ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
মান্নতের রোযার সাথে শাওয়ালের ছয় রোযা আদায় হবে না।
কোনো মানত সহিহ হওয়ার জন্য এবং শরিয়তের দৃষ্টিতে তা মানত হিসেবে ধর্তব্য হওয়ার জন্য কয়েকটি অপরিহার্য শর্ত রয়েছে। নিচে সংক্ষিপ্তভাবে আমরা সেই বিষয়গুলো উল্লেখ করার প্রয়াস পাবো।
১. মানতকৃত বিষয়টি মৌলিক ইবাদত হতে হবে, অন্য কোনো ইবাদতের ভূমিকা বা সহায়ক নয়। যেমন— নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত ইত্যাদি মৌলিক ইবাদত; কিন্তু উজু করা, রোজার নিয়ত করা, হজ আদায়ের উদ্দেশ্যে সফর করা, যাকাত প্রদানের মানসে খাদ্য-বস্ত্র ক্রয় করা ইত্যাদি মৌলিক ইবাদত নয়; বরং পূর্বোক্ত ইবাদতসমূহের ভূমিকা ও সহায়ক।
২. মানত সহিহ হওয়ার জন্য মানতকৃত বিষয়ের শ্রেণিভুক্ত কোনো কিছু পারিভাষিক ওয়াজিব বা ফরজে আইন হতে হবে। মানতকৃত বিষয়ের শ্রেণিভুক্ত কোনো কিছু যদি ফরজে আইন বা পারিভাষিক ওয়াজিব না হয়ে থাকে, তাহলে মানত সহিহ হবে না। যেমন কেউ যদি মাদরাসায় পড়ার বা পড়ানোর মানত করে, কিবা মসজিদে প্রবেশের মানত করে, অথবা রাস্তা-ব্রিজ নির্মাণের মানত করে, কিবা কোনো অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করার মানত করে ইত্যাদি ক্ষেত্রে তার মানত শরিয়তের দৃষ্টিতে মানত হিসেবে ধর্তব্য হবে না। (মানত হিসেবে ধর্তব্য না হলেই যে তা আর করা যাবে না— এমন তো নয়।)
মানতকৃত বিষয়টির শ্রেণিভুক্ত কোনো কিছু যদি পারিভাষিক ওয়াজিব বা ফরজে আইন হয়ে থাকে, তখনই মানত সহিহ হবে। যেমন কেউ শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার মানত করলো, তার এই মানত সহিহ হয়ে যাবে; যেহেতু শাওয়ালের ছয় রোজার শ্রেণিভুক্ত কোনো কিছু ফরজে আইন রয়েছে, আর তা হলো রমযানের রোজা। রোজা, নামাজ, সদকা, ইতিকাফ, ওয়াকফ, তাওয়াফ, দাসমুক্তি, কোরআন তেলাওয়াত, দুরুদ পাঠ, তাসবিহ আদায় ইত্যাদি ক্ষেত্রে মানত সহিহ হবে।
৩. মানতের ক্ষেত্রে মনের নিয়তের বিবেচনা করা হয় না; বরং মুখে উচ্চারিত শব্দের বিবেচনা করা হয়। ভুলেও যদি কোনো কিছুর মানত মুখে উচ্চারণ করে বসে, তাহলেও তা পূর্ণ করা অপরিহার্য হয়ে যায়। বিয়ে, তালাক, কসম এবং মানতের ক্ষেত্রে ভুল বা দুষ্টুমির কোনো বিবেচনা নেই। ভুলে বা দুষ্টুমি করে কোনো কিছু বললেও তা অবধারিত হয়ে যায়।
(২)
জ্বী সে সওয়াব পাবে।
(৩)
মসজিদের মাইক দাতা গণ যদি দেওয়ার সময়ে নিয়ত করতে থাকেন যে, বিভিন্ন বিষয়ের মাইকিং করাতে কোনো সমস্যা নাই, তাহলে মাইকিং করা যাবে। আর যদি শুধুমাত্র আযানের জন্য দেন, তাহলে শুধুমাত্র আযান দিতে হবে।
হাদীসে এসেছে,ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে,
أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : ( لَا تَزُولُ قَدَمُ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ : عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أَفْنَاهُ ، وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَ أَبْلَاهُ ، وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ )
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামাত দিবসে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ হওয়ার আগপর্যন্ত আদম সন্তানের পদদ্বয় আল্লাহ্ তা'আলার নিকট হতে সরতে পারবে না। তার জীবনকাল সম্পর্কে, কিভাবে অতিবাহিত করেছে? তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কি কাজে তা বিনাশ করেছে; তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা হতে তা উপার্জন করেছে এবং তা কি কি খাতে খরচ করেছে এবং সে যত টুকু জ্ঞান অর্জন করেছিল সে মুতাবিক কি কি আমল করেছে।(সুনানু তিরমিযি-২৪১৬)বিস্তারিত জানুন-
https://www.ifatwa.info/2125