আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
191 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (72 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু,
১. শায়েখ, কোন শিক্ষক তার কাছে থাকা বই থেকে কি তার ছাত্রদের নোট লিখে দেয়া, কিছু সমস্যার সমাধান করানো, ইত্যাদি করতে পারবে? কারণ শিক্ষকদের কাছে অনেক বই থাকলেও ছাত্ররা তা কিনতে বা সংগ্রহ করতে পারে না।

২. জেনারেল শিক্ষাব্যবস্থায় আমাদের অনেক বিষয় এর বই পড়ানো হয়। এর মধ্যে এমনো হতে পারে ভবিষ্যতে যে বিষয় নিয়ে শিক্ষা নিব বা পেশা গ্রহণ করব তার জন্য অনেক দরকারি পড়াশোনা সেই বিষয় গুলো তে থাকে আবার ভবিষ্যতের বিষয় এর উপর নিরভর করে এমনো হতে পারে অই বই গুলা র কিছু অংশ দরকার বা বাকিটা দরকার নেই। কিন্তু বর্তমানে সবই পড়তে হচ্ছে। এতে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা অনুযায়ী আমাদের কি বিনা কারণে অহেতুক শিক্ষা গ্রহণ এর জন্য সময় অপচয় এর গুনাহ হচ্ছে? অহেতুক সেগুলো কে বললাম যা ভবিষ্যতে প্রয়োজন নাও হতে পারে সেই বই এর শিক্ষা। আবার ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় বাদে সব বিষয় ই প্রয়োজন হচ্ছে এমনো হতে পারে। সার্বিকভাবে আমাদের কে সকল বিষয় এর যে অন্তত সাধারণ জ্ঞান রাখার জন্য শিক্ষা দেয়া হচ্ছে তার জন্য কি সময় অপচয় এর গুনাহ হয়?
দয়া করে মুহতারাম প্রশ্ন সাপেক্ষে বুঝিয়ে উত্তর দিবেন।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
 শিখানোর উদ্দেশ্যে শিক্ষক তার কাছে থাকা বই থেকে তার ছাত্রদের নোট লিখে দেয়া, কিছু সমস্যার সমাধান করানো, ইত্যাদি করতে পারবে।
তবে যদি সেটি ছাত্রের কাজ হয়,যাহা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী ছাত্রকেই করতে হতো,বা পরিক্ষা হয়, 
তাহলে সেই নোট করে দেওয়া জায়েজ নেই।  
,
কারন এতে অন্যায় কাজে সহযোগিতা হবে,ধোকা দেওয়া হবে।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ     

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}


(০২)
পূর্বের কিছু ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞান যারা চর্চা করে, তাদের যদি নিয়ত সহীহ থাকে এবং পদ্ধতি সঠিক হয় তাহলে তাদের এ চর্চাও আমলে সালেহ তথা নেক আমল।
,
জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্বেষণ এবং এ নিয়ে চর্চা করা, মেহনত করা এটাও নেক আমল- আমলে সালেহ। শর্ত কী? নিয়ত হতে হবে সহীহ এবং পদ্ধতি হতে হবে সঠিক। সহীহ নিয়ত এবং সঠিক পদ্ধতি যদি হয় তাহলে ওটাও নেক আমল। আর যদি নিয়ত সহীহ না হয়, তাহলে যে নিয়তে জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞান আপনি অর্জন করেছেন তাই পাবেন।

عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ «إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوٰى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه فَهِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُولِه وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ اِلٰى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهٗ إِلٰى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ 
‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিয়্যাতের উপরই কাজের ফলাফল নির্ভরশীল। মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী ফল পাবে। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্যই গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার স্বার্থপ্রাপ্তির জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিবাহের জন্য হিজরত করবে সে হিজরত তার নিয়্যাত অনুসারেই হবে যে নিয়্যাতে সে হিজরত করেছে।
বুখারী ১, মুসলিম ১৯০৭, তিরমিযী ১৬৩৭, নাসায়ী ৭৫, আবূ দাঊদ ২২০১, ইবনু মাজাহ্ ৪২২৭, আহমাদ ১৬৯, ৩০২।

বিস্তারিত  জানুনঃ 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 
শিক্ষা বোর্ড আর প্রতিষ্ঠানের নিয়ম মানার স্বার্থে  উক্ত অতিরিক্ত বিষয় শিক্ষা করলে কোনো অপচয় এর গুনাহ হবেনা।
এটি জায়েজ আছে।
নিয়ত শুদ্ধ রাখলে ছওয়াবও পাওয়া যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...