আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,128 views
in সালাত(Prayer) by (10 points)
edited by

بِسْمِ الّٰلهِ الرَّحْمٰنِ الرَحِيْمِ

আসসালামু'আলাইকুম শায়খ, 

বসে সালাত আদায়ের ব্যাপারে প্রশ্ন। বিস্তারিত জানালে উপকৃত হবো। 

 ১. বসে বসে সালাত আদায়ের শর্ত কি কি?

২. দাঁড়িয়ে সালাত আদায়ে ব্যর্থ হন ওজরের কারণে (কোমরে ব্যথা এবং কোমরে অপারেশন হয়েছে) এমন কোন বেক্তি, সে ক্ষেত্রে বসে বসে সালাত আদায়ের নিয়ম কি? যেমন, দাড়িয়ে তাকবির দিবেন, না বসে? কোথায় বসবেন, কোথায় সিজদা দিবেন ইত্যাদি ইত্যাদি। বিস্তারিত জানাবেন ইন শা আল্লাহ। 

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

বিসমিহি তা'আলা

জবাবঃ-

(১)
দাড়িয়ে নামায পড়তে অক্ষম হলে বসে নামায পড়ার রুখসত রয়েছে।শর্ত হলো,দাড়িয়ে নামায পড়তে নিজের সামনে অক্ষমতা প্রকাশ পাওয়া বা অনুভূত হওয়া।দাড়ানোর ক্ষমতা থাকা সত্তেও বসে নামায পড়া কখনো জায়েয হবে না।

(২)
যদি কেউ দাড়াতে পারেন,তবে রুকু সেজদা করতে পারেন না,তবে উনি দাড়িয়েই নামায শুরু করবেন।অতঃপর দাড়িয়েই ইশারায় রুকু-সেজদা ও বৈঠক করে নামাযকে সমাপ্ত করবেন।এটা ইমাম যুফার রাহ সহ অন্যান্য তিনো মাযহাবের অভিমত।দারুল উলূম করাছির সর্বশেষ সিদ্ধান্ত এটাই।তবে যদি কেউ দাড়িয়ে ইশারা করার পরিবর্তে বসে বসে ইশারা করে নামায পড়ে ফেলে তাহলে তার নামাযও ফাসেদ হবে না।বরং তার নামাযও হবে।যদিও সেটা অনুত্তম হিসেবে বিবেচিত হবে।

যদি কোনো ব্যক্তি রুকু সেজদায় যেতে পারে,কিন্তু রুকু সেজদা থেকে উঠতে না পারে।তাহলে এমন ব্যক্তির জন্য প্রথম রাকাত দাড়িয়ে পড়ার পর পরবর্তী রা'কাত সমূহ বসে পড়ার অনুমোদন রয়েছে।

অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য চেয়ারে বসে নামায পড়ার চেয়ে মাঠিতে বসে নামায পড়াই শ্রেয়।

হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ তাকী উসমানী দামাতবারকাতুহুম তার সদ্য লেখা এ ফতওয়ায় চেয়ারে বসেনামায আদায় করার ক্ষতির দিকগুলো আলোচনাকরতে গিয়ে বলেন, ‘জমিনে বসে নামায আদায় করারশক্তি থাকা সত্ত্বেও চেয়ারে বসার যে প্রচলন দেখা যায়তাতে বিভিন্ন দিক থেকে আপত্তি রয়েছে।

(১)মাযুর ব্যক্তিদের জন্য জমিনে বসে নামায আদায়করাই উত্তম ও মাসনূন তরীকা। এর উপরই সাহাবায়েকেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুম এবং পরবর্তীদের আমলচলে আসছে। চেয়ারে বসে নামায আদায় করাররেওয়াজ কেবল শুরু হয়েছে। খায়রুল কুরূনে এর নযীরনেই। অথচ সে যুগে মাযুরও ছিল চেয়ারও ছিল।

(২) যে ব্যক্তি শরীয়তের দৃষ্টিতে মাযুর নয়, অর্থাৎ কিয়াম,রুকু সিজদা করতে সক্ষম, তার জন্য জমিনে বা চেয়ারেবসে ফরয এবং ওয়াজিব নামায আদায় করাই জায়েযনেই। অথচ কখনো কখনো দেখা যায় এ ধরণের সুস্থব্যক্তিও সামনে চেয়ার পেয়ে চেয়ারে বসে নামায আদায়করে নেয়। ফলে তার নামাযই হয় না।

(৩) চেয়ারের ব্যবহারের কারণে কাতার সোজা করা ওসোজা রাখার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। অথচমিলে মিলে দাড়ানো ও কাতার সোজা করার বিষয়েহাদীস শরীফে জোর তাকীদ এসেছে।

(৪) বিনা প্রয়োজনে মসজিদে চেয়ারের অধিক্যের কারণেতা নাসারাদের গির্জা ও ইহুদীদের উপাসনালয়ের সাদৃশদেখা যায়। তারা গির্জায় চেয়ার ও বেঞ্চে বসে উপাসনাকরে। আর দ্বীনী বিষয়ে ইহুদী নাসারা ও অন্যান্য জাতিরসাদৃশ্য থেকেহ নিষেধ করা হয়েছে।

(৫)নামায তো এমন ইবাদত যা আদায় করতে হয়বিনয়াবনত হয়ে বিগলিতচিত্তে। আর চেয়ারে বসে নামাযআদায় করার চেয়ে জমিনে বসে নামায আদায়ের মাঝেতা পূর্ণমাত্রায় পাওয়া যায়।

(৬) কোন কোন যুবক ও সুস্থ ব্যক্তি নামাযের পর মসজিদেরাখা চেয়ারে বসে আরাম করে। কখনো কখনো চেয়ারনিয়ে গোল হয়ে বসে আলাপচারিতায় লিপ্ত হয়। এটামসজিদের পবিত্রতা, মার্যাদা ও আদবের খেলাফ।

(৭)মসজিদে চেয়ারের ব্যবহারের কারণে কোন কোনছুরতে কুরআনে কারীম এবং মুরববী নামাযীদের আদবও এহতেরামের ব্যত্যয় ঘটে।’’

(নমুনা স্বরূপ আপত্তির এ সাতটি দিক উল্লেখ করার পরহযরত লেখেন :)
اس لئے اشارہ سے نماز پرهنے كے لئے بهى حتى الامكان كرسيوں كے استعمال سے بچنا چاہئے اور ان كے استعمال كى حوصلہ شكنى كرنى چاہئے، اور ان كا استعمال صرف ان حضرات كى حد تك محدود كرنا چاہئے جو زمين پر بيٹهكر نماز ادا كرنے پر قادر نہ ہوں.
 ‘‘...এ জন্যই ইশারায় নামায আদায় করার জন্যওযথাসম্ভব চেয়ারের ব্যবহার না করা চাই। চেয়ারব্যবহারের প্রতি নিরুৎসাহিত করা চায় এবং এর ব্যবহারকেবলমাত্র ঐ সকল ব্যক্তির মাঝে সিমাবদ্ধ করা উচিত,যারা জমিনে বসে নামায আদায় করতে সক্ষম নয়।’’

এই স্পষ্ট বক্তব্য সত্ত্বেও হযরত আবার এটাও লিখেছেনযে, রুকু সিজদা করতে অক্ষম ব্যক্তিগণ জমিনের উপরবসে ইশারায় নামায আদায় করতে সক্ষম হওয়ার পরওযদি চেয়ারে বসে নামায আদায় করে থাকেন, তাহলেসেটাও জায়েয, কিন্তু অনুত্তম কাজ। আর দারুল উলূমদেওবন্দের ফতওয়ায় এটাকে শুধু অনুত্তমই বলা হয়নিবরং বলা হয়েছে, তা বিভিন্ন কারণে ‘কারাহাত’ মুক্ত নয়।(সংগৃহীত)

আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
আরো জানুন-271

উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, Iom.
পরিচালক
ইসলামিক রিচার্স কাউন্সিল বাংলাদেশ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...