জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
যাকাত সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿خُذۡ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡ صَدَقَةٗ تُطَهِّرُهُمۡ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيۡهِمۡۖ إِنَّ صَلَوٰتَكَ سَكَنٞ لَّهُمۡۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ١٠٣﴾ [التوبة: 103]
“তাদের সম্পদ থেকে সদকা নাও, এর মাধ্যমে তাদেরকে তুমি পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে এবং তাদের জন্য দো‘আ কর, নিশ্চয় তোমার দো‘আ তাদের জন্য প্রশান্তিদায়ক”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩]
অপর আয়াতে তিনি বলেন:
﴿وَٱلَّذِينَ يَكۡنِزُونَ ٱلذَّهَبَ وَٱلۡفِضَّةَ وَلَا يُنفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ فَبَشِّرۡهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٖ ٣٤﴾ [التوبة:34]
“যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে এবং তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদেরকে বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩৪]
অপর আয়াতে তিনি বলেন:
﴿وَلَا يَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِينَ يَبۡخَلُونَ بِمَآ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦ هُوَ خَيۡرٗا لَّهُمۖ بَلۡ هُوَ شَرّٞ لَّهُمۡۖ سَيُطَوَّقُونَ مَا بَخِلُواْ بِهِۦ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِۗ ١٨٠﴾ [آل عمران:180]
“আল্লাহ যাদেরকে তার অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করে তারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর, বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর, যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছিল, কিয়ামত দিবসে তা দিয়ে তাদের বেড়ি পরানো হবে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮]
,
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বর্ণের যাকাত যখন আদায় করবেন, তখনকার বাজারদর অনুযায়ী যাকাত আদায় করতে হবে। সুতরাং যাকাত বর্তমান বাজার মূল্য হিসাবেই আদায় করতে হবে।
কেননা যাকাত ওয়াজিব হচ্ছে স্বর্ণের উপর। আপনার কাছে যে স্বর্ণ আছে তার ২.৫% যাকাত দিতে হবে। সুতরাং যাকাত আদায়ের সময় স্বর্ণ দিবেন বা তখন স্বর্ণের যে মূল্য হয় তা আদায় করবেন।
(আলজামেউস সগীর পৃ. ১৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/১১১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১৬৭; রদ্দুল মুহতার ২/২৮৬
,
যাকাত দেওয়ার নিয়ম: ব্যক্তির মালিকানায় যে ক্যারেট স্বর্ণ রয়েছে সেই ক্যারেটের একগ্রাম স্বর্ণের বাজার দর জানবে প্রথম। যদি একাধিক ক্যারেটের স্বর্ণ থাকে, যে ক্যারেট স্বর্ণ বেশি আছে তার বাজার দর জানবে, অতঃপর একগ্রাম স্বর্ণের মূল্যকে তার নিকট যে ক’গ্রাম স্বর্ণ রয়েছে তার সংখ্যা দিয়ে পূরণ দিবে। এভাবে স্বর্ণের গ্রামকে মুদ্রায় পরিণত করবে, অতঃপর ক্যালকুলেটর দিয়ে মোট মূল্য থেকে ২.৫% বের করবে, যে অংক আসবে তাই স্বর্ণের যাকাত।
উদাহরণ: কেউ ২১ ক্যারেট ১০০ গ্রাম স্বর্ণের মালিক, সে তার যাকাত বের করার জন্য প্রথম ২১ ক্যারেট স্বর্ণের বাজার দর জানবে, যদি একগ্রাম স্বর্ণের দাম হয় ১০,০০০ টাকা, যাকাতের হিসেব হবে নিম্নরূপ: ১০০ (গ্রাম-স্বর্ণ)* ১০,০০০ (টাকা, যা একগ্রাম স্বর্ণের মূল্য)* ২.৫% (যাকাত) অর্থাৎ ১০০* ১০,০০০* ২.৫%=২৫০০০ টাকা।
,
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
আপনার স্বর্ণের বর্তমান মূল্য কত টাকা,,সেই হিসেব করে যাকাত আদায় করতে হবে।
সেই।
সেই ক্ষেত্রে আপনার স্বর্ণ কত ক্যারেটের,সেটিও লক্ষ্যনীয়।
★★আপনি আপনার স্বর্ণ বাজারে বিক্রয় করতে গেলে তারা সেটার মূল্য কত বলে,সেটি ধর্তব্য।
অর্থাৎ ব্যবহৃত গয়না বর্তমান বাজারে বিক্রি করলে যেই দামে বিক্রি করতে পারবেন,সেই হিসেব করেই আপনি যাকাত প্রদান করবেন।
যাকাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ
(০২)
যেহেতু উক্ত গরু আপনার ব্যবসার জন্যই লালন পালন করছেন,সুতরাং এগুলোকে ব্যবসার পণ্য হিসেবে গণনা করা হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِىْ ذَرٍّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا مِنْ رَجُلٍ تَكُوْنُ لَهُ إِبِلٌ أَوْ بَقَرٌ أَوْ غَنَمٌ لاَ يُؤَدِّى حَقَّهَا إِلاَّ أُتِىَ بِهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْظَمَ مَا تَكُوْنُ وَأَسْمَنَهُ، تَطَؤُهُ بِأَخْفَافِهَا، وَتَنْطَحُهُ بِقُرُوْنِهَا، كُلَّمَا جَازَتْ أُخْرَاهَا رُدَّتْ عَلَيْهِ أُوْلاَهَا، حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ النَّاسِ-
আবূ যার (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, প্রত্যেক উট, গরু ও ছাগলের অধিকারী ব্যক্তি যে তার যাকাত আদায় করবে না, নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের দিন তাদেরকে আনা হবে বিরাটকায় ও অতি মোটাতাজা অবস্থায়। তারা দলে দলে তাকে মাড়াতে থাকবে তাদের ক্ষুর দ্বারা এবং মারতে থাকবে তাদের শিং দ্বারা। যখনই তাদের শেষ দল অতিক্রম করবে, পুনরায় প্রথম দল এসে তার সাথে এরূপ করতে থাকবে, যাবৎ না মানুষের বিচার ফায়ছালা শেষ হয়ে যায়।
বুখারী হা/১৪৬০; মুসলিম হা/৯৯০; মিশকাত হা/১৭৭৫।
আরো জানুনঃ
,
(০৩)
হ্যাঁ ক্যাশ টাকা যদি সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সম মূল্য পরিমাণ হয়,তাহলে যাকাত ফরজ হবে।
,
(০৪)
পুকুরে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মাছ চাষ করা হলে সেই মাছ বাণিজ্যিক পণ্য বলে গণ্য হবে এবং তার মূল্যের উপর যাকাত আসবে। ( ফাতহুল কাদীর)
সুতরাং ব্যবসার উদ্দেশ্যে চাষের মাছও যাকাতযোগ্য সম্পদ।
অতএব বছর শেষে পুকুরে কী পরিমাণ মাছ আছে তা অনুমান করে নেসাবের সমমূল্যের হলে যাকাত দিতে হবে।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ৭১০৩; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১০১৬৮; কিতাবুল আছল ২/৯৭; কিতাবুল হুজ্জাহ ১/৩০০-৩০১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১৮৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৮.
তবে ব্যবসার উদ্দেশ্যে না হয়ে যদি নিজেদের আহারের জন্য পুকুরে মাছ চাষ করা হয়,তাহলে সেখানে ব্যবসার উদ্দেশ্য না থাকার কারনে যাকাত ফরজ হবেনা।