আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
354 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম

আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব করোনা ভাইরাস মহামারীর শুরু থেকে বলেছিলেন ইসলামী শরীয়াহ তে সংক্রামক রোগ বলে কিছু নেই।বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে বই পত্র থেকে অনেক ছোঁয়াচে রোগের কথা জেনেছি(পানিবাহিত, বায়ুবাহিত) ।তাই আমি ভাবতাম হইতো এই বিষয়টি ওনার জ্ঞানের স্বল্পতা ।কিন্তু আজকে ফাতওয়া তে দেখলাম আসলেই সংক্রামক রোগ বলে কিছু নেই।যেহুতু ফাতওয়া তে পেয়েছি আমি বিশ্বাস করে নিচ্ছি আসলে সংক্রামক রোগ বলে কিছু নেই।আমি এইটা বিশ্বাস করি যে আল্লাহ যার কপালে করোনা ভাইরাস লিখে রেখেছেন সে সারাদিন বাসায় বসে থাকলেও হবে।তবে আমার মনে কিছু প্রশ্ন জেগেছে যদি ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী উত্তর গুলো দিতেন

১। প্রথম শুনেছি যে চীনে কোন এক প্রাণী থেকে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। পরে এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের কাছে হাচির মাধ্যমে বের হওয়া জলকনার মাধ্যমে ছড়িয়েছে তাহলে কি আমরা বলতে পারি না তা বায়ুর মাধ্যমে ছড়িয়েছে?হা অবশ্যই তা আল্লাহর হকুমে হয়ছে।কিন্তু ভাইরাস টি বায়ুর মাধ্যমে এক জনের দেহ থেকে আরেক জনের দেহ ছড়িয়েছে( বিজ্ঞান অনুযায়ী - তা ভুল ও হতে পারে অস্বীকার করছি না)

২। আমার করোনা ভাইরাস হওয়ার থাকলে তো হবেই তাই বলে আমি কি কোন স্বাস্থ্য বিধি না মেনে ইচ্ছা মত চলাফেরা করব?

৩।আমার গ্রামে তেমন একটা সংক্রমণ নেই তাহলে কি বর্তমানে অন্যান্য এলাকার সংক্রমণের চিত্র দেখে করোনা সংক্রমনের ভয়ে বাড়িতে ফরজ নামাজ আদায় করি তাহলে তা কি জায়েজ হবে?(আমি বাসায় পড়তে আগ্রহী নয়  জানার জন্য প্রশ্ন করা)

নম্বর অনুযায়ী উত্তর দিলে উপকৃত হতাম।জাজাকাল্লাহু খায়রান

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
وَقَالَ عَفَّانُ حَدَّثَنَا سَلِيمُ بْنُ حَيَّانَ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مِينَاءَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ عَدْو‘ى وَلاَ طِيَرَةَ وَلاَ هَامَةَ وَلاَ صَفَرَ وَفِرَّ مِنَ الْمَجْذُومِ كَمَا تَفِرُّ مِنْ الأَسَدِ.
আফফান (রহ.) বলেন, সালীম ইবনু হাইয়ান, আবূ হুরাইরাহ হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রোগের কোন সংক্রমণ নেই, কুলক্ষণ বলে কিছু নেই, পেঁচা অশুভের লক্ষণ নয়, সফর মাসের কোন অশুভ নেই। কুষ্ঠ রোগী থেকে দূরে থাক, যেভাবে তুমি বাঘ থেকে দূরে থাক। [বুখারী ৫৭১৭, ৫৭৫৭, ৫৭৭০, ৫৭৭৩, ৫৭৭৫] আধুনিক প্রকাশনী- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)

عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ وَغَيْرُه“ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ عَدْو‘ى وَلاَ صَفَرَ وَلاَ هَامَةَ فَقَالَ أَعْرَابِيٌّ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَمَا بَالُ إِبِلِي تَكُونُ فِي الرَّمْلِ كَأَنَّهَا الظِّبَاءُ فَيَأْتِي الْبَعِيرُ الأَجْرَبُ فَيَدْخُلُ بَيْنَهَا فَيُجْرِبُهَا فَقَالَ فَمَنْ أَعْدَى الأَوَّلَ. 
আবূ হুরাইরাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রোগের কোন সংক্রমণ নেই, সফরের কোন অশুভ আলামত নেই, পেঁচার মধ্যেও কোন অশুভ আলামত নেই। তখন এক বেদুঈন বললঃ হে আল্লাহর রাসূল! তাহলে আমার উটের এ অবস্থা কেন হয়? সেগুলো যখন চারণ ভূমিতে থাকে তখন সেগুলো যেন মুক্ত হরিণের পাল। এমন অবস্থায় চর্মরোগাগ্রস্ত উট এসে সেগুলোর পালে ঢুকে পড়ে এবং এগুলোকেও চর্ম রোগে আক্রান্ত করে ফেলে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাহলে প্রথমটিকে চর্ম রোগাক্রান্ত কে করেছে?
যুহরী হাদীসটি আবূ সালামাহ ও সিনান ইবনু আবূ সিনান (রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন। [বুখারী ৫৭০৭,; মুসলিম ৩৯/৩৩, হাঃ ২২২০, আহমাদ ৭৬২৪] আধুনিক প্রকাশনী- ৫২৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৯৫)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
রোগ ব্যধির নিজস্ব সংক্রামক কোনো যোগ্যতা ও ক্ষমতা নাই। রোগীর পাশে কেউ গেলেই যে, রোগ ব্যধি তার কাছে চলে যাবে, বিষয়টা মূলত এমন নয়, বরং যদি আল্লাহর হুকুম হয়, তাহলে রোগ সংক্রামক হতে পারে। যদি আল্লাহর হুকুম না হয়, তাহলে ঐ রোগ সংক্রামক হতে পারবে না। তবে কিছু রোগের মাঝে আল্লাহ তা’আলা সংক্রমণের নিয়ম বেধে দিয়েছেন, এই রোগ সংক্রমণ করে বসে। তাকে আল্লাহ পূর্ব থেকেই নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন। তবে আল্লাহর ইচ্ছা হলে সংক্রমণ নাও ঘটতে পারে। অর্থাৎ সংক্রমণের এই ক্ষমতা রোগের নিজস্ব ক্ষমতা নয়, এর পশ্চাতে আল্লাহর দেয়া ক্ষমতা এবং তার ইচ্ছার দখল থাকে। তবে ইসলাম প্রচলিত এসব সংক্রামক রোগে আক্রান্ত লোকদের নিকট যেতে নিষেধ করেছে বিশেষভাবে কুষ্ঠ রোগীর নিকট, এ কারণে যে, উক্ত রোগীর নিকটে গেলে আর তার আক্রান্ত হওয়ার খোদায়ী ফায়সালা হওয়ার কারণে সে আক্রান্ত হলে তার ধারণা হতে পারে যে, উক্ত রোগীর সংস্পর্শে যাওয়ার কারণেই সে আক্রান্ত হয়েছে, এভাবে তার আক্বীদা নষ্ট হয়ে যেতে পারে, তা যেন হতে না পারে, এজন্যই ইসলাম এরূপ বিধান দিয়েছে। তবে কেউ মজবুত আকীদার অধিকারী হলে, সে অনুরূপ রোগীর নিকট যেতে পারে। এমনিভাবে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত লোককেও সুস্থ এলাকার লোকদের নিকট যেতে নিষেধ করেছে। যাতে তা অন্য কারো আক্বীদা নষ্টের কারণ না ঘটে। 

(১)
”প্রথম শুনেছি যে চীনে কোন এক প্রাণী থেকে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। পরে এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের কাছে হাচির মাধ্যমে বের হওয়া জলকনার মাধ্যমে ছড়িয়েছে তাহলে কি আমরা বলতে পারি না তা বায়ুর মাধ্যমে ছড়িয়েছে? হা অবশ্যই তা আল্লাহর হকুমে হয়ছে। কিন্তু ভাইরাস টি বায়ুর মাধ্যমে এক জনের দেহ থেকে আরেক জনের দেহ ছড়িয়েছে।”

আপনার একথাটি বিশুদ্ধ।

(২)
না, আপনি ইচ্ছমত চলাফেরা করতে পারবেন না। কেননা করোনা যদি হয়ে যায়, তখন আপনি রোগকে সংক্রামক মনে করবেন। তখন হয়তো মনে আসতে পারে, যদি স্বাস্থ্যবিধি ফলো করতাম, তাহলে আমার আর এ রোগ হত না। আল্লাহর হুকুমে যে হয়েছে, তখন সে কথা বে মালুম ভূলে যাবেন। 

(৩)
যেহেতু আপনার এলাকায় করোনা নাই, তাই আপনি মসজিদকে তরক করতে পারবেন না। হ্যা আপনি অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধিকে ফলো করে মসজিদে গিয়ে শুধুমাত্র ফরয পড়ে বাসায় এসে সুন্নত নামায পড়বেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...