ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
দুআর জন্য হাত তুলা জরুরী কোনো বিষয় নয়। বরং হাত না তুলেও দুআ করা যাবে। তবে হাত তুলা মুস্তাহাব।
তিরমিযি শরীফে হযরত আবু উমামা রাঃ থেকে বর্ণিত আছে.......
ﻭﺭﻭﻯ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ( 3499 ) ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺃُﻣَﺎﻣَﺔَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ : ﻗِﻴﻞَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺃَﻱُّ ﺍﻟﺪُّﻋَﺎﺀِ ﺃَﺳْﻤَﻊُ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ( ﺟَﻮْﻑَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﺍﻟْﺂﺧِﺮِ ، ﻭَﺩُﺑُﺮَ ﺍﻟﺼَّﻠَﻮَﺍﺕِ ﺍﻟْﻤَﻜْﺘُﻮﺑَﺎﺕِ ) ﻭﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﺣﺴﻨﻪ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ
নবীজী সাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হল, হে রাসূলুল্লাহ সাঃ কোন দু'আ আল্লাহ তা'আলা বেশী শুনেন ওকবুল করেন? নবীজী সাঃ বললেনঃরাত্রির শেষভাগে ও প্রত্যেক ফরয নামাযের পরে অর্থ্যাৎ সেই সময় যে দু'আ করা হয় তা কবুল হয়।
তিরমিযি ও আলবানী উক্ত হাদীসকে সহীহ বলেছেন।
হাত তুলে দু'আ অনেক হাদীস দ্বারা বর্ণিত আছে। কেউ কেউ মুস্তাহাব ও বলেন।এবং কেউ বেদআত।তবে গ্রহণযোগ্য অভিমত হচ্ছে নামাযের পর দু'আ করা বৈধ।
– শায়খ ওয়াহীদুল ইসলাম লিখেন,
ছহীহ হাদীছের আলোকে যে সকল স্থানে হাত তুলে একাকী এবং সম্মিলিত দো’আ করা সুন্নাত-
(১) বৃষ্টি প্রার্থনার জন্যঃ
আনাস ইবনু মালেক রাযিঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, নাবী কারীম ﷺ-এর যামানায় এক বছর দুর্ভিক্ষ দেখা দিল। সে সময় একদিন নাবী ﷺ খুৎবা প্রদানকালে জনৈক বেদুঈন উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, হে আল্লাহর রসূল ﷺ! বৃষ্টি না হওয়ার কারণে সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, পরিবার পরিজন অনাহারে মরছে। আপনি আমাদের জন্য দু‘আ করুন। অতঃপর রসূল ﷺ স্বীয় হস্তদ্বয় উত্তোলন পূর্বক দু‘আ করলেন। সে সময় আকাশে কোন মেঘ ছিল না। রাবী বলেন) আল্লাহর কসম করে বলছি, তিনি হাত না নামাতেই পাহাড়ের মত মেঘের খন্ড এসে একত্র হয়ে গেল এবং তাঁর মিম্বর থেকে নামার সাথে সাথেই ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়তে লাগল। এভাবে দিনের পর দিন ক্রমাগত পরবর্তী জুম‘আ পর্যন্ত হ’তে থাকল। অতঃপর পরবর্তী জুম‘আর দিনে সে বেদুঈন অথবা অন্য কেউ দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লহর রসূল ﷺ অতি বৃষ্টিতে আমাদের বাড়ী-ঘর ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে, ফসল ডুবে যাচ্ছে। অতএব আপনি আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য দু‘আ করুন। তখন তিনি দু’হাত তুললেন এবং বললেন, ‘হে আল্লাহ! আমাদের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বৃষ্টি দাও, আমাদের এখানে নয়। এ সময় তিনি স্বীয় অঙ্গুলি দ্বারা মেঘের দিকে ইশারা করেছিলেন। ফলে সেখান থেকে মেঘ কেটে যাচ্ছিল। বুখারী, ১ম খন্ড, পৃঃ ১২৭, হা/৯৩৩ জুম‘আর ছালাত’ অধ্যায়)।
আনাস ইবনু মালেক রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা জুম‘আর দিন জনৈক বেদুঈন রসূল ﷺ-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল ﷺ! বৃষ্টির অভাবে গৃহপালিত পশুগুলো মারা যাচ্ছে। মানুষ খতম হয়ে যাচ্ছে। তখন রসূল ﷺ দু‘আর জন্য দু’ হাত উঠালেন। আর লোকেরাও রসূল ﷺ-এর সাথে হাত উঠাল। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা মসজিদ থেকে বের হওয়ার পূর্বেই বৃষ্টি আরম্ভ হয়ে গেল। এমনকি পরবর্তী জুম‘আ পর্যন্ত বৃষ্টি বর্ষিত হ’তে থাকল। তখন একটি লোক রসূল ﷺ-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লহর রসূল ﷺ! রাস্তা-ঘাট অচল হয়ে গেল’। বুখারী ১ম খন্ড, পৃঃ ১৪০, হা/১০২৯ ‘ইস্তিস্কা’ অধ্যায়)।
আনাস রাযিঃ) বলেন, কোন এক জুম‘আয় কোন এক ব্যক্তি দারুল কোযার দিক হ’তে মসজিদে প্রবেশ করল এমতাবস্থায় যে, রসূল ﷺ তখন খুৎবা দিচ্ছিলেন। লোকটি রসূলুল্লাহ ﷺ-এর দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল ﷺ! সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেল এবং রাস্তা-ঘাট বন্ধ হয়ে গেল। আপনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করুন, আল্লাহ আমাদেরকে বৃষ্টি দান করবেন। আনাস রাযিঃ) বলেন, তখন রসূলুল্লাহﷺ স্বীয় হস্তদ্বয় উত্তোলন করতঃ প্রার্থনা করলেন, হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দান করুন! হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দান করুন! বুখারী ১ম খন্ড, পৃঃ ১৩৭; মুসলিম ১ম খন্ড, পৃঃ ২৯৩-২৯৪)।
আনাস রাযিঃ) বলেন, আমি রসূল ﷺ-কে হস্তদ্বয়ের পিঠ আকাশের দিকে করে পানি চাইতে দেখেছি। মুসলিম, মিশকাত হা/১৪৯৮ ‘ইসতিস্কা’ অনুচ্ছেদ) আনাস রাযিঃ) বলেন, নাবী কারীম ﷺ বৃষ্টির জন্য ছাড়া অর্থাৎ বৃষ্টির জন্য দু‘আ ছাড়া জামাতবদ্ধভাবে অন্য কোথাও হাত তুলতেন না। আর হাত এত পরিমাণ উঠাতেন যে, তার বগলের শুভ্র অংশ দেখা যেত। বুখারী, ১ম খন্ড, পৃঃ ১৪০, হা/১০৩১; মিশকাত হা/১৪৯৯)। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://i-onlinemedia.net/11497