আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
551 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
আস সালামু আলাইকুম সম্মানিত শায়েখ,
কেউ যদি খারাপ কাজ ছাড়ার নিয়্যতে অন্তরে মনোবল পাওয়ার জন্য কসম করে তারপর কসম ভঙ্গ করে ফেলে। আবার ওই একই কাজ ছাড়ার জন্য পুনরায় সে কসম করে কসম ভঙ্গ করে, এইভাবে দশবার সে কসম করে প্রত্যেকবার সে কসম না রাখতে পারে তার জন্য কাফফারা কী হবে? যদি কাফফারা স্বরূপ একমাস রোজা থাকার সার্মথ্য না থাকে এবং আর্থিক অস্বচ্ছলতা থাকে সেই ব্যক্তির জন্য কাফফারা কী হবে?
শায়েখ কিভাবে কাফফারা আদায় করবে নিয়মটা একটু জানিয়ে দেবেন।
জাযাকাল্লাহ..

1 Answer

+1 vote
by (574,260 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


কসম শুধুমাত্র আল্লাহর নাম দ্বারাই হয়ে থাকে।এবং কুরআন যেহেতু আল্লাহর কালাম,তাই কুরআন দ্বারাও কসম হবে। অন্যথায় কসম হবেনা। 

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি আল্লাহর নামে কসম না করা হয়,তাহলে এতে কাফফারা দেওয়া ওয়াজিব নয়।
,
আর যদি প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আল্লাহর নামেই কসম খাওয়া হয়,এবং ভঙ্গ করা হয়,তাহলে এর কাফফারা দিতে হবে।

কাফফারা আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,

لاَ يُؤَاخِذُكُمُ اللّهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ وَلَـكِن يُؤَاخِذُكُم بِمَا عَقَّدتُّمُ الأَيْمَانَ فَكَفَّارَتُهُ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ مِنْ أَوْسَطِ مَا تُطْعِمُونَ أَهْلِيكُمْ أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ ذَلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمَانِكُمْ إِذَا حَلَفْتُمْ وَاحْفَظُواْ أَيْمَانَكُمْ كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ

আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে যা তোমরা মজবুত করে বাধ। অতএব, এর কাফফরা এই যে,(১) দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে দিয়ে থাক।(২)অথবা, তাদেরকে বস্তু প্রদান করবে অথবা, একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দিবে।(৩) যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না, সে তিন দিন রোযা রাখবে।.....এটা কাফফরা তোমাদের শপথের, যখন শপথ করবে। তোমরা স্বীয় শপথসমূহ রক্ষা কর এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।(সূরা মায়েদা-৮৯)

কসমের ধারাবাহিক তিনটি কাফফারার প্রথমটি হল,১০জন মিসকিনকে সকাল-বিকাল দু'বেলা খাদ্য খাওয়ানো বা বস্ত্র পরিধান করানো।খাওয়ানো পড়ানো সম্ভব না হলে,১০জনের প্রত্যেকজনকে একটি ফিতরা সমপরিমাণ টাকা দিলেই কাফফারা আদায় হয়ে যাবে।দ্বিতীয়ত একজন গোলাম আযাদ করা।তৃতীয়ত ধারাবাহিক তিনটি রোযা রাখা।
,
এক্ষেত্রে ফুক্বাহায়ে কেরাম থেকে দু’টি মত পাওয়া যায়। যথা-
১-প্রতিটি কসম ভঙ্গের জন্য একটি করে কাফফারা আদায় করা।
২-আগের কসমের কাফফারা আদায় না করে থাকলে একটি কাফফারাই যথেষ্ট হবে।
,
আপনি যদি সক্ষম হয়ে থাকেন, তাহলে অনুমান করে যতটি কসম ভঙ্গ করেছেন ততটি কাফফারা আদায় করে দিন। এটাই উত্তম ও অধিক সতর্কতা এতেই নিহিত রয়েছে।
আর যদি অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে থাকেন, তাহলে একটি কাফফারা আদায় করা যেতে পারে।
,

(قَوْلُهُ وَتَتَعَدَّدُ الْكَفَّارَةُ لِتَعَدُّدِ الْيَمِينِ) وَفِي الْبُغْيَةِ: كَفَّارَاتُ الْأَيْمَانِ إذَا كَثُرَتْ تَدَاخَلَتْ، وَيَخْرُجُ بِالْكَفَّارَةِ الْوَاحِدَةِ عَنْ عُهْدَةِ الْجَمِيعِ. وَقَالَ شِهَابُ الْأَئِمَّةِ: هَذَا قَوْلُ مُحَمَّدٍ. قَالَ صَاحِبُ الْأَصْلِ: هُوَ الْمُخْتَارُ عِنْدِي. اهـ. مَقْدِسِيٌّ، وَمِثْلُهُ فِي الْقُهُسْتَانِيُّ عَنْ الْمُنْيَةِ (رد المحتار، كتاب الايمان، مطلب تتعدد الكفارة لتعدد اليمين-3/714)
সারমর্মঃ
কাফফারা যখন অনেক বেশি হয়ে যাবে,তখন তাদাখুল তথা একটা কাফফারা দিয়েই সকল কসমের কাফাফারার ক্ষেত্রে  যথেষ্ট হবে।
★সুতরাং প্রশ্নে  উল্লেখিত ছুরতে আপনি যদি আল্লাহ বা কুরআনের নামে কসম করে থাকেন, তাহলে যতটি কসম ভঙ্গ করেছেন ততটি কাফফারা আদায় করে দিন। এটাই উত্তম ও অধিক সতর্কতা এতেই নিহিত রয়েছে।
,
যদি শক্তি সামর্থ না থাকে,যেমনটি প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে,তাহলে একটি কাফাফারা করলেও হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...