ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আদ্দুর্রুল মুখতার গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে,
وَهُوَسُنَّةٌ) لِلرِّجَالِ فِي مَكَان عَالٍ (مُؤَكَّدَةٌ) هِيَ كَالْوَاجِبِ فِي لُحُوقِ الْإِثْمِ
কোনো উচু স্থানে আযান দেয়া পুরুষদের জামাতের জন্য সুন্নতে মু'আক্কাদাহ।গোনাহ হওয়ার ব্যাপারে এ সুন্নত বিধান প্রায় ওয়াজিব বিধানের কাছাকাছি।
ইবনে আবেদীন শামী রাহ উক্ত বিষয়ে আরো ব্যখ্যা করে রদ্দুল মুহতারে লিখেন,
قال في النهر: ولم أر حكم البلدة الواحدة إذا اتسعت أطرافها كمصر. والظاهر أن أهل كل محلة سمعوا الأذان ولو من محلة أخرى يسقط عنهم لا إن لم يسمعوا اهـ.
যদি এলাকা শহরের মত বড় থাকে তাহলে সেখানে কি এক আযানই যথেষ্ট?আমি কোনো স্পষ্ট বিধান কোথাও পাইনি।তবে আমি মনে করি,যদি কোনো মহল্লাবাসী আযান শ্রবণ করে নেয়,চায় অন্য কোনো মহল্লার আযান-ই হোক না কেন?তাহলে যারা আযান শুনবে তাদের উপর থেকে আযানের এ বিধান রহিত হয়ে যাবে।(অর্থাৎ যারা আযান শুনবে তাদের জন্য আর আযান দেয়া সুন্নতে মু'আক্কাদাহ হবে না।হ্যা মুস্তাহাব হিসেবে দেয়া যাবে)(রদ্দুল মুহতার-১/৩৮৪)
মহল্লার মসজিদে জামাত তথা আযান ইকামাত হওয়ার পর যদি কেউ আপন ঘরে নামায পড়তে চায়,জামাতে হোক বা একাকী হোক,তার জন্য আযান-ইকামাত দেওয়া মুস্তাহাব।(আহসানুল ফাতাওয়া-২/২৮২)
ঘরে জামাতে নামাযের জন্য আজান-ইকামাহ দেওয়া মুস্তাহাব (কিতাবুন-নাওয়াযিল-৩/২৯৯)
নাবালকের আজান-ইকামাহ এর বিধানঃ
মুরাহিক তথা সাবালক নয় তবে এর নিকটবর্তী,এমন বালকের আযান সর্বসম্মতিক্রমে মাকরুহ ব্যতীত বিশুদ্ধ। আর মুরাহিক নয় তবে বুঝদ্বার এমন বালকের আযান নিয়ে মতপার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে।
(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-১/৬৮)
আদ্দুর্রুল মুখতার গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে
(وَلَا يُسَنُّ) ذَلِكَ (فِيمَاتُصَلِّيهِ النِّسَاءُ أَدَاءً وَقَضَاءً) وَلَوْ جَمَاعَةً كَجَمَاعَةِ صِبْيَانٍ وَعَبِيدٍ،
মহিলাদের জন্য আযান-ইকামাত সুন্নত নয়।চায় ওয়াক্তিয়া নামায হোক বা কা'যা নামায হোক,অথবা শুধুমাত্র নারীদের জামাত হোক।যেমন শুধুমাত্র বাচ্ছা বা গোলামদের জামাত হয়ে থাকে।
ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন,
وكان الأولى للشارح أن يقول ولو منفردة؛ لأن جماعتهن الآن غير مشروعة فتفطن.
মুসান্নিফ রাহ সম্ভব বলতে চাচ্ছেন,নারীরা একাকী নামায পড়লেও তাদের জন্য আযান-ইকামত সুন্নত নয় কেননা বর্তমানে ফিতনার আশংকার দরুণ তাদের জামাত অনুমোদিত নয়।
(রদ্দুল মুহতার-১/৩৯১)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মহল্লার মসজিদে আযান-ইকামত হওয়ার পরও আপনি নিজ গৃহে নামায পড়তে চাইলে আযান-ইকামত দিতে পারবেন।এবং দেয়াই মুস্তাহাব। বুঝদ্বার নাবালক থাকলে সেই ইকামত দিবে।নতুবা যিনি ইমামতি করছেন তিনিই দিবেন।মহিলারা ইকামত দিবেনা এটাই স্বাভাবিক নিয়ম।তবে নামাযে গায়রে মাহরাম কেউ না থাকলে মহিলাদের নিম্নস্বরে ইকামতের ব্যাপারে কেউ কেউ রুখসত দিয়ে থাকেন।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৫/৪৬৩)কিন্তু মহিলা কখনো আযান দিতে পারবেন না।কেননা আযান উচ্ছস্বরে দিতে হয়।সর্বোত্তম হল,যিনি আযান দিবেন,তিনিই ইকামত দিবেন।একজন আযান দিবেন,আর অন্যজন ইকামত দিবেন,এমনটা করলে মাকরুহে তানযিহি হয়ে যায়।একই ব্যক্তি আযান ইকামত এবং ইমামতি সবকিছুই করতে পারেন।এতে কোনো সমস্যা নেই।