আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
288 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমি গত কালকে একটা প্রশ্ন করেছিলাম যে মনে মনে কুচিন্তা আসলে  মনে মনে বা মুখে সুবহানাল্লাহ বলা যাবে কি,,উত্তর ছিল "না"

আসলে মনে মনে কুচিন্তা আসলে বেশি বেশি জিকির করতে হয় তাই যখন কুচিন্তা গুলো আসে তখন মন অন্যদিকে নেওয়ার জন্য যে জিকির মনে পরছে ওটাই বলে ফেলছি

মনে মনে কুচিন্তার সাথে সাথে যে আমি সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ বলে ফেলছি এতে কি কোন সমস্যা হবে?এর জন্য কি আমি গুনাগার হয়ে যাব?

২ঃ- যদি কোন  স্ত্রী না বুজে তার স্বামীকে কাফের বলে ফেলে তাহলে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে কি?

স্বামীকে কাফের বলার জন্য স্ত্রী নিজেই কাফের হয়ে যাবে কি?

যদি স্ত্রী তার ভুল বুজতে পেরে প্রথমে স্বামীর কাছে মাফ চেয়ে পরে আল্লাহর কাছে খাস দিলে তওবা করে,তাহলে কি তার এই পাপ আল্লাহ ক্ষমা করবেন?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
কুমন্ত্রনার এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি , لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, 

আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।

আল্লাহ তায়ালা  বলেন,

وَإِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

যদি শয়তানের পক্ষ থেকে তুমি কিছু কুমন্ত্রণা অনুভব কর, তবে আল্লাহর শরণাপন্ন হও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সূরা হা-মীম-সিজদাহ ৩৬)
,
আপনি যেহেতু না জেনে এইভাবে বলেছেন,তাই কোনো গুনাহ হবেনা।
তবে ভবিষ্যতে এমন হলে উল্লেখিত পদ্ধতি অবলম্বন করবেন।  

(০২)
শরীয়তের বিধান মতে কোনো মুসলিমকে কাফের বলা যাবেনা।

আবু দাউদ শরীফের ২৬৪৩ নং হাদীসে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ الْمَعْنَى، قَالَا: حَدَّثَنَا يَعْلَى بْنُ عُبَيْدٍ، عَنِ الْأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي ظَبْيَانَ، حَدَّثَنَا أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ: بَعَثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَرِيَّةً إِلَى الْحُرَقَاتِ فَنَذِرُوا بِنَا فَهَرَبُوا فَأَدْرَكْنَا رَجُلًا، فَلَمَّا غَشِينَاهُ قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، فَضَرَبْنَاهُ حَتَّى قَتَلْنَاهُ فَذَكَرْتُهُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: مَنْ لَكَ بِلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ؟. فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّمَا قَالَهَا مَخَافَةَ السِّلَاحِ. قَالَ: أَفَلَا شَقَقْتَ عَنْ قَلْبِهِ حَتَّى تَعْلَمَ مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ قَالَهَا أَمْ لَا؟ مَنْ لَكَ بِلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ؟ فَمَا زَالَ يَقُولُهَا حَتَّى وَدِدْتُ أَنِّي لَمْ أُسْلِمْ إِلَّا يَوْمَئِذٍ

উসামাহ ইবনু যায়িদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আল-হুরূকাত (নামক স্থানে) অভিযানে প্রেরণ করলেন। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে শত্রুরা পালিয়ে গেলো। ‘আমরা তাদের এক ব্যক্তিকে ধরে ফেলতে যখন ঘেরাও করলাম, তখন সে ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’’ পাঠ করলো। এ সত্ত্বেও ‘আমরা তাকে আঘাত করে হত্যা করলাম। পরে ঘটনাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জানালাম। তিনি বললেনঃ কিয়ামাতের দিন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তোমার বিরুদ্ধে বাদী হলে কে তোমার জন্য সুপারিশ করবে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে তো তরবারির ভয়ে কালেমা পাঠ করেছে। তিনি বললেনঃ সে তরবারির ভয়েই কালেমা পাঠ করেছে, তা কি তুমি তার অন্তর ফেড়ে দেখেছো? কিয়ামাতের দিন ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’’ এর সামনে কে তোমাকে নাজাত দিবে (বর্ণনাকারী বলেন,) তিনি বারবার এ কথা বলতে থাকলেন। এমন কি আমার মনে হচ্ছিল, আমি যদি এ দিনটির পূর্বে মুসলিম না হতাম!
,
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এ বিষয়ে তার উম্মাতকে সতর্ক করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন:

إذا كفر الرجل أخاه فقد باء بها أحدهما إن كان كما قال وإلا رجعت عليه

‘‘যদি কোনো ব্যক্তি তার ভাইকে কাফির বলে, তবে এ কথা দু জনের একজনরে উপর প্রযোজ্য হবে। যদি তার ভাই সত্যিই কাফির হয় তবে ভাল, নইলে যে তাকে কাফির বলল তার উপরেই কুফরী প্রযোজ্য হবে।’

ইবনু মাজাহ, আস-সুনান ২/১৩৪৪, হাকিম, আল-মুসতাদরাক ৪/৫২০, ৫৮৭; ইবনু কাসীর, আন-নিহায়াতু ফিল ফিতানি ওয়াল মালাহিম ১/১০; বুসিরী, মিসবাহুয যুজাজাহ ৪/১৯৪; আলবানী, সহীহাহ ১/৮৭ সহীহু সুনানি ইবন মাজাহ ২/৩৭৮।

কোনো ঈমানের দাবিদারকে কাফির বলা তাকে হত্যা করার মতই কঠিনতম অপরাধ। সাবিত ইবনু দাহহাক (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,

من رمى مؤمنًا بكفرٍ فهو كقتلِه

‘‘যদি কেউ কোনো মুমিনকে কুফরীতে অভিযুক্ত করে তবে তা তাকে হত্যা করার মতই অপরাধ।’’
বুখারী, আস-সহীহ ৫/২২৪৭, ২২৬৪।
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে  যেহেতু সে না জেনে না বুঝে এমনটি বলেছে,তাই সে কাফের হবেনা।
 তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবেনা,তাকে মহান আল্লাহর কাছে খালেছ দিলে তওবা ইস্তেগফার পাঠ করতে হবে।     


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...