আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
774 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (66 points)
আসসালামু আলাইকুম। ইসলামে বলা হয়েছে যে বালেগ হলেই ছেলে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে। এটা তো শারীরিক ভাবে বয়ঃসন্ধিকালের কথা বলা হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় যে বালেগ হলেও মানসিক পরিপক্কতা আসে না সেক্ষেত্রে সংসারে অনেক ঝামেলা হয় এমনকি দ্বীনকে প্রাধান্য দেওয়া হলেও। একটি মেয়ে মানসিকভাবে সংসার করার উপযুক্ত কিনা সেটা পরীক্ষা করার কোন উপায় আছে? একটি ছেলের ক্ষেত্রে এর বিধান কি?

একটি মেয়েকে তার মা ছোটবেলা থেকে প্রতি মুহূর্তে কন্ট্রোল করতে থাকায় মেয়েটি এখনো নিজের সামর্থ্য সম্পর্কে সন্দিহান। এমতাবস্থায় শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগে সে নিজের সামর্থ্য সম্পর্কে সচেতন হবে সেই সুযোগ কম। আর তাছাড়া জীবনের একটা বড় অংশ নারীবাদের ফাঁদে পড়ায় ও তার বাসায় সেভাবে কোন পুরুষ মানুষ না থাকায় সে একদিকে যেমন নিজের দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হতে পারেনি তেমনি সে কখনো কোন বীরপুরুষকে (প্রকৃত পুরুষ মানুষ) দেখেনি। এমনকি ঘরের অনেক কাজ করার কথা তার মনে থাকে না।
যেহেতু শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার আগে সে কতটুকু রেস্পন্সিবল সেটা যাচাই করার সুযোগ নেই, সে কীভাবে বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারে? আবার একজন ব্যক্তি মন থেকে বিয়ে করতে চায় আকুলভাবে কিন্তু উপরোক্ত অবস্থায় (যখন নিজের সম্পর্কে জানার সুযোগ নেই) সে কি করতে পারে? সে ও তার পরিবার ভয় পায় যে সে হয়ত বিয়ের পর নতুন পরিবেশে ও নতুন মানুষের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সমস্যার সম্মুখীন হবে।
জানি এসব কথা বলার প্ল্যাটফর্ম এই ওয়েবসাইট নয়। তবুও যদি মেয়েটিকে বোন/মেয়ের দৃষ্টিতে দেখে কিছু বলতেন তাহলে খুব উপকার হত।

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

তাকি উসমানি রাহ বাল্যবিবাহ এবং ইসলাম শীর্ষক একটি লিখায় বলেন,

কিন্তু এটা এসব অনিষ্টতার সঠিক সমাধান নয় যে, কম বয়সের বিয়েগুলোকে গোড়া থেকেই নিষিদ্ধ বলে অবিহিত করে দেয়া হবে। কেননা, একজন ব্যক্তি অনেক সময় বিভিন্ন কারণে তার কম বয়সী ছেলে-মেয়েকে দ্রুত বিয়ে করিয়ে দিতে বাধ্য হয়ে যায়। (যে যে কারণে বাধ্য হতে হয়, তার বিস্তারিত বিবরণ সামনে আসছে। -লেখক) এই মুসলেহাতের দিকে দৃষ্টি দিয়ে ইসলামী শরীয়ত কম বয়সের বিয়েকে যেমন নিষিদ্ধ গণ্য করেনি, তেমনি এর উপর বেশি গুরুত্বও দেয়নি।


কম বয়সের বিবাহ জায়েয ও বৈধ হবার ব্যপারটি পবিত্র কুরআনের নিম্নক্ত আয়াত দ্বারা প্রমাণিত-


وَاللَّائِي يَئِسْنَ مِنَ الْمَحِيضِ مِن نِّسَائِكُمْ إِنِ ارْتَبْتُمْ فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ وَاللَّائِي لَمْ يَحِضْنَ


“আর তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যারা ‘হায়েয’ হতে বিরাশ হয়ে গেছে, তোমাদের যদি সন্দেহ সৃষ্টি হয়, তাহলে তাদের ইদ্দতকাল হল তিন মাস। আর এই ইদ্দতকাল ওইসকল মেয়েদের জন্যেও, যাদের (এখনও) হায়েয আসেনি। [সূরা তালাক ৪]


এই আয়াতে (প্রাপ্তবয়ষ্কা নারীদের পাশাপাশি) ওইসকল মেয়েদের ‘ইদ্দত’ সম্পর্কে বর্ণনা দেয়া হয়েছে, যাদের এখনও পর্যন্ত হায়েয আসেনি। বলাবাহুল্য, ইদ্দতের প্রশ্নই তো আসে তখন, যেক্ষেত্রে প্রথমে বিয়ে, রুখসতী এবং তালাক সংঘটিত হয়ে যায়। এ থেকে বোঝা গেল, কুরআন কারিমের দৃষ্টিতে বালেগ/বালেগা ( তথা প্রাপ্ত বয়ষ্ক ছেলে / প্রাপ্ত বয়স্কা মেয়ে) হবার আগেও বিয়ে সম্পাদিত হতে পারে এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে তা গ্রহনযোগ্য। অথচ এর বিপরীতে অর্ডিনেন্সের উপরোক্ত দফাটি প্রাপ্ত-বয়সের (ছেলে-মেয়ের বিয়েকেই) শুধু নয়, বরং প্রাপ্ত বয়সের ৩-৪ বৎসর পরের সম্পাদিত বিয়েকেও গ্রহনযোগ্য বলে মনে করে না!


হাদীসে বাল্যবিবাহ সম্পর্কিত ঘটনাবলী

আর এ কারণেই নববী-যুগে কম বয়সে সম্পাদিত বিয়ের বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে।


(১) খোদ রাসুলুল্লাহ ﷺ হযরত আয়েশা রা.-কে বিয়ে করেছিলেন ওই সময়ে, যখন হযরত আয়েশার বয়স ছিল কতক বর্ণনা মতে ৮ কিংবা ৯ বছর। [সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৮৯৪ ; সহীহ মুসলীম, হাদীস ১৪২২]


(২) ইমাম আবু বকর জাসসাস রাযী রহ. (মৃ: ৩৭০ হি:) ‘আহকামুল কুরআন’-এ হযরত মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাকের সূত্রে একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ ﷺ হযরত উম্মে সালামাহ’র পুত্র হযরত সালামাহ’কে হযরত হামযা’র ছোট্ট মেয়ের সাথে খুব কম বয়সেই বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন। বর্ণনাটি এই- فزوجه رسول الله ﷺ بنت حمزة و هما صبيان صغيران فلم يجتمعا حتى ماتا الخ – ‘‘রাসুলুল্লাহ ﷺ হযরত হামযা’র মেয়ের সাথে তার (তথা হযরত সালামাহ’র) বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন। তখন তারা দুজনেই ছিল ছোট্ট বাচ্চা। পরে তারা দুজনে একত্রিত হতে পারেন নি, এমন কি দুজনই (শিশু বয়সে) মাড়া যান। [আহকামুল কুরআন, ইমাম জাসসাস- ২/৬২]


উপরোক্ত বর্ণনায় আপনারা দেখতে পেলেন যে, রাসুলুল্লাহ ﷺ নিজেই হযরত সালামাহ রা. এবং বিনতে হামযা রা.-এর বিয়ে তাদের অপ্রাপ্ত বয়সে করিয়ে দিয়েছিলেন। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://muftiemdadhaque.blogspot.com/2021/04/blog-post_30.html


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 

ইসলামে বিয়ের আলাদা কোনো বয়স নাই। নিয়মতান্ত্রিক এর কোনো বয়স নাই। বরং যে কোনো বয়সে বিয়ে করা যাবে। হ্যা সাবালক হওয়ার পর, বুঝদ্বার হওয়ার পরই বিয়ে করা ভালো। বিয়ের বয়সকে কোনো নিয়মের আলোকে বেধে রাখা যাবে না। বরং এগুলো অভিভাবকদের উপরই শরীয়ত ন্যাস্ত করেছে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...