াও হবে।কারণ তারা জেনেও কিছু করলো না!এখন ফেক্ট হচ্ছে দৈনন্দিন জীবনে যেগুলা মেয়েদের উপর ফরজ বেশি সেগুলার দিকে তারা কনসেনট্রেশান না দিয়ে তারা বেশি দাওয়াহর দিকে ফোকাস করে।অর্থাৎ নামায এর ফরজ,ওয়াজিব তারা জানেনা।সকাল বিকালের আমল,রাতের আমল,শুক্রবার এর আমল এছাড়া মা বাবার সেবা,আত্মীয়দের সাথে ভাল ব্যবহার  যা তারা করেনা!আমি কিন্তু বারবার বলছি আমার কথা দ্বারা কেউ এইটা ভেবে নিয়েন না যে জ্ঞান অর্জন করতে হবেনা।অবশ্যই করতে হবে।এইটা তো ফরজ ভাই!কিন্তু দৈনন্দিন জীবনের উপর আমল যে আপনারা করছেন না??ফরজ কাজ আগে ঠিক করছেন না।দেখা যাবে ফেসবুকে কোনো আপুর পোস্ট পড়ে জ্ঞান অর্জন করতে গিয়ে আপনি ফরজ নামায মিস করে দিলেন!নিজের লাইফকেই আগে ঠিক করছেন না তাহলে দাওয়াহর মাধ্যমে অন্যের লাইফকে কিভাবে ঠিক করবেন?আপনি যদি আগে নিজেকে আগে ঠিক করেন মোট কথা নিজের লাইফের উপর ফোকাসড থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি আগামীতে দাওয়াহর জন্য ও পড়ালেখা করবেন।আমরা লং টার্ম গোল সেট করার চক্করে শর্ট গোল সেট করতে চাইনা বলতে গেলে এতো গুরুত্ব দি না!এইজন্যই আমরা সবসময় জ্ঞান অর্জন করতে থাকি আমল করিনা।এভাবেই মাঝপথে থেমে যায় বা পরে ঈমান নষ্ট করে ফেলি।অনেকের অহংকার ও আসতে পারে আল্লাহু আ'লাম। ওই যে কঠিন কাজ করতে গিয়ে সহজ গুলাকে গুরুত্ব দিলাম না।নামায, রোজা,মা বাবার সেবা এগুলা ভাল করে পাকাপোক্ত করলাম না!এতে দেখা গেলো দিনশেষে দৈনন্দিন জীবনের আমল ও করতে পারলাম না!!নিজের অবস্থান ঠিক করুন!এরপর মাঠে নামুন!নিজেকে ওভাবে গড়ে তুলুন!ফেসবুকে পোস্ট না করে,একেই একমাত্র জ্ঞান অর্জন এর মাধ্যম না বানিয়ে আগে নিজের লাইফ নিয়ে জ্ঞান অর্জন করুন!আরেকদিকে যদি ভাবি দেখা যাবে,আপনি নিজের লাইফকে ঠিক করতে গিয়ে কিন্তু জ্ঞান অর্জন করবেন!কেম্নে?ধরেন আপনার নামায ঠিক করতে হচ্ছে।এই জন্য আপনি নামাযের সহিহ নিয়ম কানুন,ফরজ কয়টি ওয়াজিব কয়টি এগুলা জেনে নিলেন।এরপর নিজে সেই বিষয় এ আমল করলেন!এখন ধরেন কেউ আপনার সামনে ভুল করলো নামাযে।আপনি কি আপনার জ্ঞান অনুযায়ী তাকে বলতে পারবেন না যে এইটা তুমি ভুল পড়েছো।এখন সে বল্লো কিভাবে হলো ভুল?প্রমাণ দাও। এখন ওই যে আপনি জ্ঞান অর্জন করলেন ওইটা প্রমাণ হিসেবে দেখাতে পারেন।প্রয়োজনে কোনো আলেমের বক্তব্য শুনিয়ে দেন!তো এইদিক দিয়েও পড়ালেখা করে কিন্তু আপনি তাদের দৈনন্দিন জীবনের ভুল ধরিয়ে দিতে পারলেন!এতে কি হলো এভাবে আপনি জ্ঞান অর্জন করলেন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ফরজ কাজ গুলা আগে ঠিক করিয়ে দিলেন।এরপর যদি আপনি তাদের ইসলাম ধর্মের অন্যান্য শিক্ষা দেন তারা আপনার কথা শুনবে!আরেকটা বিষয় খেয়াল করুন।জ্ঞান অর্জন করছেন এরপর নিজে সেই আমল টা করছেন তাহলে কি এই জ্ঞান টা রিচেক হচ্ছে না?জ্ঞান টা মনে থাকবে কি থাকবে না বেশি??কিন্তু বেশি গুরুত্ব দিবেন আগে নিজের আমল করার।এভাবে আপনি সুন্নাহ আমল গুলাও ঠিক করে দিলেন।এতে দেখবেন জীবনের অনেক কাজ সুন্দর ও সহজ হয়ে যাচ্ছে।আমাদের রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শিক্ষা কতই না উত্তম!উনার করা কাজ গুলা যদি আমরা করি অর্থাৎ উনার আচার আচরণ,কাজকর্ম,ইত্যাদি এগুলা যদি ফলো করি তাহলে আমরা সেগুলা ইংশা আল্লহ আমল করে নিলাম।এরপর এই কাজ গুলা দেখে কি অন্য ধর্মের ওরা কি আকৃষ্ট হবেনা?যেমন কাউকে সাহায্য করা সওয়াবের কাজ,এছাড়া কোনো অমুসলিম এর সাথে আপনি অত্যন্ত মায়া দিয়ে কথা বলুন তার সাথে এমন হয়ে যান যে,সে আপনার কাছে একদম অন্তর থেকে প্রিয় তাহলে সে আপনার দিকেই আকৃষ্ট থাকবে।আপনার আচরণ, তার সাথে করা সুন্দর ব্যবহার ওকে অবশ্যই আকৃষ্ট করবে।এরপর সে হয়তো তার নিজের ধর্ম এর সাথে মিলাবে।এভাবে আল্লাহ চাইলে হিদায়ত পাবে। এভাবে দৈনন্দিন জীবন ঠিক করতে করতেও কিন্তু আপনি দাওয়াহ দিচ্ছেন।এখন আপনার ফরজ কাজ,সুন্নাহ মেইনটেইন করা সব পাকাপোক্ত হলো আলহামদুলিল্লাহ। এইবার আপনি পুরো উদ্যমে মাঠে নামুন!দেখবেন ইংশা আল্লহ কোনো বাধা নেই দ্বীনের পথে। বাধা আসলেও বাধা লাগবেনা ইংশা আল্লহ।
উল্লেখযোগ্য আমি একজন প্র‍্যাক্টিসিং মুসলিমাহ।আমার তেমন জ্ঞান নেই।তাই একটু পড়ে বলবেন ঠিক আছে কিনা?জানা প্রয়োজন আমার

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 



ইসলামে দাওয়াতের গুরুত্ব অপরিসীম।   
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
   
 –قُلْ هذِهِ سَبِيلِي أَدْعُوا إِلَى اللَّهِ عَلى بَصِيرَةٍ أَنَا وَمَنِ اتَّبَعَنِي وَسُبْحانَ اللَّهِ وَما أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ .

’বলুন! ইহাই আমার পথ। আমি ও আমার অনুসারীগণ ডাকি আল্লাহর পথে জাগ্রত জ্ঞান সহকারে। আল্লাহ মহা পবিত্র আর আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নয়’ (ইউসুফ ১২/১০৮)।

 ادْعُ إِلى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجادِلْهُمْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ.

‘আপনি আপনার প্রতিপালকের দিকে হেকমত ও উপদেশ দ্বারা আহবান করুন এবং তাদের সাথে উত্তম পন্থায় তর্ক করুন। তাঁর পথ থেকে কে পথভ্রষ্ট হয় সে ব্যাপারে আপনার প্রতিপালক অধিক জ্ঞাত এবং কে হেদায়াতপ্রাপ্ত তাও তিনি সবিশেষ অবহিত’ (নাহল ১৬/১২৫)।

 وَلا يَصُدُّنَّكَ عَنْ آياتِ اللَّهِ بَعْدَ إِذْ أُنْزِلَتْ إِلَيْكَ وَادْعُ إِلى رَبِّكَ وَلا تَكُونَنَّ مِنَ الْمُشْرِكِينَ .

আপনার নিকট আল্লাহর আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর তারা যেন আপনাকে সেগুলো থেকে বিমুখ না করে। আপনি প্রতিপালকের দিকে আহবান করুন এবং কিছুতেই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না’  (ক্বাছাছ ২৮/৮৭)।

 يا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْناكَ شاهِداً وَمُبَشِّراً وَنَذِيراً – وَداعِياً إِلَى اللَّهِ بِإِذْنِهِ وَسِراجاً مُنِيراً

‘হে নবী! আমি তো আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষীদাতা, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে’। ‘আল্লাহর অনুমতিতে তাঁর দিকে আহবানকারীরূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপরূপে’ (আহযাব ৩৩/৪৫-৪৬)।

وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صالِحاً وَقالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ

‘ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা উত্তম কথা কার, যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহবান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত’ (ফুছছিলাত ৪১/৩৩)।

فَلِذلِكَ فَادْعُ وَاسْتَقِمْ كَما أُمِرْتَ وَلا تَتَّبِعْ أَهْواءَهُمْ وَقُلْ آمَنْتُ بِما أَنْزَلَ اللَّهُ مِنْ كِتابٍ وَأُمِرْتُ لِأَعْدِلَ بَيْنَكُمُ اللَّهُ رَبُّنا وَرَبُّكُمْ لَنا أَعْمالُنا وَلَكُمْ أَعْمالُكُمْ لا حُجَّةَ بَيْنَنا وَبَيْنَكُمُ اللَّهُ يَجْمَعُ بَيْنَنا وَإِلَيْهِ الْمَصِيرُ

‘অতএব আপনি তার দিকে আহবান করুন ও তাতেই দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকুন যেভাবে আপনি আদিষ্ট হয়েছেন এবং তাদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করবেন না। বল, আল্লাহ যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন আমি তাতে বিশ্বাস করি এবং আমি আদিষ্ট হয়েছি তোমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করতে। আল্লাহই আমাদের প্রতিপালক। আমাদের কর্ম আমাদের ও তোমাদের কর্ম তোমাদের। আমাদের ও তোমাদের মধ্যে বিবাদ-বিসম্বাদ নেই। আল্লাহই আমাদেরকে একত্রিত করবেন এবং প্রত্যাবর্তন তাঁরই দিকে’ (শূরা ৪২/১৫)।

يا قَوْمَنا أَجِيبُوا داعِيَ اللَّهِ وَآمِنُوا بِهِ يَغْفِرْ لَكُمْ مِنْ ذُنُوبِكُمْ وَيُجِرْكُمْ مِنْ عَذابٍ أَلِيمٍ.

‘হে আমাদের সম্প্রদায়! আল্লাহর দিকে আহবানকারীর প্রতি সাড়া দাও এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তাহলে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করবেন এবং মর্মন্তুদ শাস্তি হ’তে রক্ষা করবেন’  (আহক্বাফ ৪৬/৩১)।

 يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذا دَعاكُمْا لما يُحْيِيكُمْ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَقَلْبِهِ وَأَنَّهُ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ.
‘হে ঈমানদারগণ! রাসূল যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে আহবান করে যা তোমাদেরকে প্রাণবন্ত করে, তখন আল্লাহ ও রাসূলের আহবানে সাড়া দিবে। জেনে রাখ যে, আল্লাহ সম্মুখ ও তার অন্তরের মধ্যবর্তী হয়ে থাকেন এবং তাঁরই নিকট তোমাদেরকে একত্রিত করা হবে’ (আনফাল ৮/২৪)।

,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত আপনার ধারনা ঠিক আছে।  
এই পদ্ধতিতে  দাওয়াত দিলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।
ইনশাআল্লাহ।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...