যাকাত ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুকন। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হল সালাত ও যাকাত।
আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-
وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ ؕ وَ مَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ۱۱۰
‘তোমরা সালাত আদায় কর এবং যাকাত প্রদান কর। তোমরা যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর নিকটে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখছেন। -সূরা বাকারা : ১১০
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-
وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ وَ اَطِیْعُوا الرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ۵۶
‘তোমরা সালাত আদায় কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পার।’-সূরা নূর : ৫৬
,
★শরীয়তের বিধান হলোঃ
মৌলিক প্রয়োজন থেকে উদ্ধৃত্ত টাকা-পয়সা নিসাব পরিমাণ হলে এবং এক বছর স্থায়ী হলে বছর শেষে তার যাকাত আদায় করা ফরয হয়।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৯১,৭০৯২
তদ্রূপ ব্যাংক ব্যালেন্স, ফিক্সড ডিপোজিট, বন্ড, সার্টিফিকেট ইত্যাদিও নগদ টাকা-পয়সার মতোই। এসবের ওপরও যাকাত ফরয হয়।
প্রয়োজনের উদ্ধৃত্ত টাকা-পয়সা বা বাণিজ্য-দ্রব্যের মূল্য যদি সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমপরিমাণ হয় তাহলে যাকাতের নিসাব পূর্ণ হয়েছে ধরা হবে এবং এর যাকাত দিতে হবে।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৬৭৯৭,৬৮৫১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ৯৯৩৭)
★★বর্তমানে রুপার মূল্য ১০০০ টাকা ভড়ি।
(এলাকা ভেদে কমবেশি হতে পারে।)
সুতরাং সাড়ে বাহান্ন ভড়ি রুপার দাম ১০০০×৫২.৫= ৫২৫০০ টাকা,
এই পরিমান টাকা কাহারো প্রয়োজন অতিরিক্ত থাকলেই যাকাত ফরজ হবে।
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
আপনার কাছে থাকা দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত টাকা যেদিন নেসাব পরিমান (সাড়ে ৫২ ভরি রুপার সমমুল্য) হয়েছিলো,তার পূর্ণ এক বছর হওয়ার পর সেই বছরের যাকাত ফরজ হবে।
,
এখন এই নেসাব পরিমান সম্পদ আপনার কবে হয়েছিলো,সেটার হিসেব করে আপনাকে যাকাত দিতে হবে।
,
উদাহরণ স্বরুপঃ
যদি ২০১৯ সালের শুরুতেই আপনার নিজের কাছে থাকা দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত টাকা মিলে আপনি নেসাবের মালিক হয়ে থাকেন, তাহলে ২০১৯ সালের শেষে এসে আপনার কাছে থাকা টাকা যত থাকে,তার হিসেব করে শতকরা আড়াই পার্সেন্ট টাকা সেই এক বছরের যাকাত দিতে হবে।
,
এই ভাবে ২০২০ সালের হিসেব।
,
এই ভাবে ২০২১ সালের হিসাব।
,
যদি বছরের শুরুতে না হয়ে বছরের মাঝে বা শেষে বা অন্য কোনো সময় নেছাবের মালিক হয়ে থাকেন,তাহলে সেদিব থেকে নিয়ে এক বছর অতিক্রম করার পর আপনাকে যাকাত দিতে হবে।
,
এক্ষেত্রে আগের কোনো বছরের যাকাত আদায় না করে থাকলে সেটিরও হিসেব করে যাকাত আদায় করতে হবে।
,
,
★প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে যে আপনি ১৬ বছর ধরে এই টাকা জমিয়েছেন।
যেদিন আপনার এই টাকা সাড়ে বাহান্ন ভরি রুপার সমপরিমাণ হয়ছিলো,তার এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর যত টাকা আপনার কাছে সব মিলে ছিলো,সেটার হিসেব করে শতকরা আড়াই পার্সেন্ট টাকা সেই এক বছরের যাকাত দিতে হবে।
,
তার পর আবার এক বছর অতিক্রম করার পর আবার হিসেব করে শতকরা আড়াই পার্সেন্ট টাকা সেই এক বছরের যাকাত দিতে হবে।
,
আগের বছরের যাকাত আদায় না করে থাকলে সেটি অবশ্যই দ্রুত আদায় করতে হবে।
,
আরো জানুনঃ