আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
412 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (26 points)

আসসালামু আলাইকুম,

১। আমার বাবার মৃত্যুর পর এখন পর্যন্ত জমিজমা সকল ওয়ারিশগণের মধ্যে বন্টন হয়নি। যদি বন্টন হয়, তবে প্রত্যেকেই প্রায় ৭ থেকে ১০ লক্ষ টাকা মূল্যের জমির মালিক হবে। 

এদিকে আমার এক ভাইয়ের জীবন-যাপন বেশ দু;সহ এবং তার কাছে যাকাতযোগ্য কোনো সম্পদোও নেই। আমরা  অন্যান্য ভাইরা মিলে যতটুকু সম্ভব সর্বদা সহযোগিতা করে আসছি। এখন আমরা চাচ্ছি যে, আমাদের মধ্যে যাদের যাকাত আসে, সেই যাকাত টুকু তাকে দিয়ে দিবো। জানতে চাচ্ছি এটা বৈধ হবে কি না?

২। আরেকটি বিষয় যিনি যাকাত গ্রহনের হক্বদার হয়, তাকে কি সুদের টাকা দেয়া যাবে? এক্ষেত্রে আপন-অসহায় ভাইকেও কি সুদের অর্থ দেয়া যাবে? 

1 Answer

+1 vote
by (590,550 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলছেন
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاء وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللّهِ وَاللّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ

যাকাত হল কেবল (১)ফকির, (২)মিসকীন, (৩)যাকাত উসূলকারী ও (৪)যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক (৫)এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে ও (৬)ঋণগ্রস্তদের জন্য, (৭)আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং(৮) মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। সূরা আত-তাওবাহ-৬০

পিতা-পুত্র, স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক ব্যতীত যাকাতের হক্বদার যে কোন আত্মীয়কে যাকাত দেয়া যাবে।এমনকি যাকাতের হকদার নিকটাত্মীয় হলে তাকে দেয়াই উত্তম হবে।ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-৯/৫৩৮

কে যাকাত খেতে পারবে?
وَلَا يُشْتَرَطُ النَّمَاءُ إذْ هُوَ شَرْطُ وُجُوبِ الزَّكَاةِ لَا الْحِرْمَانِ كَذَا فِي الْكَافِي. وَيَجُوزُ دَفْعُهَا إلَى مَنْ يَمْلِكُ أَقَلَّ مِنْ النِّصَابِ، وَإِنْ كَانَ صَحِيحًا مُكْتَسَبًا كَذَا فِي الزَّاهِدِيِّ.
অর্থাৎ-নেসাব পরিমাণ মাল(নামী তথা বাড়ন্ত হোক বা না হোক,শরীয়তে নামী মাল চার প্রকার যথা-স্বর্ণ,রূপা বা টাকা,ব্যবসার মাল,গবাদি পশু)
এর মালিক না হলে যাকাত খাওয়া যাবে যদি প্রয়োজন থাকে।তাই গায়রে নামী বা অবাড়ন্ত মালের নেসাব পরিমাণ কেউ মালিক হলে যদিও তার উপর যাকাত আসবে না তথাপিও সে যাকাতের মাল খেতে পারবে না।আর কোনো প্রকার মালই যদি কারো কাছে নেসাব পরিমাণ না থাকে তাহলে সে সুস্থ উপার্জন স্বক্ষম হওয়া সত্তেও তার জন্য যাকাতের মাল খাওয়া জায়েয আছে।
ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/১৮৯

والأولى أن يفسر الفقير بمن له ما دون النصاب كما في النقاية أخذا من قولهم يجوز دفع الزكاة إلى من يملك ما دون النصاب أو قدر نصاب غير تام، وهو مستغرق في الحاجة،
ফকিরের উত্তম ব্যখা হলো,যার নেসাব পরিমাণ মাল নেই।সুতরাং যার নেসাব পরিমাণ মালে নামী(ক্রমবর্ধমান) নাই বা যার নেসাব পরিমাণ মালে গায়রে নামী(ক্রমবর্ধমান নয়)আছে, তবে সে হাজতে লিপ্ত, এমন ব্যক্তিকে যাকাত দেয়া যাবে। (বাহরুর রায়েক্ব-২/২৫৮)

যাকাত কাদেরকে দেওয়া যাবে-
৮টি খাতে যাকাতের মালকে ব্যবহার করা যায়।এ সম্পর্কে আল-কুরআনের বাণী শুনুন-
ফকির-মিসকিন শব্দের ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা বর্ণিত থাকলেও আমরা একটুকু বলতে পারি যে,যার নেসাব পরিমাণ মাল নেই তাকে যাকাত দেওয়া যাবে।


ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন,
سئل محمد عمنله أرض يزرعها أو حانوت يستغلها أو دار غلتها ثلاث آلاف ولا تكفي لنفقته ونفقة عياله سنة؟ يحل له أخذ الزكاة وإن كانت قيمتها تبلغ ألوفا وعليه الفتوى
ইমাম মুহাম্মাদ রাহ কে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিলো,যার কৃষিযোগ্য জমি রয়েছে বা এমন দোকান রয়েছে যেখান থেকে সে মুনাফা পায়,অথবা যার তিন হাজার দিরহাম(ইসলামী দিরহাম) মূল্যর ঘর রয়েছে,কিন্তু এসবগুলো তার এবং তার পরিবারবর্গের এক বৎসরের খোরাকি বাবৎ যথেষ্ট নয়।এমন ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণ জায়েয।যদিও তার এইসব জিনিষের মূল্য কয়েক হাজার দিরহাম(ইসলামী) পর্যন্ত পৌছুক।এ সিদ্ধান্তের উপরই ফাতাওয়া। রদ্দুল মুহতার(শামী)-২/৩৪৮(শামেলা)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
(১) আপনারা ঐ ব্যক্তিকে যাকাতের টাকা দিতে পারবেন। 
(২) হ্য ঐ ব্যক্তিকে সুদের টাকাও দিতে পারবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (26 points)
দু:খিত, একটি বিষয় বুঝতে পারছি না,

উপরোক্ত বিষয় থেকে আমি বুঝতে পেরেছি যে, কোনো প্রকার মালই যদি কারো কাছে নেসাব পরিমাণ না থাকে তাহলে সে সুস্থ উপার্জন স্বক্ষম হওয়া সত্তেও তার জন্য যাকাতের মাল খাওয়া জায়েয আছে।
ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/১৮৯

কিন্তু নিচের এই উক্তটিতে আমার প্রশ্ন হলো, এখানে বলা হয়েছে, গায়রে নামী মাল নেসাব পরিমাণ আছে, তবে সে হাজতে লিপ্ত, এমন ব্যক্তিকে যাকাত দেয়া যাবে। 
এখানে হাজতে লিপ্ত দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে এবং হাজতের কারনেই কি সে যাকাত গ্রহনের হক্বদার হচ্ছে? যদি তাই হয়, তবে এই ব্যক্তির উপরে কি সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হবে না?

"والأولى أن يفسر الفقير بمن له ما دون النصاب كما في النقاية أخذا من قولهم يجوز دفع الزكاة إلى من يملك ما دون النصاب أو قدر نصاب غير تام، وهو مستغرق في الحاجة،
ফকিরের উত্তম ব্যখা হলো,যার নেসাব পরিমাণ মাল নেই।সুতরাং যার নেসাব পরিমাণ মালে নামী(ক্রমবর্ধমান) নাই বা যার নেসাব পরিমাণ মালে গায়রে নামী(ক্রমবর্ধমান নয়)আছে, তবে সে হাজতে লিপ্ত, এমন ব্যক্তিকে যাকাত দেয়া যাবে। (বাহরুর রায়েক্ব-২/২৫৮)"

by (590,550 points)
+1
তার উপর ফিতরা ওয়াজিব হলেও সে বিশেষ বিবেচনায় যাকাত গ্রহণ করতে পারবে। এটা সাধারণ হুকুম থেকে পৃথক একটি হুকুম ।
by (26 points)
আল্লাহ তায়ালা আপনাদের এই খেদমতকে কবুল করুন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...