যে কোনো মুসলমানকে চাই সে জীবিত হোক বা মৃত হোক নফল ইবাদতের সওয়াব পৌঁছানো যাবে, এবং সওয়াব পৌছবে।
আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ.এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা এভাবে তুলে ধরেন।তিনি বলেনঃ
ﻭﺍﻷﺻﻞ ﻓﻴﻪ ﺃﻥ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻟﻪ ﺃﻥ ﻳﺠﻌﻞ ﺛﻮﺍﺏ ﻋﻤﻠﻪ ﻟﻐﻴﺮﻩ ﺻﻼﺓ ﺃﻭ ﺻﻮﻣﺎ ﺃﻭ ﺻﺪﻗﺔ ﺃﻭ ﻗﺮﺍﺀﺓ ﻗﺮﺁﻥ ﺃﻭ ﺫﻛﺮﺍ ﺃﻭ ﻃﻮﺍﻓﺎ ﺃﻭ ﺣﺠﺎ ﺃﻭ ﻋﻤﺮﺓ ﺃﻭ ﻏﻴﺮ ﺫﻟﻚ ﻋﻨﺪ ﺃﺻﺤﺎﺑﻨﺎ ﻟﻠﻜﺘﺎﺏ ﻭﺍﻟﺴﻨﺔ
মূলকথা হলঃ মানুষ তার আমলের সওয়াব অন্যর জন্য দিতে পারবে, সে আমল চাই নামায/রোজা/সদকা/কোরআন তেলাওয়াত/যিকির/তাওয়াফ/হজ্ব/উমরা বা অন্য কিছুই হোকনা কেন।
এটা আমাদের উলামাদের কাছে কোরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।(বাহরুর রায়েক,হজ্ব অধ্যায়;৩/৬৩)
আরো জানুনঃ
দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে, যেমন-রোগ-ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ করা, বিপদ-আপদ দূর হওয়া বা ঘরে বরকতের জন্য কোনো সূরা তিলাওয়াত করে বা কুরআন মজীদ খতম করা এবং তার বিনিময় নেওয়ার অবকাশ আছে।
সহীহ বুখারীর এক বর্ণনায় আছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, সাহাবীদের একটি জামাত জলাশয়ে বসবাসকারী একটি গোত্রের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। ঐ গোত্রের এক ব্যক্তিকে বিচ্ছু দংশন করেছিল। তাদের একজন এসে সাহাবীদেরকে বলল, আপনাদের মাধ্যে কি কোনো ঝাড়-ফুঁককারী আছেন? আমাদের গোত্রের এক লোককে বিচ্ছু দংশন করেছে। তখন সাহাবীগণের মধ্যে একজন সেখানে গেলেন। এরপর কিছু বকরি দানের বিনিময়ে তিনি সূরা ফাতিহা পড়লেন (এবং ফুঁক দিলেন) ফলে লোকটি আরোগ্য লাভ করল। এরপর তিনি যখন বকরিগুলো নিয়ে অন্যান্য সাহাবীদের নিকট এলেন তারা কাজটি অপছন্দ করলেন এবং বললেন, আপনি আল্লাহর কিতাবের উপর বিনিময় গ্রহণ করছেন!
অবশেষে তারা মদীনায় পৌঁছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি আল্লাহর কিতাবের উপর বিনিময় গ্রহণ করেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুমতি দিলেন এবং বললেন, তোমরা যে সকল জিনিসের বিনিময় গ্রহণ কর তন্মধ্যে আল্লাহ তাআলার কিতাব সবচেয়ে উপযুক্ত (অর্থাৎ যখন এর দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা হয়)।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৭৩৭ (আরো দেখুন : শরহু মাআনিল আছার ২/২৪৬; উমদাতুল কারী ১২/৯৫, ২১/২৬৪; শিফাউল আলীল, পৃষ্ঠা : ১৫৭)
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে জীবিত ব্যাক্তির জন্য তা'লিম (তথা প্রশ্নে উদ্দেশ্য হলো নফল ইবাদত করে ছওয়াব পৌছানো) জায়েজ আছে।