আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
216 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
খুব অল্প বয়সে আমার বন্ধু একটা শারিরিক সম্পর্কে জড়িত হয়ে পড়ে তখন তার তেমন বয়স ছিল না।কিন্তু যখন সে বুজতে পারে তখন সে খাজ দিলে তওবা করে সে এমন আর জীবনে ও করবে না।এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে।দীর্ঘ ৪-৫ সে আর ওই মেয়েটির সাথে আর শারিরিক সম্পর্ক করে না।ছেলেটি জানে জিনাহ করার ফল কি ভোগ করা লাগে।।কিন্তু ছেলেটি বলতাছে তখন তো সে এই সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান ছিল না।মেয়েটির সাথে বিয়ে করা ও অসম্ভব ব্যাপার কারন তার একদম নিকট আত্নীয়। যাকে বিয়ে করা তার জন্য হারাম।এই মূহুর্তে সে দুশ্চিন্তায় আছে যদি মেয়েটি কোন এক সময় তার ফ্যামিলিকে মুখ খুলে সব বলে দেয়??  তখন ছেলেটি কি উত্তর দিবে? তারা তো বিশ্বাস নাও করতে পারে।।যদিও করে৷ তাহলে তার নিকট আত্নীয় হওয়ার কারনে এর প্রভাব তার পরিবারে পরবে।

 

প্রশ্ন ১) সে কি তার ফ্যামিলিকে এখনই জানিয়ে দিবে নাকি?

 

প্রশ্ন ২) পুর্বের প্রশ্নের উত্তরে বলছেন এই পরিস্থিতিতে ছেলেটিকে খাজ দিলে তওবা করতে হবে।।এতে আল্লাহ হয়তো ক্ষমা করতে পারে কিন্তু ছেলেটির তার পরিবারকে কি বলে বুজাবে??কি বলবে তাদেরকে??  

 

শায়েখ প্লিজ একটু ক্লিয়ার করে বলবেন।।।।ছেলেটি অনেক ডিপ্রেশনে আছে।।।

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﺁﻣَﻦَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺄُﻭْﻟَﺌِﻚَ ﻳُﺒَﺪِّﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻬِﻢْ ﺣَﺴَﻨَﺎﺕٍ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭًﺍ ﺭَّﺣِﻴﻤًﺎ
কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
ﻭَﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻳَﺘُﻮﺏُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣَﺘَﺎﺑًﺎ
যে তওবা করে ও সৎকর্ম করে, সে ফিরে আসার স্থান আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। (সূরা ফুরক্বান-৬৮-৭০)

গোনাহ করার পর উক্ত গোনাহকে প্রকাশ না করার নির্দেশ রাসূলুল্লাহ সাঃ দিয়েছেন। যেমন- আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : ( ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣُﻌَﺎﻓًﻰ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺮِﻳﻦَ ﻭَﺇِﻥَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫَﺮَﺓِ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﻤَﻞَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺛُﻢَّ ﻳُﺼْﺒِﺢَ ﻭَﻗَﺪْ ﺳَﺘَﺮَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝَ ﻳَﺎ ﻓُﻠَﺎﻥُ ﻋَﻤِﻠْﺖُ ﺍﻟْﺒَﺎﺭِﺣَﺔَ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻭَﻗَﺪْ ﺑَﺎﺕَ ﻳَﺴْﺘُﺮُﻩُ ﺭَﺑُّﻪُ ﻭَﻳُﺼْﺒِﺢُ ﻳَﻜْﺸِﻒُ ﺳِﺘْﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻨْﻪُ )
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোন লোক রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল। (সহীহ বুখারী-৬০৬৯,সহীহ মুসলিম-২৯৯০)

ইবনে হজর আসক্বালানী রাহ, ফাতহুল বারীতে লিখেন,
ﻭﻳﺆﺧﺬ ﻣﻦ ﻗﻀﻴﺘﻪ : ﺃﻧﻪ ﻳﺴﺘﺤﺐ ﻟﻤﻦ ﻭﻗﻊ ﻓﻲ ﻣﺜﻞ ﻗﻀﻴﺘﻪ ﺃﻥ ﻳﺘﻮﺏ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﻳﺴﺘﺮ ﻧﻔﺴﻪ ﻭﻻ ﻳﺬﻛﺮ ﺫﻟﻚ ﻷﺣﺪ ﻛﻤﺎ ﺃﺷﺎﺭ ﺑﻪ ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﻭﻋﻤﺮ ﻋﻠﻰ ﻣﺎﻋﺰ . ﻭﺃﻥ ﻣَﻦ ﺍﻃﻠﻊ ﻋﻠﻰ ﺫﻟﻚ ﻳﺴﺘﺮ ﻋﻠﻴﻪ ﺑﻤﺎ ﺫﻛﺮﻧﺎ ، ﻭﻻ ﻳﻔﻀﺤﻪ ، ﻭﻻ ﻳﺮﻓﻌﻪ ﺇﻟﻰ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﻛﻤﺎ ﻗﺎﻝ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻲ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻘﺼﺔ " ﻟﻮ ﺳﺘﺮﺗﻪ ﺑﺜﻮﺑﻚ ﻟﻜﺎﻥ ﺧﻴﺮﺍً ﻟﻚ " ، 
মাইয ইবনে মালিক আল-আসলমি এর ঘটনা থেকে আমরা অনুধাবন করতে পেরেছি যে,যে ব্যক্তি মাইয ইবনে মালিক আল-আসলমীর মত ঘটনায় যুক্ত হয়ে যাবে,তার জন্য মুস্তাহাব হলো,সে আল্লাহর নিকট তাওবাহ করে নিবে।এবং উক্ত বিষয়কে গোপন করে নিজ ইজ্জত-আব্রুকে ঢেকে রাখবে।কারো নিকট সে তা প্রকাশ করবে না।যেমনটা আবু-বকর রাযি, এবং উমর রাযি, মাইয আসলমীকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।এবং অন্য কেউ যদি সেই গোনাহকে জেনে ফেলে তার জন্যও সেই বিষয়কে ঢেকে রাখা মুস্তাহাব।সে যেন উক্ত ঘটনার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে লাঞ্ছিত-অপদস্থ না করে এবং উক্ত বিষয়কে ইমাম বা বিচারকের নিকট উপস্থাপন না করে।যেমনটা রাসূলুল্লাহ সাঃ আসলমীর ঘটনাকে উপস্থাপনাকারী হযরত হায্যাল রাযি, কে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন যে, হে হায্যাল! তুমি যদি তোমার কাপড় দ্বারা বিষয়টাকে ঢেকে রাখতে তাহলে সেটা তোমার জন্য ভালো হতো তথা সওয়াবের কারণ হতো। (ফতহুল বারী-১২/১২৪) 
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/906


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনার বন্ধুর জন্য এই শারিরিক সম্পর্কের কথা কাউকে জানানো জায়েয হবে না। কিন্তু যদি ভবিষ্যতে পারিবারিক দ্বন্দ্বের আশংকা থাকে,তাহলে আপনার বন্ধু ঐ মেয়েকে বিয়ে করে নিতে পারেন।এবং বিয়ে করতে যেয়ে আপনার বন্ধু তার অভিভাবকদেরকে উক্ত বিষেয় অবগত করতে পারে। নিকটাত্মীয় হলে বিয়ে করা নাজায়েয নয়,বরং মাহরাম হলেই বিয়ে নাজায়েয।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...